এক“ভাই, এরকম দাড়ি নিয়ে ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন! একটু ছেঁটে নিলে ভালো হতো না? আচ্ছা ভাই, এতটা গোঁড়া হওয়ার কি কোন দরকার আছে? ইসলামে তো জরুরী প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া আছে। আর চাকরী তো আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজনগুলোর একটি। ইন্টারভিউ বোর্ডে মহিলা থাকলে না হয় একটু হ্যান্ডশেইক করলেন। হাত মিলালেই কি ইমান চলে যাবে নাকি? সি.ভি.তে একটু বেশী করে লিখলে কিংবা ইন্টারভিউয়ের সময় একটু বাড়িয়ে বললে কি এমন সমস্যা? তুমি তো আর মিথ্যা বলছো না, গুনাহ হবে কেনো?”–এই কথাগুলো আমি ঘুরে ফিরে বিভিন্ন সময়ে অনেকবার শুনেছি। যারা আমার এই লেখাটি পড়ছেন তারাও হয়তো শুনে থাকবেন। তো এসব কথার জবাব কি? আলহামদুলিল্লাহ্! আমি দাড়ি রাখার সুন্নাহটি খুব ভালোভাবেই পালন করি। পর্দা মেনে চলার যথাসাধ্য চেষ্টা করি। মাহরাম না এমন কোনও মহিলার সাথে হাত মেলাই না। তো আমাদের সমাজে প্রচলিত এই তথাকথিত ‘চ্যালেঞ্জ’ গুলো কিভাবে সামাল দিলাম? চলুন, আপনাদেরকে আমার কাহিনী শোনাই।
আমাদের সমসাময়িক যুগে চাকরী পাওয়ার প্রথাগত পদ্ধতিটা কি? ইউনিভার্সিটিতে অনার্স, মাস্টার্স। এরপর ৪র্থ বা শেষ বর্ষে এসে বিভিন্ন জায়গায় চাকরীর জন্য আবেদন। কেউ কেউ আবার তৃতীয় বর্ষেই জব প্লেইসমেন্ট এর জন্য আবেদন করে। আমিও সেটাই করেছিলাম। আমি জানতাম যে চাকরীর বাজারে এখন তীব্র প্রতিযোগিতা। তাছাড়া নিজের পছন্দমত চাকরী পাওয়াও দুরূহ ব্যাপার। তাই আগেভাগেই বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করে রেখেছিলাম। আর এসবের সাথে আমার আরো একটা চ্যালেঞ্জ ছিল – ইসলাম! আমি থাকতাম লন্ডনে। এখানে ইসলামের যেমন পরিচিতি বা মুসলিমদের যেরকম সমাগম, বাইরের অন্যান্য শহরগুলোতে তেমনটা না। তাই লন্ডনের বাইরে যেতে চাচ্ছিলাম না। আর আমার বন্ধু-বান্ধব বলতে যারা আছে সবাই এখানেই। কিন্তু যখন দেখলাম আমার পড়াশোনার সাথে মিলে এমন ভালো চাকরীর সংখ্যা একেবারেই কম, তখন বাধ্য হয়ে প্রথম কম্প্রোমাইজটা করলাম। ঠিক করলাম যে পুরো দক্ষিণ লন্ডনের যেকোন জায়গায় চাকরী হলেই সেখানে পাড়ি জমাবো।
দুইচাকরীর আবেদনের ক্ষেত্রে একটা ব্যাপার নিশ্চিত করেছিলাম যে, আমার সি.ভি.তে, সম্মুখ কিংবা ফোন ইন্টারভিউতে কোনও সময়েই নিজের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কোনো ভুল বা বাড়তি তথ্য দিব না। যা সত্য, তাই জানাবো। বলতে লজ্জা হচ্ছে, প্রথমদিকে কিন্তু কয়েকবার আমি এই কাজটা করেছিলাম। নিজের যোগ্যতা কিছুটা বাড়িয়ে বলেছিলাম। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ্ ওই চাকরীগুলোর কোনটাই পাইনি। বলতে গেলে আল্লাহ্ বাঁচিয়ে দিয়েছেন। দুআ করলাম, এমন যেন আর না হয়, আল্লাহ্ যেন আমাকে ন্যায়পরায়ণতা, সততার পথে অটল রাখেন।
এরপর একটা চাকরীর শেষ ধাপে পৌঁছে গেলাম। ওটা ছিল সাউদাম্পটনে। এবারও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সেই পুরানো উপদেশগুলো আসা শুরু হলো। দাড়ি ছেঁটে ফেলো, মহিলা কেউ হাত বাড়ালে হ্যাণ্ডশেইক করো, চাকরীটা পেতে একটু না হয় ছাড় দাও ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এবারও লাভ হলো না, কোন পাত্তাই দিলাম না। কেমন করে এসব করি, যখন নিশ্চিত ভাবেই জানি যে, আমাদের সবার রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ্। শুধুমাত্র তিনি ছাড়া আর কেউই আমাদের কিছু দেওয়ার বিন্দুমাত্র ক্ষমতা রাখে না। আর এভাবে যদি কোনও চাকরী পেয়েও যাই তাতে কি খুব লাভ হবে? আল্লাহ্র অবাধ্যতার মাধ্যমে যা পাবো, তাতে কি কোনও বরকত থাকবে? কখনোই না।
যা হোক, আবার ইন্টারভিউ দেওয়া শুরু করলাম। প্রথমটা ভালো হলো না, চাকরীও পেলাম না। পরেরটা ছিল স্লাও শহরে। এবারও যথারীতি ইসলামিক বিধি নিষেধ মেনে চললাম, যাতে আল্লাহ্ অসন্তুষ্ট না হন। আবারও প্রত্যখ্যাত হলাম। সিলেকশনের শেষ পর্যায়ে এসে বাদ পড়ে যাওয়াটা যে কী হতাশার! ফোন ইন্টারভিউ, সম্মুখ ইন্টারভিউ ইত্যাদি প্রতিটা ধাপ সফলতার সাথে পেরিয়ে শেষে বাদ পড়ার কষ্ট বলে বোঝানো সম্ভব না। আর বিরক্ত লাগে যখন তারা স্বান্তনা দিয়ে বলেন যে, শত শত বা হাজার হাজার প্রার্থীর মধ্য থেকে বিশেষ যোগ্যতার কারণেই আমাকে চূড়ান্ত পর্যায়ের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল, মন খারাপ যেন না করি।
পর পর দুইটা ইন্টারভিউয়ের শেষ ধাপে এসে বাদ পড়ে যাওয়ায় আমার মোটিভেশন আর আত্মবিশ্বাস একদম তলানীতে গিয়ে ঠেকল। মনে নানারকম ওয়াসওয়াসা আসতে লাগলো। আমি আবারও আপোষ করার কথা ভাবতে লাগলাম। আমার সামনে তখন দুইটা রাস্তা – হয় দ্বীন এর ব্যাপারে শিথিল হওয়া (দাড়ি ছাঁটা, হ্যান্ডশেইক ইত্যাদি) অথবা অন্য কোনও শহরে চাকরী খোঁজা। কিন্তু এবারও আল্লাহ্ আমাকে পথ দেখালেন। তাঁর হুকুম মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করলাম। মনকে আবারও বোঝালাম যে আল্লাহ্ই তো রিজিক দাতা। তাই দ্বীনে ছাড় না দিয়ে ঠিক করলাম পুরো ইংল্যান্ড এর যে কোনো জায়গায় চাকরী পেলেই চলবে। এটা ছিল আমার দ্বিতীয় কম্প্রোমাইজ।
তৃতীয়বারের মত যে ইন্টারভিউয়ের শেষ ধাপে পৌছালাম সেটা ছিল আবের্দিন শহরে। সেখানে একটা অ্যাসেসমেন্ট সেন্টারে দুই দিন ব্যাপী বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা ও মূল্যায়ন চলবে। ভাবছিলাম এতো দূরে এসে দুই দিন থেকে নানান যাচাই-বাছাই পার হয়ে শেষে বাদ পড়লে সময় ও শ্রমের কি অপচয়টাই না হবে! যা ভয় পাচ্ছিলাম ঠিক তাই হলো। আবারও বাদ পরলাম।
এতক্ষন যতগুলো ইন্টারভিউয়ের কাহিনী শোনালাম তার সবগুলোই ছিল আমার ইউনিভার্সিটির ৩য় বর্ষের ঘটনা, যখন আমি প্লেইসমেন্ট সার্ভিসের জন্য আবেদন করেছিলাম। শেষ বর্ষে এসে আমি তৃতীয় কম্প্রোমাইজটা করলাম। আমার সেক্টরের যে কোন কোম্পানিতে চাকরী পেলেই ঢুকে পরার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং সেটা যে দেশেই হোক না কেনো! এ পর্যায়ে আমি ৫০ টিরও বেশী কোম্পানিতে আবেদন করলাম।
সময় গড়াতে লাগলো, সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলল আমার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার সংখ্যা। এর অনেকগুলোই ছিল সিলেকশনের চূড়ান্ত পর্যায়ে। যেখানে যেখানে আবেদন করেছিলাম সে সব জাগা থেকে ডাক পাওয়া কমতে লাগলো। আর কমলো নিজের পড়াশোনার সেক্টরে কাজ পাওয়ার আশা। এত কিছুর মধ্যেও বার বার নিজেকে স্মরণ করালাম যে, আল্লাহ্ই হচ্ছেন ‘আর-রাজ্জাক’। আমার নিজের মেধা, অভিজ্ঞতা কিংবা চেহারা এসব কোনও কিছুই মূখ্য না। তিনি যে কোনো অবস্থাতেই বান্দার রিজিকের ব্যাবস্থা করতে সক্ষম। এই বিশ্বাসই আমাকে চালিয়ে নিতে থাকলো।
তিনডিগ্রীর একেবারে শেষ পর্যায়ে এসেও যখন চাকরীর কোনো সুরাহা হলো না, তখন করলাম আমার ৪র্থ কম্প্রোমাইজ। যখম আমার সেক্টরের কোনো কাজ পাওয়ার আর সম্ভাবনা দেখলাম না, তখন শিক্ষকতার জন্য আবেদন করা শুরু করলাম। এটাকে ব্যাকআপ অপশন হিসেবে রাখলাম। এসময় হঠাৎ করেই একদিন আগে আবেদন করা এক কোম্পানি থেকে ইন্টারভিউয়ের ডাক আসলো। আলহামদুলিল্লাহ্ প্রতিটা ধাপ সহজেই উৎরে গেলাম। শেষ পর্যায়ের মূল্যায়ন ছিল আবের্দিন এর এক সেন্টারে। যাওয়ার পথে ভাবতে লাগলাম আবারও বুঝি বাদ পরার সময় ঘনিয়ে আসলো। তবে এতদিনে তো এসব সয়েই গেছে, আলহামদুলিল্লাহ্। যা হোক, শেষ ধাপটা ভালোভাবেই পার হলাম। তাদের এইচ.আর. এর একজন প্রতিনিধির সাথে বসলাম আমার পারফমেন্স কেমন ছিল তার ফিডব্যাক নিতে।
আলহামদুলিল্লাহ্, ফিডব্যাক খুব ভালো আসলো। মনের মাঝে এক অদ্ভুত উত্তেজনার সৃষ্টি হলো। প্রচন্ড আশাবাদী হয়ে উঠলাম। কিন্তু আশার জোয়ারে ভাটা পরতে খুব বেশী দেরি হলো না। মুখোমুখি হলাম সেই চরম প্রশ্নের—“আপনাকে দেখেই বোঝা যায় আপনি ধর্ম পালনে বেশ সিরিয়াস। যদি চাকরীটা হয়ে যায়, ধর্মের ব্যাপারটি কি আপনার অফিসিয়াল দায়িত্ব পালনে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন?” মনের মধ্যে চিন্তার ঝড় বইতে লাগলো। একটা চাকরীর জন্য কত কষ্টই না করলাম! কত ছুটাছুটি, কম্প্রোমাইজ, বার বার প্রত্যাখ্যানের বেদনা, সব যেন চোখের সামনে ভেসে উঠলো। কিন্তু দ্রুত নিজেকে সামলে নিলাম। ঠিক করলাম, যা সত্য তাই বলবো, কিছুই লুকাবো না। বললাম যে এটাতে আসলে আমার মূল কাজে সমস্যা হওয়ার তেমন কোনো সুযোগ নাই। তবে কিছু কিছু ধর্মীয় বিধিনিষেধ আমাকে মানতেই হবে, যেমন বিপরীত লিঙ্গের সাথে অবাধ মেলামেশা না করা, তাদের সাথে হাত না মেলানো ইত্যাদি। হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে ইন্টারভিউ বোর্ডে যেই মহিলা ছিলেন তার সাথে আমি হাত মেলাইনি। এরপর লম্বা সময় ধরে উনার সাথে নানা বিষয়ে কথাবার্তা চলল। কি করে এই ব্যাপারটা সামলানো যায়, যাতে আমি আমার ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে পারি, আবার অফিসের কলিগদের সাথেও কোনো ভুল বোঝাবোঝি না হয়। এসব নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করলাম। এরপর তিনি বললেন যে, খুব শীঘ্রই আমাকে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিবেন।
ওই সেন্টারে ইন্টারভিউ দিতে আসা পরিচিত এক ভাইয়ের সাথে দেখা হয়েছিল। তারটা শেষ হওয়া পর্যন্ত বসে থাকলাম। হঠাৎ করেই একজন সিনিয়র ম্যানেজার এসে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি আবেদন ফর্মে উল্লেখ করেছেন যে ইউনিভার্সিটিতে কোনও একটা সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। কোন সংগঠন জানতে পারি?” বড় একটা ঢোক গিললাম। বললাম ,“ইসলামিক সংগঠন।”
ঠিক এক সপ্তাহ পর তাদের রিক্রুটমেন্ট বিভাগ থেকে ফোন আসলো। জানালো যে তারা আমাকে একটা সুযোগ দিতে চাচ্ছেন। এর আগে কতগুলো ইন্টারভিউ দিলাম, কত কোম্পানির সাথে যোগাযোগ হলো! কিন্তু সুবহান আল্লাহ্, কেন যেন এই কোম্পানিটির প্রতি এক বিশেষ আকর্ষণ অনুভব করছিলাম। যখন অফারটা শুনলাম, অভিভূত হয়ে গেলাম। বলেন তো চাকরীটা কোথায়? লন্ডনে! আলহামদুলিল্লাহ্।
পিছনের দিনগুলোর কথা ভাবতে লাগলাম। কি কষ্টটাই না করলাম! কতটা ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হলো! কিন্তু নিমেষেই সব কষ্ট পানি হয়ে গেলো। মনটা আনন্দে নেচে উঠলো। আল্লাহ্ই আমাদের প্রতিপালক, এই অমোঘ সত্যটা যেন খুব বেশী করে উপলব্ধি করতে পারলাম। সারা পৃথিবীও যদি আমার বিরুদ্ধে চলে যায়, আর আল্লাহ্ যদি সহায় হন, কোনও শক্তিই আমার সাফল্য রুখতে পারবেনা। কোনদিন কল্পনাতেও ভাবিনি যে আমার ধর্মীয় বিধিনিষেধ গুলোর কথা অকপটে জানিয়ে দিলে তা বরং আমার চাকরী পাওয়ার সহায়ক হবে! কুরআনের সেই আয়াত মনে পড়ে গেলো। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা বলেন,
তারা পরিকল্পনা করে, আল্লাহ্ও পরিকল্পনা করেন, আর আল্লাহ্র পরিকল্পনাই শ্রেষ্ঠ। [সুরাহ আল আনফাল: ৩০]
চারআগেই বলেছি যে চাকরীর আবেদনকালীন সময়ে অনেকগুলো ছাড় দিয়েছিলাম। কিন্তু তার কোনোটাই দ্বীন সংক্রান্ত ছিল না, ছিল দুনিয়াবি বিষয়ে। তবে এটা সম্ভব হয়েছিল আল্লাহ্র সাহায্যের কারণেই। নয়ত আমি কখনোই এই দৃঢ়তা দেখাতে পারতাম না। সুবহানআল্লাহ্, এর বিনিময়ে আল্লাহ্ আমাকে এমন চাকরী পাইয়ে দিলেন যা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। প্রায় ৫০ টির বেশী যে কোম্পানিগুলোতে আবেদন করেছিলাম তার মধ্যে মাত্র ২টি ছিল লন্ডনে। আর আমি যেটা থেকে অফার পেলাম সেটা একেবারে লন্ডন শহর কেন্দ্রে। যেহেতু রিজিক থেকে শুরু করে অন্য সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হচ্ছেন আল্লাহ্, আমার জন্য সবচেয়ে ভালো চাকরীটিই তিনি আমাকে পাইয়ে দিলেন।
আমি চাই আমার জীবনের এই কাহিনিটি যেন সবার জন্য একটি প্রেরণাদায়ক বার্তা হয়ে থাকে। বিশেষ করে আমার সেই সব মুসলিম ভাই-বোন, যারা প্রতিনিয়ত আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের রবের বিধিনিষেধ মেনে চলতে তারা হতাশ হবেন না, শক্তভাবে দ্বীনকে আঁকড়ে থাকুন। সব সময় মনে রাখবেন, আল্লাহ্ হচ্ছেন একাধারে আল-‘আলিম (সর্বজ্ঞ), আল-ক্বাদির (সর্বশক্তিমান), আর-রাজ্জাক (রিযিকদাতা) এবং আল-ক্বাহহার (আল-ক্বাহার)। যদি ভাবেন যে দ্বীনের ব্যাপারে সামান্য কিছু আপোষ করলে দুনিয়াবি সফলতা আসবে, সেটা হবে বড় ধরনের ভুল। কারণ আপনি যখন সেই ছাড় দিচ্ছেন, তখন আল্লাহ্র উপর ভরসা না করে অন্য কিছুর উপর আস্থা রাখছেন। এটাতো কোনো যুক্তিতেই টিকে না। কি করে আমরা মহান আল্লাহ্কে ছেড়ে অন্য কিছুর উপর নির্ভর করে সাফল্য লাভের স্বপ্ন দেখি?
কাজেই যখনই কোন চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির সামনে পড়বেন কিংবা কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্মুখীন হবেন, তখন কুরআনের সেই আয়াত স্মরণ করবেন, যেখানে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা বলেন,
যে আল্লাহ্কে ভয় করে, আল্লাহ্ তার পথ করে দিবেন। আর তাকে তার ধারণাতীত উৎস থেকে রিজিক দান করবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ্র উপর নির্ভর করে, তার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। আল্লাহ্ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেনই। আল্লাহ্ সবকিছুর জন্য একটি নির্দিষ্ট মাত্রা স্থির করেছেন। [সুরাহ আত-ত্বালাক: ২-৩]
উৎস: ISLAM21C (মূল আর্টিকেল লিঙ্ক )
অনুবাদক: আসিফ তারিক
অনুবাদ কপিরাইট © মুসলিম মিডিয়া
মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।
নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।