তুমি একদিন আমাকে কিছু প্রশ্ন করেছিলে মেসেঞ্জারে। ইসলাম নারীকে ঠকিয়েছে বা এই ধরনের কিছু একটা। ঠিকঠাক মনে নেই আমার। তবে ইসলাম নারীকে যে অধিকার দিয়েছে, ওইটাকে মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাথে মেলানোর চেষ্টা করেছিলে বোধহয়। মেসেজটা সিন করেও রিপ্লাই করিনি। আসলে গাইরে মাহরামদের একটু এড়িয়ে চলি। তাই উত্তরটা দেওয়া হয়নি। অবশ্যি মেসেজে উত্তর দেওয়ার মতো ছোট্ট প্রশ্নও ওটা না। এর জন্যে বিস্তর আলোচনা প্রয়োজন। আজ উত্তরটা দেওয়ার সুযোগ এসেছে। আমার যতটুকু মনে পড়ে, তোমার প্রশ্নটা ছিল—‘ইসলাম পুরুষকে হাত উজাড় করে দিয়েছে, আর নারীকে দিয়েছে করুণার মালা। এটা না দেওয়ারই শামিল।’

প্রশ্নের উত্তর দেবার আগে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানের ইতিহাস বলব—জাহিলি আরবের, তৎকালীন ভারতবর্ষের ও পশ্চিমাসমাজের। আমাদের প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু আরবে এসেছেন, তাই ওখান থেকেই শুরু করি চলো।

IIRT Arabic Intensive

জাজিরাতুল আরবে ইসলাম পৌঁছোনোর আগের সময়টাকে ‘জাহিলিয়াত’ বলা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে কোনো আসমানি কিতাব আসেনি। আসেনি কোনো নবি। তাই অজ্ঞতার অন্ধকারে ছেয়ে গিয়েছিল পুরো সমাজ। ওই সময়টাতে মেয়েদের কোনো দাম ছিল না। মেয়েদেরকে মনে করা হতো অপয়া, অশুচি। এমনকি কন্যাসন্তান জন্মের খবর পাওয়ার সাথে সাথেই পিতারা লজ্জায় ঘৃণায় মুখ লুকিয়ে ফেলত। ক্রোধ সৃষ্টি হতো ওদের মনে। অনেকেই কন্যাকে জীবিত অবস্থায় কবর দিত।[১] কায়স ইবনু আসিম একে একে দশটি জীবন্ত কন্যাকে কবর দিয়েছিল। আরবের কোনো গোত্রই এই অপরাধ থেকে মুক্ত ছিল না।[২] কুরআন এই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছে,

“যখন এদের কাউকে কন্যাসন্তান জন্মের সুখবর দেওয়া হয়, তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায় এবং সে ভিতরে ভিতরে গুমরে মরতে থাকে। লোকদের থেকে লুকিয়ে ফিরতে থাকে। কারণ এ দুঃসংবাদের পর সে লোকদের মুখ দেখাবে কেমন করে! সে ভাবতে থাকে—অবমাননার সাথে মেয়েকে রেখে দেবে, নাকি মাটিতে পুঁতে ফেলবে!”[৩]

জাহিলি যুগে রক্ষিতা রাখা দোষের কিছু ছিল না। পুরুষদের অসংখ্য রক্ষিতা থাকত। ব্যভিচার ছড়িয়ে গিয়েছিল পুরো সমাজে। দশ জন পুরুষ পালাক্রমে একজন মহিলার সাথে ব্যভিচার করত। কিন্তু ওই নারী টুঁ শব্দটিও করতে পারত না। অনেক স্বামীই তার স্ত্রীকে পাঠিয়ে দিত সম্ভ্রান্ত কারও বিছানায়। পরপুরুষের দ্বারা স্ত্রী গর্ভবতী না হওয়া অবধি সে স্ত্রীর সাথে সহবাস করত না।[৪] সহোদর বোনদেরকে একসাথে বিয়ে করত তারা। এমনকি সন্তান বিয়ে করত সৎমাকে। পুরুষের একচ্ছত্র অধিকার ছিল তালাকের ওপর। পুরুষরা যাকে খুশি বিয়ে করত, মনমতো তালাক দিত। নারীরা কোনোরূপ আপত্তি তুলতে পারত না। এমনকি বিচারও চাইতে পারত না। সম্পত্তিতে নারী-অধিকারের অধ্যায়টা চিরদিনের জন্যে মুছে ফেলা হয়েছিল। দাসীদের অবস্থা তো আরও শোচনীয় ছিল। ন্যূনতম কোনো অধিকারও জুটেনি ওদের কপালে। কেবল পুরুষের মনোরঞ্জন করাই ওদের মুখ্য দায়িত্ব ছিল।[৫]

আরবের দুর্দশা দেখে একথা ভেবো না, ভারতবর্ষের নারীরা বেশ সুখে দিন কাটাচ্ছিল। হিন্দু অধ্যুষিত ভারতের অবস্থা তো আরও শোচনীয়। বেদপাঠ থেকে নিয়ে পুজো অবধি—কোথাও স্থান পেত না ব্রাক্ষ্মণ নারী। ব্রাক্ষ্মণ বালকের জীবনে ‘উপনয়ন’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল, কিন্তু নারীদের জীবনে এই অধ্যায়টি ছিল মৃত। তাই বেদ পড়তে পারত না নারী। কোনোকিছু উৎসর্গ করার সুযোগ পেত না পুজোয়। আর নিম্নবর্ণের হিন্দুদের তো কোনো অধিকারই ছিল না সমাজে। ব্রাক্ষ্মণদের কুকুর যে অধিকার পেত, নিম্নবর্ণের হিন্দুরা তার কানাকড়িও পেত না।

ওদের ধর্মগ্রন্থ থেকে জানা যায়, ভগবান আপন মুখ থেকে বাক্ষ্মণকে, হাত থেকে কায়স্থকে, উরু থেকে বৈশ্যকে এবং পা থেকে শূদ্রকে সৃষ্টি করেছেন[৬] তাই শূদ্রদের তুলনা করা হয় শুকরের সাথে।[৭] শূদ্রের মেয়েকে যদি কোনো ব্রাক্ষ্মণ তার পালঙ্কে বসায়, তবে সে নরকে যাবে।[৮] এমনকি কেউ যদি শূদ্রকে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেয়, তবে সেও শূদ্রের সাথে নরকে জ্বলবে।[৯] কোনো শূদ্র যদি স্বেচ্ছায় বেদের বাণী শোনে, তা হলে গলানো রাং ঢেলে দিতে হবে তার কানে। যদি সে পড়ে, তো তার জিহ্বা কেটে দিতে হবে। আর যদি সে বেদ মুখস্থ করে, তবে তার দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলতে হবে।[১০] শূদ্রদের একমাত্র কাজ হলো ব্রাক্ষ্মণদের সেবা করা।[১১] এর বাইরে গিয়ে কোনো পেশায় জড়িত হওয়ার অধিকার তার নেই। কারণ, সে গোলাম। আর গোলামের দায়িত্ব হলো মনিবের গোলামি করা।[১২]

কুমারীত্ব ছিল হিন্দুদের জন্যে অভিশাপ। ঋষি কুণির কন্যা সুভরু চিরকুমারী ছিল। মৃত্যুক্ষণ ঘনিয়ে এলে সে জানতে পারে, তার জন্যে স্বর্গের দ্বার বন্ধ। কারণ সে অবিবাহিতা। এটা শুনে ওই মুমূর্ষু অবস্থাতেই বিয়ের পিড়িঁতে বসে সুভরু। এক বৃদ্ধ ঋষির সাথে বিয়ে হয় তার। হিন্দু ধর্মবিদদের একাংশের মতে—কুমারী কেউ মারা গেল, তার লাশকেও বিয়ে দিতে হবে। তবেই সে স্বর্গে যাওয়ার অনুমতি পাবে। এ ছাড়া স্বর্গপ্রাপ্তি অসম্ভব।[১৩]

ভয়ানক নিষ্ঠুর বিধান প্রচলিত ছিল ওই সমাজে।[১৪] কোনো নারীর স্বামী মারা গেলে, সে পুনরায় বিয়ে করতে পারত না। স্বামীর মৃত্যুর পর তাকে হতে হতো নিরামিষভোজী। সাদা কাপড় পরে মিতাহার করে করে দেহক্ষয় করতে হতো। ঘুণাক্ষরেও সে বিয়ের কথা মুখে আনতে পারত না। পরপুরুষের নাম মুখে নিলে পরজন্মে শিয়ালের যোনি নিয়ে পৃথিবীতে আসার ভয় দেখানো হতো। কিন্তু পুরুষের জন্যে এই বিধান ছিল ব্যতিক্রম। আবারও বিয়ে করার অনুমতি পেত সে।

পুরুষ জীবিত থাকাবস্থায় নিজের অর্জিত অর্থের মালিকানা পেত না নারী। সম্পত্তিতে ছিল না নারীর কোনো অধিকার। দয়াপরবশ হয়ে পিতা বিয়েতে যা দিতেন, ওতেই শেষ। এর বাইরে চাওয়ার কিছু ছিল না। স্বামীর সম্পত্তিতে দেশের রাজা পর্যন্ত উত্তরাধিকার পেত। কিন্তু বিধবারা পয়সাকড়ি কিছুই পেত না।[১৫] উত্তরাধিকার হিসেবে স্বামীর চিতায় জ্যান্ত কাবাব হওয়ার সুযোগ পেত কেবল। এই ঘৃণিত প্রথার নাম ছিল ‘সতীদাহ’। নারীর সতীত্বের পরীক্ষা ছিল এইটি।

৭০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে সতীদাহ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে হিন্দুসমাজে। স্বামী যেন পরলোকে পাপ থেকে মুক্তি পায়, তারই অংশ হিসেবে বিধবাকে জ্বলতে হতো আগুনে। সতীদাহবাদীরা বলত, “স্বামী মরিলে পর যে স্ত্রী এ পতির জ্বলন্ত চিতাতে আরোহণ করে সে, অরুন্ধতী যে বশিষ্ঠের পত্নী তাঁহার সমান হইয়া স্বর্গে যায়। আর যে স্ত্রী ভর্ত্তার সহিত পরলোক গমন করে সে মনুষ্যের দেহে যত লোম আছে যাহার সংখ্যা সাড়ে তিন কোটি তত বৎসর স্বর্গে বাস করে।”[১৬]

উত্তর ভারতে এ প্রথা ছড়িয়েছিল দাবানলের মতন। রানিরা, রক্ষিতারা দলে দলে রাজাদের চিতায় উঠে সতীদাহের চাকা সচল রেখেছিল। মারওয়ারের রাজা অজিত সিংহের চিতায় উঠেছিল ৬৪জন নারী। রাজা বুধ সিং পানিতে ডুবে মারা গেলে তার চিতায় ওঠে ৮৪জন নারী। ১৬২০ খ্রিস্টাব্দে এক রাজপুত্রের চিতায় উঠেছিল ৭০০ সতী। ১৮১৫-১৮২৮ সালে সতীদাহের কারণে আত্মাহুতি দেয় ৮১৩৫ জন নারী।[১৭] চিতার আগুনে আরোহণ করাকে ‘বীরত্ব’ আখ্যা দিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেন,

“বস্তুত দল বাঁধিয়া মরা সহজ। একাকিনী চিতাগ্নিতে আরোহণ করিবার মতো বীরত্ব যুদ্ধক্ষেত্রে বিরল। বাংলার সেই প্রাণবিসর্জ্জনপরায়ণা পিতামহীকে আজ আমরা প্রণাম করি।… হে আর্য্যে… তুমি যেমন দিবাবসানে সংসারের কাজ শেষ করিয়া নিঃশব্দে পতির পালঙ্কে আরোহণ করিতে, —দাম্পত্যলীলার অবসানদিনে সংসারের কার্য্যক্ষেত্র হইতে বিদায় লইয়া তেম্‌নি সহজে বধূবেশে সীমন্তে মঙ্গলসিন্দূর পরিয়া পতির চিতায় আরোহণ করিয়াছ। মৃত্যুকে তুমি সুন্দর করিয়াছ, শুভ করিয়াছ, পবিত্র করিয়াছ—চিতাকে তুমি বিবাহশয্যার ন্যায় আনন্দময়, কল্যাণময় করিয়াছ। বাংলাদেশে পাবক তোমারই পবিত্র জীবনাহুতিদ্বারা পূত হইয়াছে—আজ হইতে এই কথা আমরা স্মরণ করিব।”[১৮]

এবার চলো, একটু পাশ্চাত্যের দিকে নজর দিই। হাজার হোক, ওদের কাছ থেকে তুমি নারী-অধিকারের তালিম নাও। ওদের অতীত ইতিহাস জানাটা তো আরও বেশি জরুরি।

কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়াটা ওদের কাছে লোকসানের ব্যাপার হিসেবে গণ্য হতো।[১৯] ওদের ধর্মগ্রন্থ বলে বেড়াচ্ছিল, স্বর্গের প্রথম বিধানটি লঙ্ঘন করেছিল একজন নারী।[২০] শয়তান প্রথম নারীকেই ধোঁকায় ফেলেছিল। পাপের সূচনা হয় নারীর হাত ধরেই।[২১] যাকে বলা হয় ‘আদিপাপ’। এর সম্পূর্ণ দায় নারীর। এই পাপের কারণেই ঈশ্বর নারীজাতিকে অভিশাপ দেন। যার ফলে নারীরা যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে সন্তান প্রসব করে।[২২] ওই পাপের জন্যেই ঈশ্বর নারীদের কামনা-বাসনা সব পুরুষের অধীন করে দেন।[২৩] বিয়ের পর স্ত্রীর ধন-সম্পদ স্বামীর অধিকারভুক্ত বলে গণ্য হয়। এ বিধানের কারণে স্ত্রী সম্পত্তির অধিকার হারায়। সেবাদাসী হিসেবে বিবেচিত হয় সমাজে।[২৪]

নারীশিক্ষার কঠোর বিরোধী ছিলেন ধর্মগুরুরা। সেন্ট পল বলতেন, আমি মেয়েদের শিক্ষকতা কিংবা পুরুষের ওপর কর্তৃত্বের অনুমতি দিই না। কেননা, আদম নয়, হাওয়া-ই ধোঁকা খেয়ে পাপের ভাগী হয়েছে।[২৫] অষ্টম হেনরী মেয়েদের বাইবেল পড়তে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ইহুদি পণ্ডিত R. Eliezer তো আর-একটু এগিয়ে বলেন, যে তার কন্যাকে তাওরাত শেখায়, সে যেন অশ্লীলতা শেখাল।[২৬]

ঋতুমতী নারীকে ভয়ংকর চোখে দেখত ওরা। বাইবেলের ভাষায়—ঋতুমতী কোনো বিছানায় শয়ন করলে সেটা অশুচি হয়ে যাবে। কেউ যদি ঋতুমতী নারীকে স্পর্শ করে, সন্ধ্যা পর্যন্ত অশুচি থাকবে সে। কেউ তার শয্যা স্পর্শ করলে, তাকে জামাকাপড় ধুয়ে গোসল করতে হবে। আর ঋতুর রক্ত যদি কোনো পুরুষের গায়ে লাগে, তবে সে সাতদিন পর্যন্ত সে অশুচি থাকবে।[২৭]

নারীদের যে ‘মন’ বলে কিছু আছে, পাশ্চাত্য সেটা স্বীকারই করত না। গ্রীসের জাতীয় উন্নয়নের প্রাক্কালে নারীর অবস্থা ছিলো শোচনীয়। সপ্তদশ শতাব্দীতে রোম নগরীর Council of the wise এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, নারীর কোনো আত্মা নেই। ৫৮৭ সালে ফ্রান্সের সভাদষগণ মহিলাদের মর্যাদা নিরুপণের সময় এভাবে মত প্রকাশ করে— whether a women could truly be considered a human being or not. নারীদের মর্যাদা চরমভাবে ভুলণ্ঠিত হয় সভ্যতার দাবীদার ইংল্যান্ডে। মধ্যযুগের ক্যাথলিক চার্চের গুরুগণ মহিলাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক মনে করত। ১৯৬৪ সালের আগে অক্সফোর্ড এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়ের সমান অধিকার ছিল না। ১৮৫০ সালের আগে ইংল্যান্ডের নারীরা নাগরিক হিসেবে গণ্য হতো না। এমনকি ১৮৮২ সালের আগ পর্যন্ত ইংলিশ মহিলাদের ব্যক্তিগত অধিকার বলে কিছু ছিল না।[২৮] তালাক দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের কোনো অধিকার ছিল না। ছিল না সম্পত্তির অধিকার। সামাজিক কোনো কাজেই নারীর মতামত নেওয়া হতো না। ওদের কাছে নারী ছিল চতুষ্পদ জন্তুর মতো। Iron Maiden বানিয়ে নারীদের খুঁচিয়ে মারা, Breast Ripper দিয়ে স্তন ছিন্নভিন্ন করে ফেলা কিংবা Heretic’s Fork লাগিয়ে গলা এফোঁড়ওফোঁড় করাটা তো ওদের কাছে ডালভাতের মতো ছিল।  ১৪০০ থেকে ১৭০০ অব্দের মধ্যে ওরা ডাইনি নাম দিয়ে পুড়িয়ে মারে পাঁচ লাখ অসহায় নারীকে।[২৯] কাজটি সম্পূর্ণরূপে পরিচালিত হয় চার্চের তত্ত্বাবধানে। পাদ্রীরা এর পক্ষে ফতোয়া জারি করে। “Women are always ready for sex…and they need no preparation for it,” অস্ট্রিয়ার বিশপদের থেকে এই ধরনের ফতোয়াও শোনা যায়।[৩০]

পৃষ্ঠার-পর-পৃষ্ঠা লেখা যাবে এসব নিয়ে। এগুলো হলো মধ্যযুগের কাণ্ডকারখানা, যা পশুদেরও হার মানিয়েছিল। এসব বর্বরতাই চলছিল পাশ্চাত্য ও ভারতবর্ষজুড়ে। এগুলোকে মধ্যযুগীয় বর্বরতা না বলে, কেন ইসলামের ওপর মিথ্যের কালিমা লেপন করতে চাও? ওদের পাশবিকতাকে ইসলামের পর্দা দিয়ে আড়াল করার মতো মহান (?!) দায়িত্ব পালনে কে বাধ্য করেছে তোমায়? এত ক্ষোভ কেন ইসলামের ওপর?

ইসলামের কোন বিধানটা বর্বর মনে হয়েছে তোমার কাছে? মানুষ হিসেবে নারীকে মর্যাদা ও অধিকার দেওয়া হয়েছে, এইটাকে?

মধ্যযুগে যে এলাকাগুলোতে ইসলামের বার্তা পৌঁছোয়নি, ওখানে নারীরা পশু হিসেবে বিবেচিত হতো। পুরুষের পাশাপাশি তাদেরও যে অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক অধিকার আছে, তা স্বীকার করত না কেউ। মধ্যযুগে নারী ছিল ভোগের সামগ্রী। পুরুষের বিছানা গরম করা আর দাসীদের মতো খেদমত করা—এগুলোই ছিল তাদের মুখ্য দায়িত্ব। ইসলাম বিদ্রোহ ঘোষণা করে এসব বর্বর নীতির বিরুদ্ধে। পদে পদে অধিকার দেয় নারীদের। কুরআনে একটা বিশাল অধ্যায়ই স্থান পায় নারী-অধিকার নিয়ে। সূরাটির নাম হলো ‘নিসা’, মানে ‘মহিলা’। এটি শুরুই হয়েছে মানবজাতির অংশ হিসেবে নারীদের মর্যাদার বিবরণ দিয়ে :

“হে মানবজাতি! তোমাদের রবকে ভয় করো। তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি প্রাণ থেকে। আর সেই একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া। তারপর তাদের দুজনার থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। সেই আল্লাহকে ভয় করো যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের কাছ থেকে নিজেদের হক আদায় করে থাকো এবং আত্মীয়তা ও নিকট সম্পর্ক বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকো। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ তোমাদের ওপর কড়া নজর রেখেছেন।” [৩১]

এরপর পর্যায়ক্রমে আরও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বর্ণনা করা হয়েছে নারী অধিকারের ইশতেহার।

ইউরোপে যখন নারীদের কুকুরের সাথে তুলনা করে বলে হচ্ছে—“A spaniel, a woman and a walnut tree, The more they’re beaten, the better they be”, ঠিক সেই সময়টাতে ইসলাম বলে দিচ্ছে—কেউ যদি তার মেয়েদের আদর দিয়ে, ভালোবেসে, বড়ো করে তোলে, তো কিয়ামতের দিন সে মহানবির কাছাকাছি থাকবে।[৩২] ঋতুমতী নারীরা যখন অপয়া হিসেবে লাঞ্চিত হচ্ছে ক্যাথলিক সমাজে, সেই সময়টাতেই ঋতুমতী স্ত্রীর সাথে একই বিছানায় ঘুমাচ্ছে ইসলামের স্বামীরা।[৩৩] নারীদের মত প্রকাশের সব পথ যখন বন্ধ করে রেখেছে ওরা, তখন উম্মু সালমা-র পরামর্শ গৃহীত হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে।[৩৪] মাসজিদে দাঁড়িয়ে খলিফা উমার (রা) ভুল সংশোধন করে দিচ্ছে একজন নারী।

Elizabeth Freke দুঃখ-কষ্টে জর্জরিত হয়ে যখন তার ডায়ারিতে লিখছিল, “My dear husband, borrowed of me but not without some force and cruelty” [৩৫], সেই মুহূর্তে একজন কুমারী নবি (সা) এর কাছে এসে নালিশ জানিয়ে বলছে, বিয়েতে তার অনুমতি নেওয়া হয়নি। আর সে বিয়ে বাতিল হয়ে যাচ্ছে।[৩৬]

ভারতবর্ষের বিধবারা যখন স্বামীর চিতায় আত্মাহুতি দিচ্ছে, তখন আমাদের বিধবারা পিতা-স্বামী-সন্তান এমনকি নাতির সম্পত্তিতে অধিকার ভোগ করছে। পাচ্ছে পুনরায় বিয়ের অধিকার। কুমারী নারীরা যখন ব্রাক্ষ্মণদের লালসার শিকার হচ্ছে, ইউরোপের নারীরা হয়ে যাচ্ছে সেবাদাসী, তখন ইসলাম ঘোষণা দিচ্ছে—তোমরা স্ত্রীদের সাথে উত্তম আচরণ করো।[৩৭] ওদের কষ্ট দিয়ো না।[৩৮] স্ত্রীকে ভালোবাসো। ওর মুখে খাবার তুলে দাও। বিনিময়ে সদাকার সওয়াব পাবে।[৩৯] জেনে নাও, ওই লোকই উত্তম যে কিনা তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।[৪০]

তাওরাত, বেদ, গীতা ছোঁয়া যে সময়টাতে নিষিদ্ধ ছিল নারীদের জন্যে, তখন রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীদের দ্বীন শেখানোর ব্যবস্থা করছিল ইসলাম। একটি দিন নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল মহিলাদের দ্বীনি তালিমের জন্যে।[৪১] এমনকি দাসীদেরকেও সতীত্ব রক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল।[৪২] ওদেরকেও শিক্ষিত করে তোলার আদেশ দিয়েছিল।[৪৩] ফলে, দাসীদের মধ্যেও অনেক জ্ঞানীগুণীর আবির্ভাব ঘটতে লাগল পর্যায়ক্রমে। তৃতীয় আবদুর রহমান ও তার ছেলে হাকামের ব্যক্তিগত সচিব ছিল লুবনা নামের এক দাসী। গণিতে বেশ দক্ষ ছিল সে। ৫ লক্ষ বইয়ের রাজকীয় গ্রন্থাগারের দায়িত্ব তার ওপরেই ন্যাস্ত ছিল।[৪৪]

রোমান সাম্রাজ্য যখন সেন্ট পলের ফতোয়া[৪৫] জারি করে নারীশিক্ষা নিষিদ্ধ করে রেখেছে, তখন মদীনার মাসজিদে উম্মুল খাইর ফাতিমা, দামিশকের বনু উমাইয়া মাসজিদে আয়িশা বিনতে আবদুল হাদী, কায়রোর মাসজিদে সিত্তুল উযারা বিনতে উমার ‘বুখারি শরীফ’ পড়াচ্ছেন। জামিয়া আল-মুযাফফরিতে ‘তাবারানি শরীফ’ পড়াচ্ছেন যাইনাব বিনতে কামাল। নিজ বাসায় পড়াচ্ছেন ফাতিমা বিনতে আলি, উম্মুল ফাখস জুমুআ, যাইবান বিনতে আলাম-সহ অনেকেই। আল-মিযযী, ইবনু তাইমিয়্যা, যাহাবি-সহ অনেক বিখ্যাত ইমাম পড়াশোনা করছেন যাইনাব বিনতে মাক্কী-র কাছে।[৪৬]

কেবলমাত্র নারী হওয়ার অপরাধে ব্রাক্ষ্মণ নারীরা যখন পুজোর মন্ত্র পড়তে পারছিল না, বেদ স্পর্শ করার অপরাধে যখন শাস্তি পাচ্ছিল নিম্নবর্ণের হিন্দুরা, তখন মাসজিদ থেকে নিয়ে পবিত্র কা’বা শরিফ পর্যন্ত নারীদের বিচরণ ছিল।[৪৭] কূফার মুসলিম নারীরা কুরআনের কপি লিখে যাচ্ছিল আপন-মনে। এত্থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে মুক্ত করা হচ্ছিল মুসলিম বন্দিদের।[৪৮] ইউরোপের কোর্টে সাক্ষী দেওয়া যখন পুরোপুরি নিষিদ্ধ নারীদের জন্যে, তখন ইসলামের মেয়েরা সাক্ষী দিচ্ছিল বিচারকের সামনে।[৪৯] ২০ শতাব্দী পর্যন্ত যখন পাদরিরা বলছিল, নারীদের কোনো অন্তর নেই। সেখানে ইসলাম হাজার বছর আগেই বলে দিয়েছিল, নারী ও পুরুষ উভয়ের আত্মা আছে। এবং দুজনেই তাদের কৃতকর্মের জন্যে সমানভাবে দায়ী।[৫০]

বোন আমার! তুমি মধ্যযুগীয় বর্বরতা কাকে বলছ? না জেনে, না পড়ে, না বুঝে, ইসলামের ওপর আঙুল তুলছ? তুমি না শিক্ষিত, অনেক থিসিস না পড়া হয়েছে তোমার, প্রতিদিনই তো মেসেঞ্জারে একটিভ দেখা যায় তোমাকে। অনলাইনে একটু পড়াশোনা করে দেখো না, বর্বরতা কোথায় আছে! পাশ্চাত্যের শেখানো মেয়াদোত্তীর্ণ বুলি কতবার শোনাবে? আর কতদিন ওদের সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলবে?

১৪৫০ বছর আগেই ইসলাম নারীকে যা দিয়েছিল, প্রচলিত কোনো ধর্মগ্রন্থ কি তার ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারবে? কিং জেমস ভার্সন, রিভাইসড স্ট্যান্ডার্ড ভার্সন, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ভার্সন-সহ বাইবেলের প্রায় শ’ খানিক সংস্করণ আছে, সবগুলো সামনে নিয়ে বসো। দরকার হলে আরেকটা নতুন সংস্করণ বানিয়ে নাও। রিভাইসড মনুসংহিতা লিখতে বলো পণ্ডিতদের। তন্ন তন্ন করে খুঁজো বেদের প্রতিটি লাইন। ত্রিপিটকের বিধানগুলো ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে পড়ো। দেখো, কিছু পাও কি না। কিয়ামাত পর্যন্ত সময় দেওয়া হলো।

পাশ্চাত্যের দেওয়া চশমাটাকে খুলে ফেলে একবার নিরপেক্ষ মন নিয়ে ভাবো, দুনিয়াজুড়ে নারীরা যখন লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-অপমানিত অবস্থায় দিন যাপন করছিল, তখন কীভাবে এই অধিকারের বাণী শোনানো হলো? বিশ্বের বড়ো বড়ো সভ্যতাগুলো যখন উল্টো পথে হাঁটছিল, সেই সময়টাতে কীভাবে ইসলাম নারী-অধিকারের ইশতেহার বাস্তবায়ন করল? যখন সব ধর্মগ্রন্থ নারীদের জীবনকে সংকীর্ণ করে তোলেছিল, তখন কুরআন কীভাবে মসৃণ করে দিল নারীদের চলার পথ?

সমকালীন কোনো সভ্যতা যা কল্পনাতেও আনেনি, ইসলাম সেটাই ধূ-ধূ মরুভূমিতে বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছে। এটা প্রমাণ করে যে, ইসলাম কোনো মহাপুরুষের কল্পিত আদর্শ নয়। মানবরচিত কোনো জীবনবিধান নয়। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হওয়া সার্বজনীন দ্বীন।

তোমার ওই কথাগুলো শুনে বেশ কষ্ট পেয়েছিলাম। আমি ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি, কোনো মুসলিম মেয়ের মুখ দিয়ে এমন কথা বেরোতে পারে। ইসলাম নারীকে যা দিয়েছেন তা যথেষ্ট নয় যদি এমনটাই ভাবো, তবে মনে রেখো—কোনো বিশ্বাসবারি অবশিষ্ট নেই তোমার হৃদয়নদীতে। যা ছিল, সব শুকিয়ে গেছে। এখন কেবল জাহিলিয়াতের ধুলোবালি উড়ে বেড়াচ্ছে ওখানে।

তথ্যসূত্র ও গ্রন্থাবলি

[১] সাইয়্যেদ কুতুব শহীদ, তাফসীর ফী যিলালিল কুরআন, ১২/১০৬-১০৮।

[২] নজিবাদি, আকবর শাহ খান, ইসলামের ইতিহাস,১/৬৮।

[৩] সূরা আন-নাহল : ৫৮-৫৯আয়াত।

[৪] বুখারি, মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল, আস-সহীহ, অধ্যায় : বিয়ে, ৮/৪৭৫১;

[৫] মুবারকপুরি, শফিউর রহমান, আর রাহীকুল মাখতুম, পৃষ্ঠা : ৬০-৬৪; Edward Gibbon, The Decline and fail of the Roman Empire, 2/50; Robert Spencer, The Truth About Muhammad,p.34.

[৬] ঋগবেদ, ১০:৯:১২, ভগবত পুরান, ২ : ৫-৩৭।

[৭] মনুসংহিতা, ১২ : ৪৩।

[৮] মনুসংহিতা, ৩ : ১৭।

[৯] মনুসংহিতা, ৪ : ৮১।

[১০] মনুসংহিতা, ১২ : ৪-৬।

[১১] মনুসংহিতা, ১০ : ১২৩।

[১২] মনুসংহিতা, ১০ : ১২৯।

[১৩] Altekar, A S, Position of Women in Hindu Civilization, p.৩৩

[১৪] মনুসংহিতা, ৫:১৫৭, ৫:১৬৪, ৫:১৬৮, ৮:৪১৬।

[১৫] Altekar, A S, Position of Women in Hindu Civilization, p.250-270

[১৬] রামমোহন রায়, সহমরণ বিষয়ক প্রবর্ত্তক ও নিবর্ত্তকের সম্বাদ, পৃষ্ঠা : ৩-৪।

[১৭] হুমায়ুন আজাদ, নারী, পৃষ্ঠা : ৭৬।

[১৮] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিচিত্র প্রবন্ধ, মা ভৈঃ, পৃষ্ঠা : ৬৮-৬৯। মা ভৈঃ প্রবন্ধটি লেখা হয় ১৩০৯ বঙ্গাব্দে।

[১৯] Ecclesiasticus 22:3

[২০] She gave me some fruit from the tree and I ate it. [Genesis 3:12]

[২১] And Adam was not one deceived; it was the woman who was deceived and became a sinner. [1 timothy 2:14]

[২২] I will greatly increase your pains in child-bearing; with pain you will give birth to children. [Genesis 3:16]

[২৩] Your desires will be for your husbands and he will rule over you.

[২৪] Women in Judaism: The Status Of Women In Formative Judaism, Leonard J. Swidler 1976

[২৫] 1 Timothy 2: 11-14

[২৬] Babylonian Talmud: Tractate Sotah, Folio 20a

[২৭] Leviticus 15: 19-23

[২৮] Vivian C. Fox, Historical Perspectives on Violence Against Women, Journal of International Women’s Studies, Volume 4 | Issue 1, Nov-2002, p.5

[২৯] The European Witch Craze of the 14th to 17th Centuries: A Sociologist’s Perspective, Nachman Ben-Yehuda, American Journal of Sociology, Vol. 86, No. 1 (Jul., 1980), pp. 1-31

[https://www.jstor.org/stable/2778849?seq=1#page_scan_tab_contents]

[৩০] James A. Brundage, Law, Sex, and Christian Society in Medieval Europe (Chicago, 1987) p.427.

[৩১] সূরা নিসা : ১ আয়াত।

[৩২] মুসলিম, আবুল হোসাইন ইবনুল হাজ্জাজ, আস-সহীহ, হাদীস : ২৬৩১; নাবাবি, মুহিউদ্দীন ইয়াহহিয়া ইবনু আশরাফ, রিয়াদুস সালিহীন, ১/২৭২।

[৩৩] বুখারি, আস-সহীহ, ১/২৯৪;মুসলিম, আস-সহীহ, ২/৫৮১, আহমাদ ইবনু হাম্বল, আল-মুসনাদ, ১/৩২৬, ইবনু মাজাহ, আস-সুনান, ১/৬৩৭ ।

[৩৪]বুখারি, আস-সহীহ, অধ্যায় : শর্তাবলী,হাদীস : ২৭৩১-২৭৩২।

[৩৫] Vivian C. Fox, Historical Perspectives on Violence Against Women, Journal of International Women’s Studies, Volume 4 | Issue 1, Nov-2002, p.8

[৩৬] বুখারি, মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল, আস-সহীহ, ১০/৬৪৯৮।

[৩৭] সূরা নিসা : ১৯ আয়াত।

[৩৮] আলবানি, মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন, আদাবুয যিফাক,পৃষ্ঠা : ১৫৯-১৬০; সহীহ সুনানুত তিরমিযি, হাদীস : ১১৬৩।

[৩৯] বুখারি,আস-সহীহ, ১/৫৪।

[৪১] নাবাবি, রিয়াদুস সালিহীন, ১/২৮৩; আলবানি, আদাবুয যিফাক, পৃষ্ঠা : ১৫৮; আলবানি, সিলসিলাতুল সহীহা, হাদীস : ২৮৪।

[৪২] ‘‘মহিলারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল, আপনার কাছে পুরুষরা এত ভিড় লাগিয়ে থাকে যে, অনেক সময় আমাদের পক্ষে আপনার কথা শোনা সম্ভবই হয় না। অতএব আমাদের জন্য আপনি আলাদা একটি দিন ধার্য করে দিন। একথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য একটি দিন নির্দিষ্ট করে দিলেন। সেই দিন তিনি তাদের কাছে গিয়ে উপদেশ দিতেন এবং সৎকাজের নির্দেশ দান করতেন।’’

[৪৩] সূরা আন-নূর : ৩৩আয়াত।

[৪৪] ‘‘যার নিকট কোনো দাসী আছে এবং সে তাকে শিক্ষা দান করে, ভালভাবে সুশিক্ষার ব্যবস্থা করে, ভদ্রতা ও শালীনতা শিক্ষা দেয়, এবং মর্যাদা দান করে, তার জন্যে রয়েছে দ্বিগুণ প্রতিদান।’’ বুখারী, হাদীস নং ৯৭।

[৪৫] “I don’t permit a woman to teach or have authority over a man… And Adam was not the one deceived, it was the woman who deceived and became a sinner.” (1 Timothy 2: 11-14 )

[৪৬] বিস্তারিত জানার জন্যে শাইখ আকরাম নদভি-র Al-Muhaddithat বইটা পড়া যেতে পারে।

[৪৭] সূরা আলি ইমরান : ৯৭ আয়াত।

[৪৮] মুজাহিদুল ইসলাম, ইসলামি সভ্যতায় নকলনবিশির কথকতা; ফাতেহ২৪ সাপ্তাহিকী, ১৮ জানুয়ারি ২০২০।

[৪৯] সূরা বাকারাহ : ২৮২ আয়াত।

[৫০] সূরা নিসা, ০৪ : ১২৪; সূরা আল ইমরান, ০৩ : ১৯৫।

মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।

নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।

Loading Facebook Comments ...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Loading Disqus Comments ...
IIRT Arabic Intensive