আদনানের মা বাসার বারান্দায় পাখি পালে। পাখিগুলোর মধ্যে লাভ বার্ডগুলোই দেখতে সবচেয়ে সুন্দর লাগে। এছাড়া ঘুঘুও দেখতে সুন্দর। পাখিগুলোর কাজকর্ম দেখলে অবাক হয়ে যেতে হয়! এইটুকু পাখি, তার কত ঢং!
লাভ বার্ডের দুটি মজার বৈশিষ্ট্য আছে। পাখিগুলোর পাড়া ডিমগুলো দেখার জন্য একটি ডিমে হাত দিলেই মহাপ্রলয় শুরু হয়ে যাবে। ওই পাখি ডিমগুলোর উপরে আর বসবেই না। সব ফেলে দেবে। মানুষেরও এত রাগ নেই মনে হয়। আবার তাদের বাচ্চাগুলো এতই ছোট হয় যে, নিজে উঠতেই পারে না। খাওয়া তো দূরের কথা! তাহলে উপায় কী? একমাত্র উপায় হলো, তার বাবা মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রম। পাখিটির মা বাচ্চাটিকে চিৎ করে শুইয়ে দুই হাত পা চেপে ধরে ঠোঁট দিয়ে বাচ্চার মুখ খুলে ধরে। ঠিক তখনই বাচ্চার বাবা খাবার এনে বাচ্চাটির মুখে ঢুকিয়ে দেয়। ব্যাপারটি দেখতে খুব সুন্দর লাগে। ফাতিমার মন খারাপ হলে বারান্দায় বসে পাখিগুলোর কাজকর্ম দেখে আর হাসতে থাকে। এতে তার মনের অবস্থা কিছুটা হলেও ভালো হয়।
রাতে ফাতিমা বারান্দায় একা একা বসে পাখিদের খেলা দেখছিলো। আদনানের ব্যাপারে কিছুতেই নিশ্চিন্ত হতে পারছে না ফাতিমা! এই অবস্থায় আদনানের সাথে থাকা ঠিক হবে কি? সমাজ তো কিছু জানে না। কিন্তু ইসলাম কী বলে? এখন কি আলাদা হয়ে যাওয়া উচিত? কিন্তু তার বাবা-মা কি এতে রাজি হবে?
রাজ্যের চিন্তা মাথায় নিয়ে পাখিগুলোর দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ফাতিমা। এ সময় আদনান এসে পিছন থেকে ডাক দিলো,
“ফাতিমা, কী ভাবছো?”
-“না, তেমন কিছু না!”
-“বাড়ির জন্য মন খারাপ? বাড়ি গেলে যেতে পারো। আমি দিয়ে আসবো।”
-“না, ঠিক আছে। সমস্যা নেই। আমার ইচ্ছা হলে আমি তোমাকে বলবো।”
-“ওকে।”
ধপাস করে একটি শব্দ হলো ওই পাশের রুম থেকে। আদনান জিজ্ঞাসা করলো, “কী হলো?”
-“তেমন কিছু না। বাতাসে দরজা ধাক্কা খেয়েছে। মনে হয় বৃষ্টি হবে।”
-“ওহ! মা-কে বলো তো একটু খিচুড়ি রান্না করতে। সাথে গরুর মাংস।”
-“মা আগে থেকেই তোমার জন্য খিচুড়ি রান্না শুরু করেছে। একটু পরেই রান্না হয়ে যাবে ইন-শা-আল্লাহ।” বলে ফাতিমা উঠে চলে গেলো।
পাশের বাড়ির টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শোনা যাচ্ছিলো। আদনান দিগন্তে তাকিয়ে শৈশবে পাড়ি জমালো। “মানুষগুলো কেমন যান্ত্রিক হয়ে গিয়েছে। শহরে বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করেছে। তাই টিনের চালে সুমধুর বৃষ্টির শব্দ শুনতে পাওয়া এখন ডুমুরের ফুল। এখন এসব ছোটবেলার সোনালী অতীত!” – জানালার পাশে বসে বৃষ্টি দেখছিলো, আর এসব ভাবছিলো আদনান।
বৃষ্টির সময়ে দু’আ কবুল হয়, এই আশায় ফাতিমা সালাতে দাঁড়ালো। সালাত শেষে দুই হাত তুলে চোখের পানি ফেলে লম্বা দু’আ করলো ফাতিমা। দু’আ শেষ হতে না হতেই ডাইনিং রুম থেকে আদনানের মা ডাক দিয়ে বললেন, “আদনান, খেতে আয়, বাবা।”
-“হ্যাঁ, আসছি মা।” বলে জানালার পাশ থেকে নিজের রুমে গিয়ে একটি অ্যান্টাসিড নিয়ে ড্রয়িং রুমে যেতে লাগলো আদনান।
ঘরের কোনায় ফাতিমাকে জায়নামাযে বসা দেখে বললো, “হয়েছে! নামায পরে পড়ো। এখন খেতে চলো। মা ডাকছে।”
ফাতিমা দ্রুত জায়নামায গুছিয়ে ড্রয়িং রুমে এসে পড়লো। আদনানের বাড়িতে সবাই একসাথেই খায়। টেবিলে সবাই নিজ নিজ চেয়ারে বসে পড়লো। কেউ কাউকে খাবার তুলে দেয় না। যার যেটা পছন্দ, সে সেটা নিয়ে নেয়। বৃষ্টির রাতে খিচুড়ির সাথে গরুর মাংসের কম্বিনেশানটা অস্থির লাগে আদনানের। নিজ থেকে নিয়েই মন ভরে খেলো। তারপরে মায়ের রান্নার হাতের এক ভূয়সী প্রশংসা করে নিজের রুমে চলে এলো।
কিছুক্ষণ পর ফাতিমাও সবকিছু গুছিয়ে রেখে রুমে এসে পড়লো। রুমে এসে ফাতিমা দেখলো, আদনান ল্যাপটপ নিয়ে বসেছে। ফাতিমা খাটের অন্যপাশে একটি অর্থসহ কুরআন নিয়ে পড়তে থাকলো। কেউ পাশাপাশি বসে একজনের দিকে বারবার তাকালে সেটা বোঝা যায়। ফাতিমাও লক্ষ করলো, আদনান বারবার তার দিকে তাকাচ্ছে। তখন ফাতিমা আদনানের দিকে তাকিয়ে বললো, “কিছু বলবে?”
-“হ্যাঁ। আচ্ছা, তুমি কি কোরানের সব তথ্য সঠিক মনে কর?” প্রশ্ন করলো আদনান।
-“মনে করার কী আছে? কুরআনের সকল তথ্যই সঠিক।”
আদনান চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বললো, “তর্ক হয়ে যাক তাহলে?”
ফাতিমা বললো, “তর্ক করতে চাই না। তর্ক করাই হয় জয়ী হবার জন্য। এখানে সত্যকে মেনে নেবার ইচ্ছা সবার থাকে না। তুমি চাইলে আলোচনা করতে পারো।”
-“ওই সেটাই। আলোচনাই হোক।”
-“কী বিষয়ে?”
-“তোমার হাতে যেই কোরান আছে, এটা থেকে তুমি ৮৬ নম্বর সূরার ৫ নং আয়াত থেকে একটু পড়ো তো।”
ফাতিমা আল্লাহ তা’আলার নামে শুরু করে পড়া শুরু করলো, “মানুষ কি দেখে না তাকে কোন জিনিস দিয়ে বানানো হয়েছে? তাকে তৈরি করা হয়েছে এক ফোঁটা সবেগে স্খলিত পানি দিয়ে, যেটি নির্গত হয় মেরুদণ্ড ও বুকের পাঁজরের মাঝখান থেকে। এভাবে যাকে তিনি বের করে এনেছেন, তাকে তিনি পুনরায় জীবিত করতেও সক্ষম।”
ফাতিমাকে থামিয়ে আদনান বললো, “হা হা হা। হয়েছে বাপু। আর পড়া লাগবে না। ফাতিমা দেখো, কোরানে বলা হয়েছে পুরুষের বীর্য নাকি মেরুদণ্ড ও বক্ষপাঁজরের হাড় থেকে তৈরি হয়েছে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান আমাদের বলে বীর্য পুরুষের টেস্টিস বা অণ্ডকোষ থেকে তৈরি হয়।”
এই বলে আদনান বৈজ্ঞানিক প্রমাণসহ ল্যাপটপে ওপেন করা একটি আর্টিকেল পড়ার জন্য ল্যাপটপটি ফাতিমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো, “বিশ্বাস না হলে এই নাও, প্রমাণ দেখো। কত হাস্যকর। হা হা হা। তোমরা তো প্রায়ই কোরান’কে বিজ্ঞানময় বলো! এই তোমাদের বিজ্ঞানের নমুনা। এতেই প্রমাণ হয় যে, মোহাম্মদ একজন মিথ্যা নবী। কারণ সে জানতোই না যে, বীর্য কোথায় তৈরি হয়। আর কোরান আল্লার লেখাও নয়। যদি হতো, তাহলে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে সে জানতো বীর্য কোথায় তৈরি হয়।”
ফাতিমা ব্যাঙ্গ করে বললো, “আপনার ভাষণ শেষ হয়েছে? অনেক তো বললেন! এবার আমি কিছু বলি?”
আদনান বললো, “হ্যাঁ, শেষ হয়েছে। কেন? তুমি আবার ডিফেন্স দিবে নাকি? অবশ্য দিতেই পারো। তোমরা তো প্রায়ই বলো, ‘বিজ্ঞান তো ভুলও হতে পারে। হয়তো এখনো সঠিকভাবে আবিষ্কার হয়নি।’ হা হা হা। জেনে রেখো, এটা কিন্তু একদম চোখে দেখে প্রমাণিত। তুমি চাইলে আমি ভিজুয়াল প্রমাণ এবং প্র্যাক্টিক্যাল প্রমাণ দেখাতে পারি। আমি তোমাদের বর্তমান অনেক স্কলারের ব্যাখ্যা শুনেছি। কিন্তু কারো ব্যাখ্যাই আমার কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। কেউ বলে মায়ের গর্ভে থাকাকালে টেস্টিস মেরুদণ্ড আর পাঁজরের মাঝে থাকে। আবার কেউ বলে মেরুদন্ড ও বুকের পাঁজরের মাঝ স্থান থেকে টেস্টিসে ব্লাড সাপ্লাই আসে। এগুলো সবই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো। এই আয়াতে কোথাও টেস্টিস কোথায় থাকে বা কোন স্থান থেকে ব্লাড সাপ্লাই পায়, সেটা বলা নেই। এখানে স্পষ্ট বলা আছে বীর্যের কথা। বললে এগুলো বাদে বলো।”
ফাতিমা বললো, “হ্যাঁ! ডিফেন্স তো দিতেই হবে। কারণ তোমার এই অনধিকার চর্চা দেখে আর কিছু না বলে থাকতে পারছি না!”
আদনান বললো, “কী বলবে, বলো দেখি। অপবিজ্ঞান শুনি তোমার মুখে। হা হা।”
ফাতিমা বললো, “তুমি এখানে অনেকগুলো ক্লেইম করেছো। প্রত্যেকটার উত্তর আলাদাভাবে দিতে হবে। মনোযোগ দিয়ে শুনবে, হ্যাঁ?”
আদনান বললো, “কোথায়? আমি তো প্রমাণ ছাড়া কিছু বলিনি! সব প্রমাণ তো তোমার হাতেই দিয়েছি। দেখো, সেগুলো দেখো।”
ফাতিমা বললো, “দেখার দরকার নেই। আমি এগুলো জানি। বলছি কেন তোমার কথাগুলো প্রমাণ ছাড়া। একটু ওয়েট করো।” বলে ফাতিমা হাতের ল্যাপটপটি পাশে রেখে আদনানের দিকে ঘুরে বসলো।
তারপরে একটু গলা ঝেড়ে আবার বলা শুরু করলো, “প্রথমেই তুমি বলেছো যে, কুরআন নাকি বলেছে ‘পুরুষদের বীর্য তৈরি হয় মেরুদণ্ড ও বক্ষপাঁজর থেকে।’ কিন্তু কুরআন কখনোই এই কথা বলেনি যে বীর্য তৈরি হয় মেরুদণ্ড ও বক্ষপাঁজরের মধ্যে থেকে। এখানে তোমার ট্রান্সলেশান বুঝতে ভুল হয়েছে। আমার হাতের কুরআনের দিকে খেয়াল করো। ৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে ‘যেটি নির্গত হয়’। এখানে ‘যা তৈরি হয়’ তো বলা হয়নি। এই আয়াতে ‘যেটি নির্গত হয়’ শব্দগুলো যেই শব্দের অনুবাদ সেটি হলো, ‘ইয়াখরুজু (يَخْرُجُ)’; যেটি এসেছে ফি’ল বা ক্রিয়া ‘খারাজা (خرج)’ থেকে। এটির অর্থ ‘বের হয়ে যাওয়া’।[১] এই শব্দের অর্থ কখনোই ‘সৃষ্টি বা তৈরি হওয়া’ নয়। তারপরে তুমি ৬ নং আয়াতে, ‘আল-মায়ু (اَلمَاء)’ এর বাংলা শুধু ‘পুরুষদের বীর্য’ ভেবেছো। কিন্তু ‘আল-মায়ু (اَلمَاء)’ এর বাংলা অর্থ শুধু পুরুষদের বীর্য নয়। এর স্বাভাবিক অর্থ হলো, যেকোনো ‘পানি জাতীয় জিনিস বা পানি’।[২] এই ‘আল-মায়ু (اَلمَاء)’-এর পরে যখন ‘দাফিক্ব’ (دَافِق) শব্দটি এসেছে, তখন ৬ নং আয়াতের ‘মায়ুন দাফিকুন’-এর বাংলা অর্থ হয় ‘সবেগে স্খলিত পানি বা প্রবাহিত পানি’। আর এই সবেগে স্খলিত পানি শুধু পুরুষের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নয়, এটা মহিলাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।[৩] কারণ মেয়েদের ডিম্বাণু যখন ডিম্বাশয় থেকে বের হয়, তখন কুমুলাস কমপ্লেক্স ও পানিসহ সবেগেই বের হয়।[৪] আবার যেহেতু এখানে ‘একটি পানি’র কথা বলা হয়েছে, সেক্ষেত্রে এই পানিকে জাইগোটও বলা যেতে পারে। কারণ, জাইগোটও ফেলোপিয়ান টিউবের মধ্যে প্রবাহিত হয়ে সামনে আগায়। তাহলে জাইগোট যেহেতু একটি পানি এবং এর ‘দাফিক্ব’ বা প্রবাহিত হবার বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেহেতু ৬ নং আয়াতের ‘মায়ুন দাফিকুন’ বলতে ‘জাইগোট’ অর্থও যুক্তিযুক্ত। কেউ কেউ এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, এখানে পুরুষের এবং নারীর পানির কথা বলা হয়েছে। আর একটি পানি বলার কারণ হলো, যেহেতু পানিদ্বয় একস্থানে একত্রিত হয়ে একাকার হয়ে যায়।[৫] তাহলে, এই আয়াতে ‘মায়িন দাফিক্ব (مَّآءٍ دَافِق)’ বলতে পুরুষের বীর্য, নারীর ডিম্বাণুসহ পানি এবং জাইগোট এই তিনটি অর্থই নেওয়া যায়।[৬] এটুকু কি ক্লিয়ার হয়েছে?”
কথাগুলো শুনে আদনানের মুখের খুশি খুশি ভাব মুহূর্তেই চলে গেলো। পাশে তাকিয়ে কী যেন ভাবছে। ফাতিমা আদনানের উদাসীন অবস্থা দেখে বললো, “আদনান, কী ভাবছো? মনোযোগ দিয়ে শোনো।”
আদনান বললো, “ও হ্যাঁ, দুঃখিত। আচ্ছা সেটা নাহয় বুঝলাম। কিন্তু এর কোনোটাই তো মেরুদণ্ড বা বক্ষপিঞ্জরের মধ্যে থেকে আসে না। এটাকে তুমি কীভাবে ব্যাখ্যা করবে?”
ফাতিমা বললো, “হ্যাঁ, বলছি। এবার ৭ নং আয়াতের ‘আস-সুল্ব’ (الصلب) এবং ‘আত-তারায়িব’ (اَلتَّرَآئِب) শব্দ দুটির অর্থ এখানে কী হতে পারে, সেটি একটু বিশ্লেষণ করি। প্রথমেই এটা মাথায় রাখো যে, এই শব্দ দুটি পুরুষ কিংবা মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে। এখন, প্রথম শব্দটা হলো, ‘আস-সুল্ব’ (الصلب)। এখানে, ‘সুল্ব’ (‘صلب’) শব্দের অর্থ মেরুদণ্ড। বিশেষ করে কোমরে যে মেরুদণ্ডের হাড় থাকে সেটুকু।[৭] তাফসীর-বিদগণ ‘সুল্ব’ শব্দের অর্থ এই আয়াতে মেরুদণ্ড হিসেবেই নিয়েছেন। এবার ৭ নং আয়াতের ২য় শব্দটি হলো, আত-তারায়িব (اَلتَّرَآئِب)। এখন, ‘তারায়িব’ (تَرَائِب) শব্দটির প্রচুর অর্থ রয়েছে। আসলে একেক তাফসিরকারক ‘তারায়িব’ শব্দটির একেক অর্থ গ্রহণ করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যেমন, কেউ বলেছেন বুকের পাঁজরের হাড় বা দুই কাঁধ এবং বুকের মধ্যবর্তী স্থান। আবার কেউ বলেছেন, দুই চোখ বা দুই পায়ের মধ্যবর্তী স্থান।[৮] এই শব্দের অর্থে কেউ একমত হতে পারেনি। তাই এখানে অর্থের ব্যাপকতা আছে। আমরা সামঞ্জস্যপূর্ণ দুটি অর্থ নিয়েই আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ। এখন বলো, অর্থগুলো কি তোমার মাথায় ঢুকেছে।”
আদনান উত্তর দিলো, “হ্যাঁ, ঢুকেছে। তাহলে এই আয়াতের অর্থ তুমি কীভাবে করতে চাচ্ছো?”
ফাতিমা বললো, “আয়াতের অর্থ করার আগে কুরআনের একটি বিশেষ দিক তোমাকে বলি। আল্লাহ তা’আলা কুরআনে যতবার লজ্জাস্থান হেফাজতের কথা বলেছেন, ততবারই কিন্তু সরাসরি অঙ্গটির নাম উল্লেখ করেননি। বলেছেন, দুই পায়ের মধ্যবর্তী স্থানের হেফাজত করতে।[৯] এই আয়াতেও দুই পায়ের মধ্যবর্তী স্থান বুঝাতে সরাসরি শব্দটি না ব্যবহার করে ইঙ্গিত দিয়েছেন বলেই আমার মনে হয়।”
আদনান বিরক্তির সুরে বললো, “আচ্ছা, ঠিকাছে। তুমি আগে আয়াতের অর্থ বলো তো! এতকিছু জেনে কী হবে?”
ফাতিমা বললো, “এতকিছু জানো না বলেই তো আয়াতের অর্থ বুঝতে পারো না। তো যেটা বলছিলাম, সুল্বের অর্থ ‘মেরুদণ্ড’ এবং তারায়িবের অর্থ ‘দুই পায়ের মধ্যবর্তী স্থান’ ধরে অনুবাদ করলে, সূরা তারিকের ৭ নং আয়াতের অর্থ হয়, ‘এটি বের হয়ে আসে কোমরের মেরুদণ্ডের হাড় এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী স্থানের মাঝখান থেকে।’ অর্থাৎ, কোমরের হাড় তো দেহের পিছনে। আর দুই পায়ের মধ্যবর্তী স্থান বা লজ্জাস্থান হলো সামনে। সুতরাং, এই দুইটা স্থানকে যদি তুমি ল্যান্ডমার্ক হিসেবে ধরো, তাহলে অর্থ দাঁড়ায়- ‘ছেলেদের বীর্য বা মেয়েদের ডিম্বাণুসহ পানি এই দুই স্থানের মাঝখানে আড়াআড়িভাবে যে ফাঁকা জায়গা আছে, সেই জায়গায় অবস্থিত বিভিন্ন অঙ্গগুলো থেকে বের হয়ে আসে।’ বিজ্ঞানও বলে, ছেলেদের টেস্টিসের শুক্রাণু, সেমিনার ভেসিকলের তরল, প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের তরল ইত্যাদি সকল কিছু মিলেই বীর্য তৈরি হয়। যদি শুধু টেস্টিসের কথা বলা হতো, তাহলে তো কুরআন ভুল হয়ে যেত। কিন্তু সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ তা’আলা এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করেছেন, যেটা ছেলেদের ‘বীর্য’ কিংবা মেয়েদের ‘ডিম্বাণুসহ পানি’ যেসকল স্থান থেকে তৈরি এবং বের হয়, সব অঙ্গাণুকেই কভার করেছে। এটা কুরআনের একটি বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তা’আলা অল্প শব্দ ব্যবহার করেন, কিন্তু এতেই খুব অর্থবোধক একটি বাক্য তৈরি হয়।”
“আর যদি ‘তারায়িব’ শব্দের অর্থ আমি বুকের হাড় নেই, তখন কী হবে?” প্রশ্ন করলো আদনান।
ফাতিমা বললো, “তখনও কুরআনের আয়াত সঠিক থাকে। সেক্ষেত্রে শুধু স্থানটিকে লম্বভাবে ধরতে হবে। তাহলে সুল্বের অর্থ ‘মেরুদণ্ড’ এবং তারায়িবের অর্থ ‘বুকের হাড়’ ধরে অনুবাদ করলে সূরা তারিকের ৭ নং আয়াতের অর্থ হয়, ‘এটি বের হয়ে আসে, কোমরের মেরুদণ্ডের হাড় এবং বক্ষপিঞ্জরের মধ্যে অবস্থিত স্থান থেকে।’ অর্থাৎ, কোমরের হাড় তো দেহের পিছনে এবং বক্ষপিঞ্জর থাকে সামনে। সুতরাং, এই দুইটা স্থানকে যদি তুমি ল্যান্ডমার্ক হিসেবে ধরো, তাহলে অর্থ দাঁড়ায় – ‘ছেলেদের বীর্য বা মেয়েদের ডিম্বাণুসহ পানি এই দুই স্থানের মাঝখানে লম্বভাবে যে ফাঁকা জায়গা আছে, সেই জায়গায় অবস্থিত বিভিন্ন অঙ্গ থেকে বের হয়ে আসে। তোমাকে এখন একটি ছবি দেখাই। তাহলে পরিষ্কার বুঝতে পারবে।”
ফাতিমা বিছানা থেকে উঠে টেবিলে চার্জে রাখা মোবাইলটি নিয়ে আবার বিছানায় এসে বসলো। মোবাইল থেকে পূর্বের তৈরি একটি ছবি ওপেন করে আদনানের সামনে ধরে বললো, “এই দেখো। এখানে ‘সুল্ব’ এবং ‘তারায়িব’- এর মাঝের স্থান দেখানো হয়েছে।”
আদনান ছবিটির দিকে তাকালে ফাতিমা বললো, “এখানে যখন তুমি ‘তারায়িব’ শব্দের অর্থ ‘দুই পায়ের মধ্যবর্তী অঞ্চল’ ধরবে, তখন আয়াতের মূলভাব আসে, বীর্য এবং ডিম্বাণুসহ পানি এই জলপাই রঙয়ের অংশ থেকে আসে। আমি এই অর্থটিকেই অগ্রাধিকার দেই। আবার যখন তুমি ‘তারায়িব’ শব্দের অর্থ ‘সামনের পর্শুকা’ ধরবে, তখন আয়াতের মূলভাব আসে, বীর্য এবং ডিম্বাণুসহ পানি লম্বভাবে লালসহ জলপাই রঙ যে স্থান জুড়ে আছে, সেই স্থান থেকে। সুতরাং, কুরআনের বর্ণনা শতভাগ সত্য। এবং এটি মহান স্রষ্টা আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত এক মহা গ্রন্থ। আশাকরি সম্পূর্ণরূপে তোমাকে বোঝাতে পেরেছি।”
আদনান প্রশ্ন করলো, “আর যদি ৬ নং আয়াতের ‘মায়িন দাফিক’-এর অর্থ তোমার কথামতো ‘নারী পুরুষের মিশ্রিত পানি বা জাইগোট’ হয়, তাহলে অর্থ কেমন হবে? তখন তো আর জাইগোট বের হয়ে আসার কিছু নেই। এ ব্যাপারে তো কিছু বললে না।”
ফাতিমা বললো, “তাই তো! এটা তো বলিনি। শোনো, ৬ নং আয়াতের ‘মায়িন দাফিক্ব’-এর অর্থ ‘নারী পুরুষের মিশ্রিত পানি বা জাইগোট’ হয়, যেমনটি তাফসীরে বাহরুল মুহিত-এ বলা হয়েছে; তাহলে এই আয়াতগুলোর অর্থে একটু পরিবর্তন আসবে। আরবি ভাষায় ক্রিয়ার মাধ্যমেই সর্বনাম প্রকাশ পায়। যেমন ধরো, আমি বললাম ‘যাহাবা’। ‘যাহাবা’ একটি আরবি ক্রিয়াবাচক শব্দ। এর অর্থ ‘সে গেলো’। দেখো, আরবিতে ‘সে’ বুঝাতে ‘হুয়া’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। সেই অনুযায়ী ‘সে গেলো’ এই বাক্যের আরবি হওয়া উচিত ছিলো, ‘হুয়া যাহাবা’। কিন্তু সেটা না হয়ে শুধু ‘যাহাবা’ দিয়েই অর্থ প্রকাশ পেয়ে যায়। তুমি যদি ‘যাহাবা’ না বলে ‘যাহাবূ’ বলতে, তাহলে অর্থ হতো ‘তারা গেলো’। দেখেছো, কী সুন্দরভাবে ক্রিয়ার মাধ্যমেই সর্বনামের প্রকাশ পায়! ব্যাপারটি কি তুমি বুঝেছো?”
“হুম।” বলে মাথা নাড়লো আদনান।
তারপর ফাতিমা বললো, “এবার ৫ নং আয়াত খেয়াল করো। আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, ‘অতএব, মানুষের ভেবে দেখা উচিত, কী বস্তু থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।’ এখানে ‘মানুষ’ হলো বিশেষ্য। এবং ‘সৃষ্টি করা হয়েছে’ এটুকু ক্রিয়া। বারবার বিশেষ্য ব্যবহার না করার জন্য ব্যবহার করা হয় সর্বনাম। এখানে ‘সৃষ্টি করা হয়েছে’ শব্দগুলোর আগে ‘তাকে’ শব্দটি একটি সর্বনাম। যেটি এই লাইনে বিশেষ্য ‘মানুষ’-কে নির্দেশ করে। এর পরের আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে প্রবাহিত পানি থেকে।’ অর্থাৎ, জাইগোট থেকে। এই আয়াতে ‘তাকে’ বিশেষ্য দিয়ে আগের আয়াতের বিশেষ্য ‘মানুষ’কে বোঝানো হয়েছে। এবং ‘তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে’ এত কিছু বুঝাতে আরবিতে মাত্র একটি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। সেটি হলো ‘খুলিকা’। ‘খুলিকা’ একটি ক্রিয়া। ঐ যে একটু আগে বললাম যে, আরবি ভাষায় ক্রিয়ার মাধ্যমেই সর্বনাম প্রকাশ পায়। এখানেও তা-ই হয়েছে। এই ‘খুলিকা’ শব্দের মধ্যেই মানুষকে নির্দেশ করার সর্বনাম আছে। এবার পরের আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘এটি বের হয়ে আসে মেরুদণ্ড ও দুই পায়ের মধ্যবর্তী স্থান বা পাঁজরের মধ্যবর্তী স্থান থেকে।’ এই আয়াতে ‘এটি’ শব্দটি একটি সর্বনাম। এই ‘এটি’ সর্বনামটি আগের আয়াতের দুইটি বিশেষ্যকে নির্দেশ করতে পারে। একটি হলো ‘ইনসান বা মানুষ’ এবং অপরটি হলো, ‘সবেগে স্খলিত বা প্রবাহিত পানি’। এখানে ‘এটি’ সর্বনামটি দিয়ে যদি ‘সবেগে স্খলিত বা প্রবাহিত পানি’ বুঝায়, তাহলে এই আয়াতের অর্থ কী হবে – সেটা আগেই বলেছি। আর যদি ‘এটি’ সর্বনামটি দিয়ে ‘ইনসান বা মানুষ’-কে বুঝায় তাহলে এই আয়াতের অর্থ হবে, ‘যেটি বা মানুষটি বের হয়ে আসে এমন একটি স্থান থেকে, যেটি মেরুদণ্ড এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী স্থানের মাঝখানে অবস্থিত।’ সুবহানাল্লাহ। এবার বলো কোনো ভুল আছে কি না।”
“আমি তো তেমন আরবি গ্রামার বুঝি না। আমার এই দুর্বলতার সঠিক ব্যবহার করলে না তো?” প্রশ্ন করলো আদনান।
ফাতিমা বললো, “কেন? কী সুযোগ নিলাম?”
আদনান বললো, “শেষে তুমি যে অর্থ বললে, আমার মনে হয় এটা তুমি নিজে থেকেই বানালে। এরকম অনুবাদ আমি আগে কাউকে করতে শুনিনি। তুমি কি তোমার পক্ষে প্রমাণ হিসেবে একটি অনুবাদও দেখাতে পারবে?”
ফাতিমা হেসে দিয়ে বললো, “হ্যাঁ, পারবো। তুমি চাইলে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত এম.এ.এস আব্দুল হালিমের কুরআনের ট্রান্সলেশন দেখতে পারো। সেখানে এভাবেই অনুবাদ করা হয়েছে।[৯.১] এবং আমার জানামতে এটাই কুরআনের সবথেকে ভালো ইংরেজি অনুবাদ।”
আদনান খুব বিব্রত বোধ করলো। নিজের প্রশ্নের উত্তর ফাতিমা এভাবে হুট করে দিয়ে দেবে, এটা সে চিন্তাই করেনি। চুপ করে নিচে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়াতে লাগলো আদনান।
আদনানের নীরবতা দেখে ফাতিমা বললো, “দেখেছো, কুরআনের ভাষা কত প্রাঞ্জল! আল্লাহ তা’আলা মাত্র দুটি শব্দ ‘মায়ুন দাফিকুন’ বা ‘সবেগে স্খলিত বা প্রবাহিত পানি’ ব্যবহার করে সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় সকল ধরনের পানিকে এই আয়াতের আওতায় নিয়ে এসেছেন। এরপরেও কি এই প্রজ্ঞাময় কিতাবের উপর বিশ্বাস করবে না?”
আদনান কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর প্রশ্ন করলো, “তাহলে মুসলিমরা যে এই আয়াত থেকে বৈজ্ঞানিক নিদর্শন বের করে প্রচার করে! তারা বলে বীর্য নাকি মেরুদণ্ড আর বুকের পাঁজর থেকে তৈরি হয়! এটা কেন?”
ফাতিমা উত্তরে বললো, “যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড বায়োলজির নয় এবং আরবি ভাষার উপর জ্ঞান নেই, তারা এগুলো বলতেই পারে। তারা অবুঝ। এটা তাদের ভুল। মনে রাখবে যে, কুরআন আল্লাহ তা’আলার কথা। আর অনুবাদ হলো, মানুষের মস্তিষ্কনিঃসৃত চিন্তার ফল। অনুবাদে ত্রুটি হতে পারে, কিন্তু আল্লাহ তা’আলার কথায় কোনো ত্রুটি নেই। এই আয়াতটি বুঝতে গেলে একসাথে মেডিকেলবিদ্যা এবং আরবি ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার। এর যেকোনো একটি না থাকলে ভুল অনুবাদ করার সম্ভাবনাই প্রবল। কুরআনের শুধু অনুবাদ পড়েই ইসলামবিদ্বেষীরা অপপ্রচার চালায়। থার্ড ক্লাস চিন্তা ভাবনা আরকি! আর তুমিও সেই অপপ্রচারের শিকার।”
এতটুকু বলে ফাতিমা হাঁফ ছাড়লো। এতক্ষণে আদনানের মুখ কালো হয়ে প্যাঁচার মতো হয়ে গিয়েছে। বলার মতো কিছু তো আর নেই। চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে আদনান। আজ খুব আশা নিয়ে তর্ক শুরু করেছিলো যে, ফাতিমাকে কুরআনের ভুল দেখিয়ে তার বিশ্বাস ভেঙে দিয়ে আগের দিনের প্রতিশোধ নেবে। কিন্তু বাড়া ভাতে ছাই! শেষমেশ কিছুই হলো না।
“আদনান এই বিষয়ে তোমার আর কোনো প্রশ্ন আছে?” ফাতিমা জিজ্ঞাসা করলো।
আদনান এদিক ওদিক মাথা নাড়িয়ে বললো, “না!”
ফাতিমা বললো, “না, তোমার আরেকটি ক্লেইম ছিলো যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বীর্যের উৎপত্তিস্থল জানতেন না। তাই না?”
আদনান কোনো কথা বললো না। আদনানের নীরবতা দেখে ফাতিমা নিজ থেকেই বললো, “তোমার এই ক্লেইমটিও ভুল। কারণ, কিছু লোক নিজেদেরকে নারীসহচর্য থেকে দূরে রাখার জন্য নিজেদের অণ্ডকোষ বা টেস্টিস কেটে ফেলার জন্য রাসূলুল্লাহ’র ﷺ নিকট অনুমতি চাইলে, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদেরকে অনুমতি দেননি।[১০] কারণ, এভাবে নিজেকে সন্তান উৎপাদন ক্ষমতাহীন করে ফেলা জায়িয নেই। সুতরাং, এই হাদীস থেকে আমরা বুঝতে পারি রাসূলুল্লাহও ﷺ জানতেন যে, বীর্য কোথায় উৎপন্ন হয়।”
আদনানের মুখ দেখে মনে হলো, সে কিছু একটা বলবে। কিন্তু কিছু না বলেই আজ একাই মশারী টানিয়ে, লাইট বন্ধ করে খাটের এক কোনায় শুয়ে পড়লো। ফাতিমা হেসে দিয়ে বললো, “তর্ক করাই হয় মানার ইচ্ছা না থাকলে। আলোচনা শুরুর আগে সেটাই বলেছিলাম। এই অভিজ্ঞতা আমার নতুন নয়। আল্লাহ তা’আলা তোমাকে সত্যকে মেনে নেবার তৌফিক দিক।”
এটুকু বলে ফাতিমা পায়ের কাছে থাকা কোলবালিশটি দু’জনের মধ্যে রেখে ইস্তিগফার করতে থাকলো ফাতিমা। কে জানে? হয়তো এটাই শেষ নিদ্রা!
[বিঃদ্রঃ বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এরকম ঘটনা অবাস্তব নয়। কিন্তু ইসলামিক শারি’আহ অনুযায়ী একজনের কুফরি প্রকাশ পাওয়ার পরে তার সাথে সংসার করা জায়িয নয়। এগুলো প্রেক্ষাপট অনুযায়ী নিছক কিছু গল্প। আদর্শিকভাবে কিছু এখান থেকে গ্রহণ না করার অনুরোধ করা হলো। আমাদের চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু যেন শুধু গল্পের প্রধান তথ্যগুলো নিয়েই থাকে।
এখানে যে সমস্ত বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলো মদীনা ইউনিভার্সিটির একজন সম্মানিত শায়েখ আব্দুল্লাহ (ছদ্মনাম) হাফিযাহুল্লাহ এবং আবু সা’দ (ছদ্মনাম) ভাইয়ের সাথে আলোচনা করে ঐক্যমত্যে পৌছানোর পরে নেওয়া সিদ্ধান্তের উপর লেখা হয়েছে। তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী এখানে তাঁদের মূল নাম প্রকাশ করা হলো না। এই লেখায় যা কিছু কল্যাণ, সেটি শুধুমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে; এবং যা কিছু ত্রুটি, তা আমার ও শয়তানের পক্ষ থেকে।]
[১] Al-Mawrid; By Dr. Rohi Baalbaki; Dar As-Salam Publication; Page: 507
[২] Al-Mawrid; By Dr. Rohi Baalbaki; Dar As-Salam Publication; Page: 933
[৩] Arabic-English lexicon by Edward William Lane; Volume: 03; Page: 59-58
[৪] The Developing Human by Dr. Keith L. Moore (10th edition); page: 22
[৫] তাফসীরে বাহারুল মুহিত; খণ্ড: ১০; পৃষ্ঠা: ৪৪৮
[৬] Arabic-English lexicon by Edward William Lane; Volume: 03; Page: 59-58
[৭] Arabic-English lexicon by Edward William Lane; Volume: 04; Page: 437-435
[৮] Arabic-English lexicon by Edward William Lane; Volume: 01; Page: 301
Tafsir Ibn Kathir; Volume: 11; Page: 474-473 (Islamic Foundation BD)
[৯] Surah Mumtahina (60); Verse: 12
[৯.১] The QUR’AN; Translated by M.A.S Abdel Haleem; Oxford University Press; Chapter: 86, Verse: 8-5
[১০] সহীহ মুসলিম: কিতাবুন নিকাহ; হাদিস নং ৩২৯৫, ৩২৯৬, ৩২৯৭
মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।
নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।