বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
আমরা সাধারণত যা সবসময় দেখি তা-ই আমরা স্বাভাবিক হিসেবে নিই। উদাহরণস্বরূপঃ ধরুন, এক মেয়ের নতুন বিয়ে হলো হাজারীবাগ ট্যানারি পল্লীতে যেখানে চামড়া শোধন করা হয়। মেয়েটার দম বন্ধ হয়ে আসবে প্রথম কিছুদিন। কিন্তু আস্তে আস্তে সব সহনীয় হয়ে যাবে। কিছুদিন পর মনেই হবে না পঁচা চামড়ার আবার গন্ধ আছে!!
মানুষের প্রকৃতিই হলো এ রকম যে সে যাতে অভ্যস্ত হয়ে যায় তাকেই স্বাভাবিক মনে করে আর যাতে সে অভ্যস্ত না তা হয়ে যায় তার কাছে অস্বাভাবিক।
ব্যাপারটা আরো ভালোভাবে ভাবা যায়। ধরুন আপনি আমাজন জঙ্গলে গেলেন। সেখানে এখনো বেশ অসভ্য লোকেরা বাস করে। আপনি কিন্তু তাদের চোখে alien. যদিও আপনি স্বাভাবিক একজন মানুষ।
তাই Social acceptance নির্ভর করে Society’র ধরনের উপর। ইসলাম থেকে দূরে চলে যাওয়া এই সমাজের Social acceptance কিন্তু অনৈসলামিক কাজকর্মে। আমরা এখন এমন অবস্থানে চলে এসেছি যেখানে যা স্বাভাবিক হওয়ার কথা সেটাই হয়ে গেছে অস্বাভাবিক আর যা আস্বাভাবিক হওয়ার কথা তা-ই হয়ে গেছে স্বাভাবিক।
যেমন- অমুক তমুককে অনেক ফলো করার পর রাসুল (সঃ) এর lifestyle’ই সবচেয়ে সেরা, এটা যখন কোনো ভাই বুঝতে পেরে দাঁড়ি রেখে দেয়, আরো ভালো করে বললে দাড়ি কাটা বন্ধ করে দেয়, কোনো বোন হিজাবেই শান্তি বুঝে যায়, সুন্নাহ অনুযায়ী চলতে শুরু করে, তখন এমন কি তার বাবা মা-ও এর বিরোধিতা করে। অনেক কষ্টে উনাদের বুঝাতে হয়। অনেকের তো পরিবার তাকে পাগল ভাবাই শুরু করে দেয়। কাছের মানুষগুলোই আগে মানতে পারে না। তাদের কী দোষ? সারাটা জীবন দেখে আসছে TV পর্দায় অমুক তমুক stupid ব্যক্তিত্বহীন নায়ক নায়িকাদের চেহারা যাদেরকে খুব ফলাও করে মিডিয়া কভার করছে।
মানুষ যখন তার দৃষ্টি আল্লাহ থেকে ফিরিয়ে নেয়, আল্লাহ তার জন্য আযাব নাজিল করবেন সেটা আল্লাহর ওয়াদা।
আল্লাহ্ বলেন- وَلَن تَرْضَىٰ عَنكَ الْيَهُودُ وَلَا النَّصَارَىٰحَتَّىٰ تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ ۗ قُلْإِنَّ هُدَى اللَّهِ هُوَ الْهُدَىٰ ۗوَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُم بَعْدَ الَّذِي جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ ۙ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِن وَلِيٍّ وَلَانَصِيرٍ
“ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা কখনোই আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্ত না আপনি তাদের ধর্মের অনুসরণ করেন। বলে দিন, যে পথ আল্লাহ প্রদর্শন করেন, তাই হলো সরল পথ। যদি আপনি তাদের আকাঙ্খাসমূহের অনুসরণ করেন, ওই জ্ঞান লাভের পর, যা আপনার কাছে পৌঁছেছে, তবে কেউ আল্লাহর কবল থেকে আপনার উদ্ধারকারী ও সাহায্যকারী নেই।” [সুরা আল-বাকারা(২): ১২০]
ব্যাপারটাকে হালকাভাবে নেওয়ার মত কোন option নাই। আমরা আজ এমন পর্যায়ে সমাজকে দাঁড় করিয়েছি যেখানে আল্লাহতে দৃষ্টি দেওয়াটাই অস্বাভাবিক। কোনো ভাই বা বোন যখন ইসলামের সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পেরে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, তখন সমাজ তার দিকে আড়চোখে তাকায়। শত শত বছরের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সবচেয়ে কল্যাণকর Life style আজ যুব-আবাল-বৃদ্ধের কাছে অনাকর্ষণীয়, অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। আর ষড়যন্ত্রকারী শয়তানরা মুখ টিপে হাসছে। আর আমরা সম্পূর্ণ পা ফাঁদে দিয়ে কাতরাচ্ছি। শয়তানের পথে জীবনের সমাধান খুঁজছি। আল্লাহু আকবার!!
যখন মনন জাহিলিয়াতের পানি দ্বারা সব সময় wash হতে থাকে তখন সত্য বুঝতে যে কেও অপারগ।
সেই জন্যই কোরআনকে আল্লাহ ফুরকান হিসেবে নাজিল করেছেন যা সত্যকে মিথ্যা থেকে আলাদা করে। অর্থাৎ আল্লাহ জানেন যে প্রতিটা সময়েই হক ও বাতিলের উপস্থিতি সহাস্যে বিদ্যমান থাকবে। আর আমাদের কল্যাণ কোথায় সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। আমরা আমাদের স্বাভাবিক ক্ষমতায় যে দৌড়টা দিতে পারি সেটুকু কেবল আমাদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দিয়ে। আর একটা মানুষ কখনোই সবচেয়ে জ্ঞানী হতে পারবে না। তাই মানব ক্ষমতায় যতটা Understanding দিয়ে আমরা চলতে চাই এটা নিয়ে ভাবার অবকাশ রাখুন।
তাই বুঝুন কল্যাণ কীসে আর কীসে অকল্যাণ। চোখটা খুলুন। ভাবনার চোখে শয়তানের চশমা থাকলে সেটা খুলে ফেলুন। একটু গভীর নিঃশ্বাস নিন। এবার ঠান্ডা মাথায় ভাবুন।
মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।
নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।