ফ্ল্যাটের বারান্দায় বসে পেপার পড়ছিলাম। অফিস থেকে বাসায় আসার পরে বিকেলে পেপার পড়ি। প্রতিদিনই আম্মু এ সময়ে কফি বানিয়ে দেয়। কিন্তু আজ অনেকক্ষণ বসে থাকার পরেও কফির কোনো নামগন্ধ পাচ্ছি না। আম্মু মনে হয় আজ ভুলে গিয়েছে। কিছুক্ষণ পর ফাতিমা পিছন থেকে ডাক দিলো। আমি ফাতিমার দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওর হাতে একটি কাপ থেকে ধোঁয়া উড়ছে। কাপটি আমার হাতে দিয়ে বললো,

“এই যে তোমার কফি। আমি বানিয়েছি। খেয়ে বলো কেমন হয়েছে।”

IIRT Arabic Intensive

আমি চোখ বড় করে ফাতিমার দিকে থাকিয়ে থাকলাম। আমার চোখের সামনে হাত নাড়িয়ে ফাতিমা বললো, “এই যে মিস্টার! আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে বলিনি। কফি খেয়ে দেখতে বলেছি। চটপট খেয়ে বলো, কেমন হয়েছে।”

“ও হ্যাঁ!” এই বলে আমি কফির কাপে চুমুক দিলাম।

“কেমন হয়েছে?” ফাতিমার প্রশ্ন।

এই প্রথম ফাতিমা আমার জন্য কফি বানিয়ে এনেছে। এজন্যই মনে হয় কেমন হয়েছে সেটা জানার আগ্রহ একটু বেশি। আমি মুচকি হেসে উত্তর দিলাম, “আলহামদুলিল্লাহ্‌। ভালো হয়েছে।”
ফাতিমা খুশি হয়ে বললো, “একটু ওয়েট করো। আমি আরেকটি জিনিস বানিয়েছি। সেটা নিয়ে আসি।”

যদিও কফি মায়ের বানানো কফির মতো ছিলো না। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ কখনো খাবারের দোষ ধরতেন না।[১] এজন্য আমিও কিছু বললাম না, যাতে পরবর্তীতে আরও উৎসাহ পায়। কিছুক্ষণ পরে ফাতিমা ফিরে এসে আমার পাশের চেয়ারে বসলো। প্লেটে করে বার্গার নিয়ে এসেছে। এখনকার মেয়েরা আর কিছু রাঁধতে পারুক আর না-ই পারুক, ফাস্ট ফুড ঠিকই বানাতে পারে। হেসে দিয়ে বললাম, “এটাও তুমি বানিয়েছো?”

ফাতিমা উত্তর দিলো, “হুম। দাও কাপটি আমার হাতে দিয়ে বার্গার খাও।”

আমি এক হাতে কাপটি ফাতিমার হাতে দিয়ে অন্য হাতে বার্গারটি নিলাম। তখন ফাতিমা বললো, “আচ্ছা শোনো, সিহিন্তা ফোন দিয়েছিলো। রাতে খাবারের দাওয়াত দিয়েছে। আমাদের যেতে হবে।”
আমি প্রশ্ন করলাম, “কোন সিহিন্তা?”

“ওই যে ৩ নং সেক্টরে থাকে। আমার বান্ধবী। কেন? সেদিন পরিচয় করিয়ে দিলাম না?” ফাতিমা উত্তর দিলো।

আমি বললাম, “ও হ্যাঁ। আচ্ছা ঠিকাছে। ইশার সালাতের পরে যাবো, ইনশা-আল্লাহ।”

ইশার সালাতের পরে আমি আর ফাতিমা সিহিন্তার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে দই আর মিষ্টি নিলাম। ফাতিমা কিছু ফল নিতে বললো। তাই দই এবং মিষ্টির সাথে আপেল আর কমলা নিলাম। সিহিন্তার বাসায় গিয়ে কলিং বেল দিলাম। কিছুক্ষণ পরে সাইফুল দরজা খুললো। সাইফুল সিহিন্তার হাসব্যান্ড। সিহিন্তার নাম ভুলে গেলেও সাইফুলের নাম আমার মনে আছে। কারণ, ছেলেটির ব্যবহার অনেক ভালো। কাউকে দেখলেই হেসে একটি সালাম দেয়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। আমাদের আগেই সাইফুল হাসিমুখে সালাম দিলো। আমরা সালামের উত্তর দিয়ে বিসমিল্লাহ বলে ভিতরে ঢুকলাম। সাইফুল আমাদের ড্রয়িংরুমে বসতে দিয়ে সিহিন্তাকে ডেকে বললো, “সিহিন্তা, আদনান আর ফাতিমা চলে এসেছে। এদিকে আসো।”

সিহিন্তা রুম থেকে এসে সালাম দিয়ে ফাতিমার পাশে বসলো। আমাদের আসাতে ওরা দুজন খুব খুশি হয়েছে। আসলে অতিথিদের আগমনে যারা মন থেকে খুশি হয়, তারা আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে নিয়ামত প্রাপ্ত। আল্লাহ তা’আলা আমাকেও এই অনুগ্রহ দান করুন।

রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে কথা চলতে লাগলো আমাদের মধ্যে। এক পর্যায়ে সিহিন্তা বললো, “আচ্ছা ফাতিমা শোন, একটি বিষয়ে তোর সাথে আমার কিছু আলোচনা ছিলো।”

“হুম। বল, কী বিষয়ে।” ফাতিমা বললো।

সিহিন্তার উত্তর দেবার আগে সাইফুল বললো, “আচ্ছা সিহিন্তা, তাহলে তোমরা গল্প করো। আমার অফিসের কিছু কাজ আছে আমি সেগুলো শেষ করি।”

সিহিন্তা বললো, “ আচ্ছা, ঠিকাছে।”

“হ্যাঁ, বল। কী যেন বলতে চাইলি?” ফাতিমা প্রশ্ন করলো।

সিহিন্তা বললো, “আমার নিচের ফ্ল্যাটে একটি মেয়ে থাকে। ওর নাম আলিশা। ও রোমান ক্যাথলিক। মাঝে মাঝে ওর সাথে আমার ইসলাম এবং ক্রিশ্চিয়ানিটি নিয়ে কথাবার্তা হয়। গতকাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কথা বলছিলাম। তখন ও আমাকে একটি হাদীসের ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন করে। কিন্তু আমি কোনো উত্তর দিতে পারিনি। সেই হাদীসের ব্যাপারেই কিছু জানার ছিলো।”

ফাতিমা সিহিন্তার দিকে ঘুরে বসে বললো, “হুম, বল। কোন হাদীসের ব্যাপারে কী কী প্রশ্ন করেছে?”

সিহিন্তা বললো, “যদিও কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগে। তবুও জানার জিনিস তো জানতেই হবে। নাহলে কেউ কেউ অজ্ঞতার সুযোগ নিতে পারে। সহিহ বুখারিতে একটি হাদীসে এসেছে যে, কিছু লোক ইসলাম গ্রহণ করতে মদিনায় এসেছিলো। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাকে মদিনায় থাকতে বলেছিলেন। কিন্তু তারা মদিনার পরিবেশে প্রচুর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তারা রাসূলুল্লাহ’র ﷺ কাছে এসে তাদের অসুস্থতার কথা জানায়। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের উটের দুধ এবং প্রস্রাব পান করতে বলেন।[২] গতকাল আমার আর আলিশার মাঝে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আলোচনার সময় আলিশা বললো, ‘তোমাদের ধর্ম যদি পরিচ্ছন্নতা এবং পবিত্রতা সাপোর্ট করতোই, তাহলে কি এভাবে উটের প্রস্রাব খেতে বলতো? যেটাকে সবাই নোংরা জিনিস মনে করে, সেটা মোহাম্মদ কাউকে কীভাবে খেতে বললো?’ যেহেতু সহিহ বুখারির হাদীস, এজন্য এর বিশুদ্ধতা নিয়ে তো কোনো সন্দেহ নেই। তাই আমি কিছু বলতে পারলাম না। এব্যাপারে তোর কিছু জানাশোনা আছে কি?”

ফাতিমা হেসে দিয়ে বললো, “আমি এর আগেও এই ব্যাপারে অনেকের সাথে কথা বলেছি। শুধুমাত্র বুখারির একটি হাদীস পড়ে এ ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যাবে না। আমাদের আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করতে হবে। আচ্ছা, তোর ইসলামি ফিকাহ বা আইনশাস্ত্র সম্পর্কে কেমন ধারণা আছে?”

সিহিন্তা বললো, “মূলনীতিগুলো একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে যতটুকু জানা দরকার, ততটুকু জানি।”

ফাতিমা বললো, “ওকে। এতটুকু জানলেই হবে। এখন তুই যে হাদীসটি বললি, সেটার মূল বিষয় হলো, উকল এবং উরাইনা গোত্রের কিছু লোক মদিনায় রাসূলুল্লাহ’র ﷺ কাছে বাহ্যিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করে। কিন্তু মদিনার আবহাওয়া তাদের সহ্য হয়নি। তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো। পেটের বিভিন্ন সমস্যা এবং পেট ফোলা নিয়ে তারা রাসূলুল্লাহ’র ﷺ কাছে এসেছিলো। এখানে একটি পয়েন্ট মনে রাখ যে, তারা অসুস্থ ছিলো। তারপর তারা তাদের অসুস্থতার কথা রাসূলুল্লাহ’র ﷺ কাছে জানায়। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের একটি উটের খামারে পাঠিয়ে দেন। সেখান থেকে কয়েকদিন উটের দুধ এবং প্রস্রাব খেতে বলেন। এখানে উটের দুধ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, উটের দুধ পরিষ্কার পানীয়। কিন্তু এখানে সমস্যা হলো, উটের প্রস্রাব নিয়ে। কারণ, এটি নোংরা জিনিস। রাসূলুল্লাহ ﷺ কেন এটি খেতে বললেন? এটাই তো প্রশ্ন। তাই না?”

সিহিন্তা বললো, “হ্যাঁ। আরও আছে। আগে এটাই বল।”

ফাতিমা বললো, “আচ্ছা, ঠিকাছে। প্রথমত আমাদের দেখতে হবে, ইসলামি ফিকাহ বা আইনশাস্ত্র অনুযায়ী প্রস্রাব কি পবিত্র নাকি অপবিত্র। পবিত্র হলে হালাল হবে এবং অপবিত্র হলে হারাম হবে। হানাফি এবং শাফেয়ী ফিকাহ অনুযায়ী, উটের প্রস্রাব অপবিত্র এবং হারাম। এটা শুধুমাত্র ওই সময়ে হালাল হবে, যখন এটি কোনো রোগের মেডিসিন হিসেবে ব্যবহার করা হবে এবং যখন সেই রোগের অন্য কোনো হালাল মেডিসিন থাকবে না।[৩] বিখ্যাত হানাফি ফকিহ আল্লামা বাদরুদ্দিন আল আইনি (রহঃ) তাঁর বিখ্যাত সহিহ বুখারির ব্যাখ্যাগ্রন্থ উমদাতুল কারী গ্রন্থ্যে এই হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন যে, হারাম জিনিস দিয়ে চিকিৎসা তখনই হালাল হবে, যখন তার মধ্যে আরোগ্য আছে – এটা জানা যাবে এবং অন্য ঔষধ থাকবে না। এটি সেই অবস্থার মতো, যখন খাবারের এবং পানির অভাবে মৃত্যুর সময় যথাক্রমে হারাম মাংস হালাল এবং মদ পান করা হালাল হয়ে যায়।[৪] হাফিয ইবনে হাজার আসকালানি (রহঃ) তাঁর বিখ্যাত সহিহ বুখারির ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারি গ্রন্থ্যে এই হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন যে, এরকম ঔষধের ব্যবহার শুধুমাত্র তখনই হালাল হবে, যখন অন্য কোনো চিকিৎসা থাকবে না।[৫] সুতরাং, উটের প্রস্রাব হারাম এবং এটি তখনই কোনো ব্যক্তির জন্য হালাল হবে যখন সেই ব্যক্তির রোগের জন্য কোনো হালাল মেডিসিন পাওয়া যাবে না। বুঝেছিস?”

ফাতিমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো সিহিন্তা। ফাতিমা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করায় সিহিন্তা বললো, “হুম, বুঝলাম। তাহলে তুই বলতে চাচ্ছিস যে, এই হাদীসে উরাইনা এবং উকল গোত্রের ব্যক্তিদের যে রোগ হয়েছিলো, তার মেডিসিন হিসেবে ওই সময়ে উটের প্রস্রাব এবং দুধ ছাড়া অন্য কিছু ছিলো না? আর এ কারণেই শুধুমাত্র রোগের ট্রিটমেন্টের জন্য এগুলো খেতে বলা হয়েছে?”

ফাতিমা বললো, “হ্যাঁ, একদম তা-ই। কারণ এই একটিমাত্র ঘটনায় উরাইনা এবং উকল গোত্রের লোকদের ছাড়া অন্য কোনো হাদীসে বা জীবনে কখনো রাসূলুল্লাহ ﷺ কাউকে উটের প্রস্রাব খেতে বলেননি। আরেকটি ব্যাপার হলো, ওই সময়ের মেডিকেল সাইন্স এখনকার মতো উন্নত ছিলনা। তখনকার ব্যবহৃত প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েই তাঁরা চিকিৎসা করতেন। মুহাম্মাদ ﷺ আল্লাহ্‌র রাসূল। তাঁর জানা ছিলো যে, উরাইনা এবং উকল গোত্রের লোকদের যে রোগ হয়েছিলো, সেটা উটের দুধ এবং প্রস্রাব ছাড়া ঠিক হবে না এবং মেডিসিন হিসেবে এগুলো ছাড়া আর কিছুই তাদের রোগমুক্তির জন্য উপযুক্ত ছিলো না। এজন্যই তিনি সেগুলো খেতে বলেছিলেন। বুঝলি?”

“আচ্ছা এটা বুঝলাম। কিন্তু কেমন হয়ে গেলো না? এর টেস্ট কেমন লাগবে? আর খাবেই বা কীভাবে?” সিহিন্তা প্রশ্ন করলো।

ফাতিমা উত্তর দিলো, “যেহেতু সাথে দুধ মিশিয়ে খেতে বলা হয়েছে, সেহেতু টেস্ট খারাপ লাগার কথা না। ১৪০০ বছর আগের কথা তো বাদই দিলাম। বর্তমানেও তো গর্ভবতী ঘোটকীর প্রস্রাব থেকে ইস্ট্রোজেন পৃথক করা হয়। এবং সেটা ক্যান্সার, জন্মনিয়ন্ত্রণসহ আরও বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এবং সেটা ট্যাবলেট হিসেবেই আমরা মুখ দিয়েই খাই।[৬] বাজারে যেটা প্রিমারিন নামে পাওয়া যায়।[৭] আবার গর্ভবতী মহিলাদের প্রস্রাব থেকে আলাদা করা হয় হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রোপিন।[৮] এটি ইনফার্টিলিটিতে ব্যবহার করা হয়। এখানের এই ঔষধগুলো খেতে তো কারো সমস্যা হয় না। রোগমুক্তির বা প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য কতকিছুই তো খাওয়া লাগে!”

ফাতিমাকে থামিয়ে সিহিন্তা বললো, “কিন্তু এগুলো তো ভালোভাবে ফিলট্রেশন করা। কিন্তু ওগুলো…।”

সিহিন্তাকে কথা শেষ করতে না দিয়ে ফাতিমা বললো, “আরে ওই সময় ফিলট্রেশন কীভাবে করবে? তুই যদি মধ্যযুগে জেনারেল অ্যানেস্থেশিয়া দিয়ে অপারেশন করতে চাস, তাহলে তো সেটা বোকামি ছাড়া কিছু না।”

সিহিন্তা বললো, “সেটাও তো ঠিক!”

ফাতিমা সিহিন্তাকে জিজ্ঞাসা করলো, “বেয়ার গ্রিলস নামের এক ব্যক্তি আছেন। তুই কি তাঁকে চিনিস?”

“হ্যাঁ, চিনি। আগে ডিসকভারি চ্যানেলে উনার ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’ অনুষ্ঠানটির ফ্যান ছিলাম।” সিহিন্তা উত্তর দিলো।

ফাতিমা বললো, “তাহলে তো তুই দেখেছিস মনে হয়। একবার একটি পর্বে উনি তো নিজের প্রস্রাব নিজেই খেয়েছেন।[৯] তারপরে উটের পেট থেকে অর্ধ পরিপাককৃত খাবার থেকে পানি চুপসিয়ে খেয়েছেন।[১০] একদিন তো কিছু মানুষকে প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার ট্রেনিং দিতে গিয়ে সবাইকে প্রস্রাব করে তাতে কাদামাটি মিশিয়ে, সেটা তাদেরই খাইয়েছেন।[১১] এগুলো কখনোই সাধারণ অবস্থার খাবার নয়। কিন্তু যখন কেউ বিপদে পড়ে, তখন জীবন বাঁচাতে যেকোনো কিছুই খেতে হয়। বুঝাতে পারলাম?”

কী বিরক্তিকর বিষয়ে ওদের মাঝে আলোচনা চলছে। আমি যে ওদের মাঝে আছি, সেটা মনে হয় ওরা ভুলেই গিয়েছে। বিরক্তি লাগলেও আমি খুবই মনোযোগ দিয়ে আলোচনা শুনছিলাম। কিছুক্ষণ ঘরে পিনপতন নীরবতা চলছিলো। কিছুক্ষণ পরে সিহিন্তা আবার প্রশ্ন করলো, “কিন্তু WHO এর মতে, কাঁচা দুধ এবং প্রস্রাব খেলে অসুস্থ হবার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে তুই কী বলবি?”

ফাতিমা বললো, “সিহিন্তা, তুই সেই ১৪০০ বছর আগের অবস্থার সাথে এখনের অবস্থা মেলালে হবে? রাসূলুল্লাহ ﷺ এই ট্রিটমেন্ট সর্বকালের জন্য দেননি। এটা তখনেরই ট্রিটমেন্ট, যখন সেই রোগের কোনো মেডিসিন ছিলো না। কিন্তু এখন মোটামুটি সকল রোগেরই মেডিসিন পাওয়া যায়। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেগুলোতে হালাল বস্তুই থাকে। সুতরাং, এখন যদি কেউ কোনো রোগের জন্য মেডিসিন থাকা সত্ত্বেও উটের প্রস্রাব খায়, তখন সেটা তার জন্য হালাল হবে না। আর সবথেকে বড় কথা হলো, হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী উটের দুধ এবং প্রস্রাব কিছুদিন খাবার পরে তাদের রোগ ভালো হয়ে যায়। এগুলোতে উপকারিতা না থাকলে তো তারা সুস্থ হতো না। তাই না? অবশ্য এখান থেকে উপকার পাবার কারণ এটাও হতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ খেতে বলেছিলেন, তাই আল্লাহ তা’আলা এতে আরোগ্য দিয়েছেন। এছাড়াও কিছু সাইন্টিফিক স্টাডি আছে উটের দুধ এবং প্রস্রাবের ব্যাপারে। দেখা গেছে যে, এই কম্পোনেন্ট অ্যান্টি-ক্যান্সার, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিফাংগাল, লিভার ডিজিজ ইত্যাদির ক্ষেত্রে উপকারী।[১২]

“হুম। সেটা অবশ্য ঠিকই বলেছিস।” সিহিন্তা উত্তর দিলো।

সামনে একটি ছোট টেবিলে পানি রাখা ছিলো। সেখান থেকে ঢকঢক করে কয়েক ঢোক পানি খেয়ে নিলো ফাতিমা। তারপরে বললো, “শুধু যে তারা সুস্থ হয়েছে তা কিন্তু নয়। সুস্থতার পাশাপাশি তারা মোটাও হয়ে গিয়েছিলো। তখন উরাইনা এবং উকল গোত্রের লোকেরা চুরি করে উটগুলো নিয়ে যাবার পরিকল্পনা করলো। এবং সত্যিই একসময় সেই উটগুলোর দায়িত্বে থাকা রাখালকে হত্যা করে তারা উটগুলো নিয়ে পালিয়ে গেলো। সিহিন্তা, এখানে একটি জিনিস গভীরভাবে চিন্তা করে দ্যাখ যে, উটের দুধ আর প্রস্রাব খেয়ে তারা এমন উপকার পেয়েছে যে, তারা সেই উটের মালিক হবার জন্য সেখানের দায়িত্বে থাকা রাখালকে হত্যা করে উটগুলো নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। উপকার না পেলে কি তারা এগুলো করতো? তারা ভেবেছিলো, উটে মনে হয় যাদু আছে। এজন্য এত জঘন্য কাজ করতেও তারা দ্বিধা বোধ করেনি।”

সিহিন্তা বললো, “হুম। দ্যাট মেইকস সেন্স! আচ্ছা ফাতিমা, রাখালকে হত্যা করার কারণে নাকি রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের খুব কঠিন শাস্তি দিয়েছিলেন? তাদের হাত-পা কেটে, চোখে নাকি গরম শলাকা ঢুকিয়ে এবং পানি চাইতেও তাদের পানি না দিয়ে মরুভূমিতে ফেলে রাখা হয়েছিলো। আলিশার একটি প্রশ্ন এটাও ছিলো যে, কেন তাদেরকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। চোখে কেন গরম শলাকা ঢুকিয়ে দেওয়া হলো?”

ফাতিমা বললো, “এটা খুবই যৌক্তিক প্রশ্ন। একটা বিষয় মনে রাখবি যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ তখন রাষ্ট্রনেতা ছিলেন। রাষ্ট্রের যেকোনো ধরনের অরাজকতা বন্ধে তাঁকেই পদক্ষেপ নিতে হতো। উরাইনা এবং উকল গোত্রের লোকদের দুইটি অপরাধ ছিলো। একটি হলো, সেখানের দায়িত্বে থাকা রাখালকে হত্যা করা। এবং অপরটি হলো, উট চুরি করে পালিয়ে যাওয়া। তারা বাহ্যিকভাবে ঈমান এনেছিলো, কিন্তু মূলত তারা ছিল মুনাফিক। তাই তারা ছদ্মবেশে মুসলিমদের প্রাণ এবং গণিমতের সম্পদের উপর আঘাত হানে। আল্লাহ তা’আলা কু’রআনে বলেছেন, ‘কেউ যদি একটি নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে, কোনো হত্যাকান্ড কিংবা পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টির জন্য বিচারে শাস্তির বিধান ছাড়া, তাহলে সে যেন সম্পূর্ণ মানবজাতিকে হত্যা করলো।’ এই অবস্থায় রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিরীহ মানুষকে হত্যা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের উপর হামলা করার অপরাধের শাস্তি দেওয়া তাঁর দায়িত্ব ছিলো। রাসূলুল্লাহ ﷺ যদি দয়া প্রদর্শন করে তাদের শাস্তি না দিতেন, তাহলে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে এটি তাঁর চরম ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচিত হতো। কারণ, মুনাফিকরা এবং কাফির-মুশরিকরা যখন দেখতো যে, এভাবে উট বা মুসলিমদের সম্পদ চুরি করলে বা হত্যা করলে তাদের নেতা কোনো শাস্তি দেন না, তখন কাফের-মুশরিক এবং মুনাফিকরা আরও বেশি বেশি এই কাজ করা শুরু করতো। যার ফলাফল খুব একটা ভালো হতো না। আর এরকম অপরাধ মদিনায় এরাই প্রথম করেছিলো। এজন্য অঙ্কুরেই যদি এই অপরাধকে কঠোর শাস্তির মাধ্যমে বন্ধ করা না হতো, তাহলে মদিনায় মুসলিমদের পুনর্বাসন অসম্ভব হয়ে পড়তো। এজন্যই এরকম শাস্তি দেওয়া হয়েছিলো, বুঝলি?”

সিহিন্তা উত্তর দিলো, “হুম। সেটা নাহয় বুঝলাম। কিন্তু…”

সিহিন্তাকে থামিয়ে ফাতিমা বললো, “আবার কিন্তু কী? তাদের শাস্তি তো কুরআনের আয়াত অনুযায়ী দেওয়া হয়েছিলো। কারণ, আল্লাহ তা’আলার জমিনে শুধু আল্লাহ্‌র তা’আলারই আইন চলবে। এটাই যুক্তিসংগত। তারা চুরি-ডাকাতি এবং হত্যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রাণ এবং সম্পদের নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। এবং জমিনে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। তাই, চুরি এবং ডাকাতির অপরাধে তাদের হাত এবং পা কেটে দেওয়া হয়েছিলো। এবং হত্যার অপরাধে তাদেরকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো।[১৩] আল্লাহ তা’আলার আদেশ বাস্তবায়নে রাসূলুল্লাহ ﷺ কখনো নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করেননি। নিজের মেয়ের ব্যাপারেও রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন যে, ‘আমার মেয়ে ফাতিমাও যদি চুরি করতো, আমি তার হাত কেটে দিতাম।’[১৪] আর বাংলাদেশেও ৩০২ ধারা অনুযায়ী, হত্যার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।[১৫] অপরাধে উৎসাহদাতারা ছাড়া অন্য কেউ এ ব্যাপারে প্রশ্ন তোলে না! আর আমার মনে হয়, প্রশ্ন তোলাও উচিত নয়। কারণ বাংলাদেশে চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ ইত্যাদির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়াতে এই অপরাধগুলোর পরিমাণ দিনদিন বেড়েই চলেছে। তাই অপরাধ দমনের লক্ষ্যে শাস্তিতে কঠোরতা আরোপ করা দোষের কিছু না। বরং সেটা যুক্তিসঙ্গত ব্যাপার।”

সিহিন্তা বললো, “ফাতিমা, আমার প্রশ্ন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া নিয়ে নয়। ওই গোত্রের লোকগুলোকে তাদের হত্যাকাণ্ডের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো – এটা ঠিক আছে। কিন্তু চোখে গরম শলাকা ঢুকিয়ে এবং পানি চাওয়ার পরেও পানি না দেওয়ার ব্যাপারটায় একটু বেশি কঠোরতা অবলম্বন করা হয়ে গেলো না?”

আমিও মনে মনে সিহিন্তার কথায় সায় দিচ্ছি। শাস্তি একটু কঠিনই মনে হচ্ছিলো। ফাতিমা তখন কী যেন ভাবছিলো। এদিকে সাইফুল ঘর থেকে বেরিয়ে এসে সামনের সোফায় বসলো। বললো, “তোমাদের কথা এখনো শেষ হয়নি? সিহিন্তা, আমার কিন্তু ক্ষুধা লেগেছে।”

সিহিন্তা বললো, “হ্যাঁ, আমাদের প্রায় হয়ে গিয়েছে। আর একটু অপেক্ষা কর।”

অনেকক্ষণ চিন্তা করার পরে ফাতিমা বললো, “হ্যাঁ, মনে পড়েছে। সেই লোকগুলোর সাথে অতিরিক্ত কিছুই করা হয়নি। উরাইনা এবং উকল গোত্রের লোকেরা সেখানে উটের দায়িত্বে থাকা রাখালকে খুব নির্মমভাবে হত্যা করেছিলো। ইবনে জারুদ (রহঃ) তাঁর লিখিত আল-মুনতাকা গ্রন্থে তাদের চোখে গরম লোহা ঢুকিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে আনাস (রাঃ) হতে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। হাদীসটিতে বলা হয়েছে যে, ওই গোত্রের লোকগুলো উটের দায়িত্বে থাকা রাখালের চোখেও কাঁটা ঢুকিয়ে দিয়েছিলো।[১৬] এছাড়াও যুরকানি নামক একটি গ্রন্থ্যে আছে যে, উরাইনা এবং উকল গোত্রের লোকজন উটের দায়িত্বে থাকা রাখালের চোখে এবং জিহ্বায় কাঁটা ঢুকিয়ে দেয়। তার হাত পা কেটে দেয়। তারপর তাদের জবাই করে।[১৭] এজন্যই কুরআনে বর্ণিত হদ এবং কিসাসের মূলনীতি অনুযায়ী তাদের চোখেও গরম লোহা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তাদের হাত-পা কেটে দেওয়া হয়। এবং তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।[১৮] এই ঘটনার পরে আর কখনো এভাবে কাউকে হত্যার আদেশ রাসূলুল্লাহ ﷺ দেননি। বরং এভাবে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন।[১৯] সুতরাং, তাদের নিজস্ব কর্মের কারণেই তাদের উপর এরকম কঠোর শাস্তি আরোপ করা হয়েছিলো। তাই আশা করি এই বিষয়ে এখন তোর আর কোনো প্রশ্ন নেই। কী? তাই তো?”

সিহিন্তা বললো, “তাহলে মূল কারণ এটাই যে, উরাইনা এবং উকল গোত্রের লোকেরা সেখানে দায়িত্বে থাকা রাখালের চোখে এবং জিহ্বায় কাঁটা ঢুকিয়ে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করেছিলো। এজন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের কর্মফলের শাস্তি স্বরূপ তাদের চোখেও গরম লোহা ঢুকিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। চুরি এবং ডাকাতি করার জন্য হাত-পা কেটে দেওয়া হয়েছে। এবং হত্যা করার জন্য তাদেরও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাই তো?”

ফাতিমা বললো, “হ্যাঁ, সেটাই। এবার বল, এখানে অযৌক্তিক শাস্তি কি তাদের দেওয়া হয়েছিলো?”

সিহিন্তা বললো, “না, তাহলে ঠিকাছে। এবার আমি আলিশাকে ব্যাপারটি বুঝিয়ে বলতে পারবো, ইনশা-আল্লাহ। ফাতিমা এজন্যই তোকে আমার পছন্দ হয়। কারণ এসব ব্যাপারে যৌক্তিক উত্তরগুলো আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলে একমাত্র তোর থেকেই পাওয়া যায়।”

সিহিন্তার কথা শুনে ফাতিমা একটু ইতস্তত বোধ করলো। কারণটি আমি বুঝেছি। ফাতিমা সামনাসামনি কারো প্রশংসা শুনতে পছন্দ করেনা। এমনকি নিজেরও না। তাই আস্তে করে আস্তাগফিরুল্লাহ পড়লো। অনেকক্ষণ ধরে ওদের আলোচনা শুনছিলাম। এখন আমারও ক্ষুধা লেগে গিয়েছে। রাত তো কম হলো না! নিজের কথা তো বলা যায় না। তাই ‘ওই পাতে দৈ দেওয়া’র নীতি অবলম্বন করলাম।

সিহিন্তাকে বললাম, “তুমি এবার খাবার রেডি করতে পারো। সাইফুলের ক্ষুধা লেগেছে। সেই কখন থেকে খাবার চাচ্ছে। দেখো, কীভাবে পেটে হাত দিয়ে বসে আছে। হা হা। আর ফাতিমা আসলে তেমন কিছু জানে না। সবকিছুই ও আমার কাছ থেকে শিখেছে। বুঝলা?”

এ কথা বলাতেই ফাতিমা আমার দিকে ফিরে চোখ দুটি বড় বড় করে তাকালো। আমি মজা করে বললাম, “হুর আল-আঈন।”

সিহিন্তা আর সাইফুল শুনতে পেয়ে হা হা করে হেসে দিলো। আমিও ওদের সাথে যোগ দিলাম। এরপরে, ফাতিমার দিকে তাকালাম। দেখি ও বাঁকা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হয় রাগ করেছে। অনেকে বলে, রাগলে নাকি মেয়েদের সুন্দর লাগে। এখানে সবার সামনে সেটাও বলতে পারছি না। রাগ ভাঙাতে কী করা যায়? নাহ! আপাতত হাসি থামাই। আম্মুর কাছে শুনেছি, বেশি হাসলে নাকি পরবর্তীতে কাঁদতে হয়।


[এখানেও গল্পের চরিত্রগুলোর মধ্যে ফ্রি-মিক্সিং পাওয়া যায়। ইসলাম শরী’য়াহ এগুলোকে সাপোর্ট করে না। লেখাটিকে নিছক একটি গল্প হিসেবে পড়ার অনুরোধ। সমস্ত জ্ঞান তো আল্লাহ তা’আলার কাছেই। লেখাটিতে যা কিছু ভুল, তা আমার ও শয়তানের পক্ষ হতে এবং যা কিছু কল্যাণ, তার সবটুকুই আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে।]

তথ্যসূত্র ও গ্রন্থাবলি

[১] রিয়াদুস স্বলেহিন; পানাহারের আদব-কায়দা; হাদীস নং- ৭৪০ (ihadis.com)/ সহীহুল বুখারি ৪৫০৯,৩৫৬৩ (ihadis.com)/ সহিহ মুসলিম ২০৬৪ (ihadis.com)

[২] সুনানে আন-নাসায়ী; পবিত্রতা অধ্যায়; হাদীস ৩০৫ (ihadis.com)/ সহিহ বুখারি; যাকাত অধ্যায়; হাদীস: ১৫০১ (ihadis.com)

[৩] কিতাব আল-মাবসুত (ইমাম আবু বকর আল-সারাখশি); খণ্ড: ০১; অধ্যায়: ওজু এবং গোসল; পৃষ্ঠা: ৬০-৬১

দলিল বিশ্লেষণ জানতে: http://seekershub.org/ans-blog/2010/12/27/is-it-permissible-to-use-medicine-with-haram-ingredients/

[৪] উমদাতুল ক্বারি; খণ্ড: ০২; পৃষ্ঠা: ৬৪৯

[৫] ফাতহুল বারী; খণ্ড: ০১; পৃষ্ঠা: ৪৪১

[৬]https://pubchem.ncbi.nlm.nih.gov/compound/23676225#section=Pharmacology-and-Biochemistry

[৭] https://reference.medscape.com/drug/premarin-estrogens-conjugated-342771

[৮] https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/2393969

[৯] https://www.youtube.com/watch?v=4U_xmfSwYSw

[১০] https://www.youtube.com/watch?v=FpXJkwwxETI&t=209s

[১১] https://www.youtube.com/watch?v=D_4pSg5XOAY

[১২] https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1658361216000238#bib7

http://www.sciencedomain.org/abstract/16550

https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/22922085

http://online.liebertpub.com/doi/abs/10.1089/acm.2010.0473

[১৩] তাফসীর ইবনে কাছীর; খণ্ড: ০৩; সূরা মায়িদা (০৫); আয়াত: ৩৩ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

[১৪] সহিহ বুখারি; অধ্যায়: আম্বিয়া কিরাম (‘আঃ); হাদীস নং- ৩৪৭৫ (ihadis.com)

[১৫] http://www.clcbd.org/lawSection/473.html

[১৬] আল- মুনতাক্বা (আলি ইবনে আল-জারুদ আন-নিসাবুরি); খণ্ড: ০১; পৃষ্ঠা: ২১৬; হাদীস: ৮৪৭

[১৭] সহিহ বুখারি (বাংলা অর্থ এবং ব্যাখ্যা: মাওলানা আজিজুল হক); ১৩ম সংস্করণ; হামিদিয়া লাইব্রেরী লিমিটেড; খণ্ড: ০৩; পৃষ্ঠা: ২২৩

[১৮] কিসাসের আয়াতসমূহ: সূরা মায়িদা (০৫), আয়াত: ৪৫ এবং সূরা বাকারা (০২), আয়াত: ১৭৮

[১৯] তাফসির ইবনে কাছির (ইসলামিক ফাউন্ডেশন); খণ্ড: ০৩; পৃষ্ঠা: ৫২১

মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।

নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।

Loading Facebook Comments ...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Loading Disqus Comments ...
IIRT Arabic Intensive