প্রাচীনকালে খ্রিষ্টান ধর্মের জন্য নিহত হওয়া একাধিক ব্যক্তির নাম ছিলো ভ্যালেন্টাইন। কিন্তু একটি বিতর্কিত বর্ণনার উপর ভিত্তি করে ১৪ই ফেব্রুয়ারি তারিখটিকে রোমের একজন খ্রিষ্টান ঋষি (saint) ভ্যালেন্টাইনের নামে ”সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন’স ডে” হিসেবে অভিহিত করা হয়। কথিত আছে যে, ভ্যালেন্টাইন নামক তিনজন ব্যক্তি খ্রিষ্টান ধর্মের জন্য নিহত হয়েছিলেন। এবং তিনজনের মৃত্যুর তারিখই ১৪ই ফেব্রুয়ারি। তাই এই দিনের সত্যিকার ভ্যালেন্টাইন আসলে কে, তা নিয়েই ব্যাপক বিভ্রান্তি বিদ্যমান। একটি বিষয় সবারই জানা যে, বাইবেলের (খ্রিষ্টানদের ধর্মগ্রন্থ) কোন অংশের সাথে ভ্যালেন্টাইন’স ডে নামক কোনোকিছুর দূরতম সম্পর্ক নেই। তারপরও এত বছর ধরে খ্রিষ্টানরা এটি পালন করে আসছে। অ্যাংলিকান কমিউনিয়নে ঋষিদের স্মৃতি সংরক্ষণের ক্যালেন্ডারে এটি রয়েছে। এছাড়া লুথেরান চার্চের ঋষিদের ক্যালেন্ডারে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের উৎসবের দিন হিসাবে এটি অভিহিত আছে। কিন্তু ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে ঋষিদের রোমান ক্যাথলিক ক্যালেন্ডার সংস্করণের সময় উৎসবের দিন হিসাবে ১৪ই ফেব্রুয়ারি সাধারণ রোমান ক্যালেন্ডার থেকে বাদ দেওয়া হয়। জে সি কুপার খ্রিষ্টান ধর্মীয় অভিধান গ্রন্থে লিখেন যে, “সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন রোমের একজন পুরোহিত যিনি রোমান রাজা ক্লডিয়াসকে খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করেন। সে কারণে তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়। কিন্তু লোককাহিনী হলো, নির্যাতনের পূর্বে তিনি কারারক্ষীকে কোনো বিষয়ে সাহায্য করেন। এতে কারারক্ষকের পরিবারের পঞ্চাশের বেশি সদস্য তাঁর প্রতি মুগ্ধ হয়। এরা পরবর্তীতে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলো। বর্ণিত আছে যে, ফাঁসির পূর্বে তিনি কারারক্ষকের অন্ধ মেয়েকে আরোগ্য করার মতো অলৌকিক কাজ করেন। সবচেয়ে উল্লেযোগ্য কাহিনী হলো, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন কারারক্ষকের মেয়েকে প্রেমপত্র লিখেছিলেন। এতে তিনি From your Valentine কথাটি লিখেন (যা আজ প্রেমিক-প্রেমিকাদের মাঝে বহুল প্রচলিত)।” প্রচলিত বর্ণনা অনুযায়ী, ভ্যালেন্টাইন বাইবেলে উল্লেখিত ঈশ্বরের প্রেমের নিদর্শন স্বরূপ কিউপিডের ছবি সম্বলিত একটি আংটি পরতেন। মৃত্যুদণ্ডের পূর্বে তিনি গাছের বাকল থেকে অনেকগুলো হৃদয় আকৃতি কেটে নেন। স্রষ্টার ভালোবাসার স্মরণিকা স্বরূপ সেগুলো তিনি খ্রিষ্টানদের মাঝে বিতরণ করেন।

হিন্দুধর্ম, খ্রিষ্টানধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, শিখধর্ম, জৈনধর্ম, ইহুদীধর্ম, এবং অবশ্যই ইসলামের সাথে ভালোবাসা দিবস পালনের কোনোই সম্পর্ক নেই।

আজকের এই ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের প্রথা হলো প্রেমের অভিনয়কারী কিছু তরুণ দ্বারা নারীদের ভোগ করার একটি বাহানা। ইসলাম ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির জন্য এটি কল্যাণকর কোনো বিষয় নয়।

IIRT Arabic Intensive

মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন যেসকল মুসলিম স্বেচ্ছায় তাদের জীবনে অন্যদের অনুকরণ করবে, বিচারের দিনে তাদের সেইসকল জাতির সঙ্গে উত্তোলন করা হবে। ইসলামে অনুমোদিত উৎসব কেবল দুটি। আর তা রামাযান মাসে ঈদ–উল-ফিতর এবং যিলহজ্জ মাসে ঈদ–উল-আযহা।


উৎস: IREF অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ (মূল আর্টিকেল লিংক)
অনুবাদক: রাহাত বিন ইসলাম, মুসলিম মিডিয়া প্রতিনিধি
সম্পাদনা: আরমান নিলয়
অনুবাদ কপিরাইট © মুসলিম মিডিয়া

মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।

নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।

Loading Facebook Comments ...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Loading Disqus Comments ...
IIRT Arabic Intensive