‘ভালো মানুষ’ হতে হলে কি ধর্মের কোনো দরকার আছে?

উত্তর–“না।”

IIRT Arabic Intensive

মূলতঃ ‘ভালো মানুষ’ হতে হলে আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে শুধু ‘ইসলাম’কেই দরকার।

হ্যাঁ, কোনো সন্দেহ নেই যে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও অনেক ‘ভালো মানুষ’ আছে। কিন্তু আমি ‘ভালো’ শব্দটাকে কৌশলগত অর্থে ব্যবহার করছি। এটা দিয়ে আমি এমন একজন মানুষকে বোঝাচ্ছি, যে হয় সমস্ত মৌলিক নৈতিক দায়িত্ব পালন করে, আর নয়তো সেসব দায়িত্ব পালন করতে অপারগ হলে তার মাঝে কমপক্ষে অনুশোচনাবোধটুকু থাকে।

মুসলিমরাই যে সকল নৈতিক দায়িত্ব পালনে সক্ষম এবং এ ছাড়া বাকি সকল ধর্মের অনুসারীদের মাঝেই যে এর কোনো না কোনোটির অভাব আছে, এই কথা বললে আজকাল কথিত সর্বজনীন মানবধর্ম লঙ্ঘিত হয়ে যায়। ধর্মপালন ছাড়াই মানুষ নৈতিকভাবে সৎ হতে পারে–এই মতবাদটি একরকম স্বতঃসিদ্ধ সত্য হিসেবে প্রচলিত হয়ে গেছে। কিন্তু আসলেই কি তা সত্য?

এই দাবি করা মানুষগুলো অল্প ও নির্দিষ্ট কিছু নৈতিক সত্যের ভিত্তিতে এসব কথা বলে।

“মানবহত্যা মহাপাপ–এটা জানবার জন্য অবশ্যই আমার ঈশ্বরকে জানা লাগবে না!”

“ধর্ষণ জঘন্যতম অপরাধ–এটা জানবার জন্য নিশ্চয়ই আমাকে ধর্মতত্ত্ব জানতে হবে না!”

“শুধু ঈশ্বর বলেছেন বলেই আপনি নিজেকে হত্যা আর ধর্ষণ থেকে বিরত রাখছেন? তাহলে তো এটাই প্রমাণিত হয় যে, আপনি নিজে কতটা অনৈতিক মানসিকতার!”

আসলে তাদের এসব কথা থেকেই বোঝা যায় যে, নৈতিকতার ব্যাপারে তাদের ধারণা কতটা সীমাবদ্ধ। তাদের নৈতিকতা কেবল দুই লাইনে শেষ–হত্যা করো না এবং ধর্ষণ করো না।

এসব লোকদের থেকে আরও একটি গতানুগতিক কথা শোনা যায়, “আমি তো কারও ক্ষতি করছি না! এটাই আমার নীতি। সুতরাং আমায় ঈশ্বরে বিশ্বাসী হতে হবে না, ইসলাম ধর্মে তো নয়ই।”

এটা একরকম দায় এড়ানো কথাবার্তা। কারণ ‘ক্ষতি না করা’ কথাটা ব্যক্তি ও পরিবেশ নির্ভর। এটি যুগভেদে, সংস্কৃতিভেদে, এমনকি একই যুগের একই সংস্কৃতির মাঝে ব্যক্তিভেদে বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে।

তাই আমরা যদি ‘ক্ষতি’ না করাকেই নৈতিকতা বলে মেনে নিতে একমত হয়েও যাই, তারপরও ‘ক্ষতি’র সংজ্ঞা নিয়ে নানা মুনির নানা মত থাকবে। তাছাড়াও নির্দিষ্ট কোনো পরিস্থিতিতে ‘ক্ষতি’র কারণ ও পরিমাণ একদম মেপে বের করাটা এত সহজ কাজ না। বাস্তবতার দিকে তাকালে দেখা যায় যে, লোকজন আসলে মোটেই এত মাপামাপি করে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে কাজকর্ম করছে না। তারা মূলতঃ সমাজে প্রচলিত গ্রহণযোগ্য সংস্কৃতি ও আদর্শের উপর ভিত্তি করেই কাজ করে থাকে। আর যেসব কর্মকাণ্ড সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য, সেগুলোকেই ‘ক্ষতিকর’ হিসেবে ধরে নেয়া হয়।

পশ্চিমা নৈতিকতায় প্রচলিত ‘harm principle’এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মূলতঃ এগুলোই।

কিন্তু ইসলাম এসব অভিযোগ থেকে অনেক ঊর্ধ্বে, অনেক সূক্ষ্ম এবং অনেক স্পষ্ট। পক্ষান্তরে ‘harm principle’ হলো অস্পষ্ট কিছু উদারনৈতিক প্রলাপের সমষ্টি, সদাপরিবর্তনশীল সাংস্কৃতিক গ্রহণযোগ্যতারই ছদ্মনাম মাত্র।

ইসলামি নৈতিকতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘আদাব’ আর ‘আখলাক’, অর্থাৎ আচার-ব্যবহার ও চরিত্র। কারণ প্রিয়নবী মুহাম্মাদ ﷺ বলেছেন,

তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি, যে তার আচার-আচরণ আর চরিত্রগত দিক থেকে সর্বোত্তম।

আল্লাহ্‌ তা’আলা তাঁর প্রিয় হাবীব মুহাম্মাদ ﷺ এর প্রশংসা করে তাঁকে “খুলুক্বিন ‘আযীম” (সর্বোত্তম চরিত্র) এর অধিকারী বলেছেন।

যদি ইসলামি আদব-কায়দা, আচার-আচরণের মূল বিষয়বস্তুর দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে আমরা দেখবো যে এর বেশিরভাগ জিনিসই পশ্চিমা লিবারেল সাংস্কৃতিক নৈতিকতার মতো অনুমাননির্ভর নয়। নিম্নে কিছু উল্লেখযোগ্য উদাহরণ তুলে ধরা হলো-

১. বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও যত্নবান হওয়ার জন্য জোরালো গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

২. প্রতিবেশীকে সাহায্য করার ব্যাপারটি অপরিহার্য করা হয়েছে।

৩. অসুস্থ ব্যক্তিকে সেবা করা, খোঁজখবর নেওয়াকে নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে অর্পণ করা হয়েছে।

৪. অসহায় ও এতিমদের সাহায্যদানকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

৫. আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করাকে ওয়াজিব করে দেওয়া হয়েছে।

হ্যাঁ, অন্যান্য ধর্ম ও অনৈসলামি সংস্কৃতিতেও এগুলোর কোনো কোনোটির খণ্ডিত রূপ রয়েছে। কিন্তু এগুলো ইসলামে নিতান্ত ঐচ্ছিক কিছু সৌজন্যমূলক বিষয় নয়। বরং এগুলো বাধ্যতামূলক। আপনি এসব মানবকল্যাণকর কাজ করলেই একজন অনুকরণীয় আদর্শ ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবেন, তা কিন্তু নয়। বরং আপনি শুধুমাত্র আপনার মৌলিক নীতিগত কিছু দায়িত্ব পালন করলেন মাত্র। কিন্তু যদি এইসব দায়িত্বপালনে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনি অবশ্যই অপরাধী। এটা কিন্তু বড় একটি পার্থক্য।

এরপর আরো কথা আছে।

১. নীতিবান ব্যক্তি কি কখনও হিংসুটে হতে পারে?

২. ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি কি কখনো পরনিন্দায় অভ্যস্ত হতে পারে?

৩. অন্যের ব্যাপারে সুধারণা রাখতে অক্ষম ব্যক্তি কি কখনো আদর্শবান হতে পারে?

৪. নৈতিকতার বোধ সম্পন্ন কোনো ব্যক্তি কি সত্য-মিথ্যার যাচাই না করেই গুজব রটাতে পারে?

৫. নীতিবান ব্যক্তি কি কখনও সুদী লেনদেনের ব্যবসায়ে অংশীদার হতে পারে?

এসব প্রশ্নের জবাব হলো কঠোরভাবে “না”। যদি কোনো ব্যক্তির এ ধরনের স্বভাব থাকে এবং তার ভেতর যদি অপরাধ আর লজ্জাবোধ কাজ না করে, নিজেকে শোধরানোর চেষ্টা না করে, তাহলে অবশ্যই তাকে নীতিবান বলা যায় না। তাহলে যারা এগুলোকে মৌলিক নৈতিকতার শর্ত বলে মনেই করে না, তারা কীভাবে তা মেনে চলবে? অবশ্যই তারা তা পারবে না। উদাহরণস্বরূপ, আপনি কোনো নাস্তিককে দেখবেন না পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা বা বাবা-মায়ের প্রতি যত্নশীলতা ইত্যাদি বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব আরোপ করতে। বরং তাদের কাছে নৈতিকতার মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে হত্যা আর ধর্ষণ।

সত্যি বলতে, উপরে উল্লেখিত ১০টি পয়েন্ট ইসলামের খুবই ছোট একটি অংশ। এগুলো হচ্ছে কেবল মানুষের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্যের নীতিমালা। তাহলে সৃষ্টিকর্তার প্রতিও নিশ্চয়ই কিছু না কিছু দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে। এখান থেকে স্বতঃসিদ্ধভাবেই প্রমাণিত হয় যে, স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকারকারীরা নৈতিকভাবে এমনিতেই দুর্বল। কিন্তু তর্কের খাতিরে আমরা আমাদের নৈতিকতার সীমানা মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া পর্যন্তই টেনে রাখবো। তারপরও দেখা যাবে যে, নাস্তিক ও উদারনৈতিক চেতনার ধ্বজাধারীদের নৈতিকতার ধারণা বিশ্রীরকমের খণ্ডিত।

তাদের অনেকে এই যুক্তিও দিতে পারে যে, পিতামাতাকে সম্মান করাটা আসলে নৈতিক কোনো দায়িত্বই না (এদের যুক্তি এই যে–পিতামাতা যেহেতু সন্তানকে তার অনিচ্ছায় জন্ম দিয়েছে, তাই কেবল এই জন্ম দেওয়ার ভিত্তিতে সন্তানের উপর পিতামাতার কোনো কর্তৃত্ব স্থাপিত হয় না। – অনুবাদ সম্পাদক) এইরকম জবাব আসলে পুরো আলোচনাটাই অধি-নৈতিকতার পর্যায়ে চলে যায়। কোনটা নৈতিক, আর কোনটা নৈতিক না–এটা আমরা কীভাবে বুঝবো সেখান থেকে আলোচনা শুরু করা লাগে।

বেশ, তাহলে আমরা একেবারে প্রথম থেকেই শুরু করি। সকল নৈতিক দায়িত্বকেই প্রশ্ন করতে শুরু করলে আমরা একেবারে শুন্যবাদী হয়ে যাবো। যদি জিজ্ঞাসা করি “কেন পিতামাতাকে সম্মান করা নৈতিকতার শর্ত?” তাহলে এ প্রশ্ন করাও যুক্তিসঙ্গত যে, “কেন অন্যের ক্ষতি না করা নীতি-নৈতিকতার শর্ত?” নাস্তিক আর ধর্মনিরপেক্ষ মানুষগুলো এসব প্রশ্নের কোনো সন্তোষজনক বা যৌক্তিক জবাব দিবে না। পশ্চিমা নৈতিক দর্শনশাস্ত্রে একদম মৌলিক বিষয়গুলোর ব্যাপারেও কোনো ঐক্যমত্য নেই। সমস্তকিছুই যেন চিরদিনের জন্য বিতর্কিত। সংশয়গুলোও একদম স্পষ্ট।

আমাদের আলোচনায় নাস্তিক আর ধর্মনিরপেক্ষরা তাই গোণার মধ্যেই পড়ে না।

যারা আস্তিক, তারা সেই হিসেবে অনেক ভালো। মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদী ধর্মতত্ত্বে সৃষ্টিকর্তা, বিশ্বজগত আর মানবতা সম্পর্কে সকল দিক বিবেচনায় মোটামুটি একটি ধারণা দেওয়া আছে। এসব ধর্মতত্ত্বের বৃহত্তর ও মৌলিক পরিসরকে ভিত্তি ধরেই নৈতিক দায়িত্বগুলো নির্ধারণ করা হয়। তারপর এসব মতবাদকে পারস্পরিক মূল্যায়ন আর বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখা যাক যে, এগুলোর মধ্যে কোনটি সবচাইতে সঙ্গতিপূর্ণ এবং মানবকল্যাণকর।

যদি আমরা খ্রিস্টান ও ইহুদিদের নৈতিক মতবাদের দিকে লক্ষ করি, তাহলে দেখবো যে বিগত ৫০-১০০ বছরে তা যথেষ্ট পরিবর্তিত হয়েছে। দৃষ্টান্তস্বরুপ, অনেক খ্রিস্টান আর ইহুদি সম্প্রদায়ে সমকামিতাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। তাদের ধর্মতত্ত্ব আর নৈতিক বিষয়গুলো পারিবারিক বন্ধনকে আর আগের মতো গুরুত্ব দেয় না। বরং বর্তমানে প্রাধান্য বিস্তারকারী ধর্মনিরপেক্ষ, উদারনৈতিক আর পুঁজিবাদী মতবাদের প্রতিবিম্ব হওয়ার উদ্দেশ্যে এসব ধর্মতত্ত্ব সে অনুযায়ী অভিযোজিত হয়েছে। এ ধরনের পরিবর্তনের পিছনে কী দায়ী থাকতে পারে? “প্রচলিত সভ্যতার অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে নীতি-নৈতিকতারও অগ্রগতি হতে হবে” – এই মতবাদ মেনে নিয়ে কি তাহলে ধর্মবিশ্বাসকেও অগ্রসর(!) করা হচ্ছে?

বেশ, তাহলে সভ্যতার অগ্রগতিকে সংজ্ঞায়িত করুন। নৈতিকতার “অগ্রগতি”টাই বা দেখতে কেমন? ১০০ বছর আগে যা ঘৃণ্য আচরণ ছিলো, তা এখন বৈধ এমনকি প্রশংসনীয়ই হয়ে গেলো? এটাই কি নৈতিকতার আধুনিক সংজ্ঞা? এসব প্রশ্নের জবাব খ্রিস্টান-ইহুদি নৈতিকতায় পাওয়া যাবে না। তারা বর্তমান সভ্যতা-সংস্কৃতির হিজ্যামনির চাপে পড়ে গেছে। পক্ষান্তরে ইসলাম এই চাপকে প্রতিহত করেছে। এজন্যই ইসলাম ধর্মকে পশ্চাৎপদ ধর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। ইসলামকে তখনই পশ্চাৎপদ বলা যাবে, যদি গত ১০ বা বড়জোড় ২০ বছরের পশ্চিমা সংস্কৃতিকে উন্নতি পরিমাপের মাপকাঠি বলে ধরে নেয়া হয়। এই মাপকাঠি মেনে নিলে বলতে হয় যে, ২০০০ বা ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের আগ পর্যন্ত পুরো মানবজাতি অনৈতিকতার অন্ধকার নরকে রীতিমতো হাবুডুবু খেয়েছে। পৃথিবীর সমগ্র ইতিহাসের ব্যাপারে এ বড় দুঃসাহসিক এবং অসন্তোষজনক দাবি। ইসলাম এই পূর্ণ জটিলতাকে নিরাপদে পাশ কাটিয়েছে, যেখানে বেশিরভাগ ইহুদি-খ্রিষ্টান এর ফাঁদে পড়েছে।

এই তো গেলো নৈতিক মতবাদের কথা। একইভাবে আমরা খ্রিস্টান আর ইহুদি ধর্মতত্ত্বকেও পুনর্মূল্যায়ন করতে পারি। এই স্বল্প পরিসরে সব বিষয়ে বিশদ আলোচনা-সমালোচনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু ‘ত্রিত্ববাদে’র (Trinity) সমালোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হওয়ার দাবি রাখে। এছাড়া ইহুদি ধর্মতত্ত্ব ১২শ শতাব্দীতে ‘ইসলামি কালাম শাস্ত্র’ থেকে অনেক তত্ত্ব ধার করে নেয়। যেমন- ইসলামিক স্পেইনে বিতর্ক ও ধর্মতাত্ত্বিক আলোচনায় অংশ নেয়া সবচেয়ে বিখ্যাত ইহুদি ধর্মতত্ত্ববিদ মূসা বিন মায়মূন উল্লেখযোগ্য একটি উদাহরণ।

পশ্চিমা উদারনৈতিক সংস্কৃতির চেতনাবাজেরা কুরআন-সুন্নাহর কিছু বিধানকে সমস্যাপূর্ণ মনে করে–এটাই ইসলামের বিরুদ্ধে বর্তমানে একমাত্র অভিযোগ। এটা অবশ্যই অত্যন্ত খোঁড়াযুক্তি। ইসলামিক শারি’আতের অনেক বিষয়েই এখন লোকজন অভিযোগ আনা শুরু করেছে; অথচ সেসব বিষয় আজ থেকে ১০, ২০ বা ১০০ বছর আগেও গ্রহণযোগ্য ছিলো। কিন্তু এই সমালোচনার হাতিয়ার আবার সেই অস্পষ্ট, অসঙ্গত ‘নৈতিক অগ্রগতি’র বয়ান। এই কথিত ‘নৈতিক আগ্রগতি’র পরিমাপ আসলে কীভাবে করা হয় আর সময়ের সাথে সাথে নৈতিকতা কেন পাল্টাবে, এসব বিষয়ের সন্তোষজনক জবাব প্রদান না করা পর্যন্ত অভিযোগগুলোকে অতটা গুরুত্বের সাথে নেওয়া যায় না।

সবশেষে এটাই বলবো, মুসলিমদের ধর্মতত্ত্ব সবচেয়ে বেশি যুক্তিযুক্ত। এবং যারা সুস্থ বুদ্ধির অধিকারী, তারা সহজেই ইসলামিক নীতি-নৈতিকতার বিষয়বস্তুগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অনুসন্ধান করে দেখতে পারে যে, ইসলামি আদর্শ, নীতিমালা কতটা সৌন্দর্যমণ্ডিত, কতটা সঙ্গতিপূর্ণ! মুসলিমরা তো শারি’আহ মোতাবেক জীবনযাপন করার দুনিয়াবি ও আখিরাতি সুফল ভোগ করবেই (বি ইযনিল্লাহ্)। অমুসলিমদের জন্যও ইসলাম গ্রহণের আর তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগের জন্য সমস্ত পথ সবসময়ই খোলা আছে। যদি তারা আগ্রহী না হয়, তাহলে সহজ ভাষায় বলতে পারি, “লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন।”


উৎস: মুসলিম স্কেপ্টিক ব্লগ (মূল আর্টিকেল লিংক)

অনুবাদক: সূচনা বিন্তে বাহার, মুসলিম মিডিয়া প্রতিনিধি

অনুবাদ কপিরাইট © মুসলিম মিডিয়া

মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।

নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।

Loading Facebook Comments ...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Loading Disqus Comments ...
IIRT Arabic Intensive