সাত
আজকের দিনে আমরা সকলেই যে ওয়াটার সাইকেল সম্বন্ধে জানি তা মূলত আবিষ্কার হয় বার্নাড প্যালিসির রিসার্চের কারণে ১৫৮০ সালে। সমুদ্র থেকে পানি জলীয় বাষ্প হয়ে বাতাসে মিশে, এই জলীয় বাষ্পই পরে মেঘ হয়, এবং সেই মেঘ থেকেই বৃষ্টিপাত হয়। এই তথ্যটা এখন সিম্পল মনে হলেও ১৪০০ বছর আগে ৬৫০ খ্রিস্টাব্দে এটা কেউ জানতো না, বা এ নিয়ে মাথা ঘামাতো না। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, কুরআন এ নিয়ে অনেক ডিটেইলে কথা বলছে। দেখুন-
সূরা হিজর(১৫), আয়াত ২২
▪ And We have sent the fertilizing winds and sent down water from the sky and given you drink from it. And you are not its retainers. [Sahih International]
▪ And We send the fecundating winds, then cause the rain to descend from the sky, therewith providing you with water (in abundance), though ye are not the guardians of its stores. [Yusuf Ali]
▪ আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু পরিচালনা করি অত:পর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি, এরপর তোমাদেরকে তা পান করাই। বস্তুতঃ তোমাদের কাছে এর ভান্ডার নেই। [বঙ্গানুবাদ]
আকাশ থেকে যে বৃষ্টিপাত হয়, তা যে ফার্টিলাইজিং বাতাস, বা বৃষ্টিগর্ভ বাতাস এর কারণে, তা কুরআন সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে। বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পই বৃষ্টির কারণ তা ১৪০০ বছর আগে মানুষ কিভাবে চিন্তায় আনবে?
সমুদ্রের পানি থেকেই যে জলীয় বাষ্প হয়ে তা থেকে বৃষ্টি হয়, তার আরও একটা প্রমাণ দিচ্ছে এই আয়াতটি, দেখুন-
সূরা ওয়াক্বিয়াহ (৫৬), আয়াত ৬৮-৭০
▪ তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? তোমরা তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি বর্ষণ করি? আমি ইচ্ছা করলে তাকে লোনা করে দিতে পারি, অতঃপর তোমরা কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না? [বঙ্গানুবাদ]
কথা হল বৃষ্টির পানি লোনা হবার কথা আসছে কেন? আসছে এ কারণে যে সমুদ্রের লোনা পানিই হল এর উৎস, তাই সমুদ্রের পানি থেকে যে মেঘ হয়েছে, সেই মেঘ থেকে আসা বৃষ্টির পানি লোনা হবার কথা ছিল। কিন্তু জলীয় বাষ্প ফরম করার সময় শুধু পানিই উঠে আসে, লবন আসে না, তাই বৃষ্টির পানি লোনা হয় না।
আরও একটা ব্যাপার, আজকে ভূগর্ভস্থ যে পানি আমরা পান করি, তা কিন্তু বৃষ্টির কারণেই ভূমিতে সঞ্চিত থাকে, যদিও আগে মানুষ বিশ্বাস করতো টলেমীর ভূগর্ভস্থ টানেল থিউরিতে। এ ব্যাপারে কুরআন কি বলছে দেখেন-
সূরা মু’মিনূন(২৩), আয়াত ১৮
▪ And We have sent down rain from the sky in a measured amount and settled it in the earth. And indeed, We are Able to take it away. [Sahih International]
▪ আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মত অত:পর আমি জমিনে সংরক্ষণ করি এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম। [বঙ্গানুবাদ]
এখনও বলবেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঝড়ে বক মেরেছেন? চোখ খুলতে কত দেরি পাঞ্জেরী?
আরো ডিটেইলস জানতে দেখুন: কুরআন ‘৩৯:২১’, ‘২৫:৪৮-৪৯’, ‘২৪:৪৩’, ‘৩০:৪৮’ ,’৭: ৫৭’ , ‘১৩:১৭’, ‘৩৫:৯’, ‘৩৬:৩৪’ , ‘৫০ : ৮-৯’, ‘৫৬: ৬৭-৭০’, ‘৫৭ : ৩০’।
কিভাবে সম্ভব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষে এতদূর অনুমান করে ঠিক কথা বলে দেয়া? চিন্তা করেছেন? এ থেকেই কি প্রমাণ হয়না, যে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ থেকে বানিয়ে কোন কথা বলেননি, বরং সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে।
এই ওয়েবসাইটটা দেখতে পারেন যদি আরো জানতে চান।
আট
আপনাকে যদি হঠাৎ করে বলা হয়, যে সমুদ্রে পানির নিচে আলো যায় না, সবই অন্ধকার, আপনি বিশ্বাস করবেন? হয়ত বিশ্বাস করবেন না। কথাটা সত্য, কিন্তু তা আসলে ১০০০ মিটার পরে। ১০০০ মিটার এর পর সমুদ্র সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে যায়। সমুদ্রের উপর যে আলো পড়ে, তার কিছু অংশ রিফ্লেক্টেড হয়। আর বাকি সমস্ত আলো শোষিত হয়ে যায়, বিভিন্ন লেয়ারে। ২০ মিটারের মধ্যে লাল, ৩০ মিটারের মধ্যে অরেঞ্জ কালার, অনুরূপ সবশেষ নীল আলো ১০০০ মিটার এর মাঝে সম্পূর্ণ শোষিত হয়। ১০০০ মিটারের নীচে গেলে সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে যায় সমুদ্র। এই ব্যাপারগুলো খুবই রিসেন্টলি সাবমেরিন আসার পর আবিষ্কার হয়েছে। আগে জানা ছিল না। দেখুন: Light and dark in the sea.
এবার দেখুন কুরআন কি বলছে-
সূরা নূর(২৪), আয়াত ৪০
▪ Or [they are] like darknesses within an unfathomable sea which is covered by waves, upon which are waves, over which are clouds – darknesses, some of them upon others. When one puts out his hand [therein], he can hardly see it. And he to whom Allah has not granted light – for him there is no light. [Sahih International]
▪ অথবা (তাদের কর্ম) প্রমত্ত সমুদ্রের বুকে গভীর অন্ধকারের ন্যায়, যাকে উদ্বেলিত করে তরঙ্গের উপর তরঙ্গ, যার উপরে ঘন কালো মেঘ আছে। একের উপর এক অন্ধকার। যখন সে তার হাত বের করে, তখন তাকে একেবারেই দেখতে পায় না। আল্লাহ যাকে জ্যোতি দেন না, তার কোন জ্যোতিই নেই। [বঙ্গানুবাদ]
এখানে তরঙ্গের পর তরঙ্গ এ কারণে বলা হয়েছে, সমুদ্রের নীচের পানিতে আলাদা ওয়েভ থাকে, যেভাবে থাকে উপরের পানিতে।
মেসমারাইজিং, তাই না? আপনার কি এখনও মনে হচ্ছে যে, মুহাম্মদ খুব বুদ্ধিমান লোক ছিল, তাই সে বুদ্ধি করে করে উপরের কথাগুলো লিখে দিয়েছে, আর তা হয়েও গিয়েছে?
যাই হোক, সামনে এগোই।
নয়
সূরা ফুরকান (২৫), আয়াত ৫৩
▪ And it is He who has released [simultaneously] the two seas, one fresh and sweet and one salty and bitter, and He placed between them a barrier and prohibiting partition. [Sahih International]
▪ তিনিই সমান্তরালে দুই সমুদ্র প্রবাহিত করেছেন, এটি মিষ্ট, তৃষ্ণা নিবারক ও এটি (অপরটি) লোনা, বিস্বাদ; উভয়ের মাঝখানে রেখেছেন একটি অন্তরায়, একটি দুর্ভেদ্য আড়াল। [বঙ্গানুবাদ]
সূরা আর রাহমান(৫৫), আয়াত ১৯-২০
▪ তিনি পাশাপাশি দুই দরিয়া প্রবাহিত করেছেন। উভয়ের মাঝখানে রয়েছে এক অন্তরাল, যা তারা অতিক্রম করে না। [বঙ্গানুবাদ]
পৃথিবীর কিছু জায়গায় এমন ঘটনা ঘটেছে, যেখানে দুটো সমুদ্র বা নদী এসে মিশেছে , কিন্তু পানি মিশে যায়নি। যেমন: গাল্ফ অব আলাস্কা; দেখুন চিত্রে:
মিশরের নীল নদ যেখানে মেডিটেরেনিয়ান সাগরে মিশেছে, সেই জায়গাটাও এরকম। আরও আছে গাল্ফ অব মেক্সিকো বা সাউথ আফ্রিকার কেইপ পয়েন্ট।
এই ফেনোমেনা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। এটি স্বাভাবিকভাবে কারও জানার কথা নয়। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সীরাত পড়লে আপনি জানবেন যে তিনি কখনই নীল-মেডিটারনিয়ান মোহনা বা এরকম কোন জায়গা ভ্রমণ করেন নি যে এটা তার জানা থাকবে? তাহলে এটি কুরআনে কিভাবে এলো? একমাত্র উত্তর হল, যে এটি আল্লাহর কিতাব।
দশ
পৃথিবীর যে উপরিভাগে আমরা বাস করি, সেটা হল আর্থক্রাস্ট। এই আর্থক্রাস্ট সমগ্র পৃথিবীর ব্যাসার্ধের তুলনায় খুবই পাতলা। এই পাতলা আর্থক্রাস্ট এর ভিতরেই প্রচন্ড গরমে গলিত বিভিন্ন ধাতু সর্বদা পৃথিবী পৃষ্ঠকে ভিতর থেকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সর্বদাই পৃথিবীর উপরিতল বা আর্থক্রাস্ট নড়াচড়া করার কথা, মানে সর্বদাই পৃথিবীতে ভূমিকম্প হবার কথা। কিন্তু না, তা হয় না। পৃথিবীর উপরিতল/ আর্থক্রাস্ট কতকগুলো টেকনোটিক প্লেট দ্বারা গঠিত এবং এই টেকনোটিক প্লেটগুলোর সংযোগস্হল খুব ফার্মলি ফিক্সড পর্বত দ্বারা। পর্বতগুলো যেন ঠিক পেরেকের মতন কাজ করে। পর্বতের উপরের অংশ যা আমরা দেখি, তা আসলে পেরেকের উপরের অংশ যা দৈর্ঘ্যে অনেক কম। পর্বতের নিচে এর ১০-১৫ গুণ অংশ প্রোথিত থাকে। পর্বত এভাবে পেরেকের কাজ করে বলে পৃথিবীতে কনটিনিউয়াস ভূমিকম্প হয়না, বরং পৃথিবী স্ট্যাবল থাকে সব সময়।
জিওলজির বিখ্যাত বই ‘দ্য আর্থ’ যা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়, যার অথার প্রফেসর ফ্র্যাঙ্ক প্রেস (যিনি ন্যাশনাল একাডেমি অব সাইন্স এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন ১২ বছর, এবং তিনি প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এর এডভাইজরও ছিলেন), তিনি তার বইয়ে এই সত্য উল্লেখ করেছেন যে ‘Mountains has underlying roots’. {Earth, Press and Siever, p. 435. Also see Earth Science, Tarbuck and Lutgens, p. 157.} একই বইয়ে উল্লিখিত আছে “It is due to the mountain which prevents earth from shaking”.
টেরি হিকস তার বই “How Moutains Do form” এ উল্লেখ করেছেন “mountains have deep roots”. ছবিতে দেখুন:
তার মানে বোঝা গেল, পৃথিবীতে থাকা পর্বতমালা পেরেক সদৃশ এবং এদের পেরেক সদৃশ হওয়া পৃথিবীকে নড়াচড়া হওয়া থেকে রক্ষা করে।
বিস্তারিত দেখুন এই লিংকে।
এবার দেখুন কুরআন কি বলছে-
সূরা নাবা (৭৮), আয়াত ৬-৭
▪ Have We not made the earth a resting place? And the mountains as stakes? [Sahih International]
▪ আমি কি করিনি ভূমিকে বিছানা এবং পর্বতমালাকে পেরেক? [বঙ্গানুবাদ]
আরো দেখুন-
সূরা লোকমান (৩০), আয়াত ১০
▪ ”He created the heavens without pillars that you see and has cast into the earth firmly set mountains, lest it should shift with you” [Sahih International]
▪ ”He created the heavens without any pillars that ye can see; He set on the earth mountains standing firm, lest it should shake with you;” [Yusuf Ali]
▪ তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন; তোমরা তা দেখছ। তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে নড়াচড়া না করে।’ [বঙ্গানুবাদ]
আরো দেখুন-
সূরা আম্বিয়া (২১), আয়াত ৩১
▪ আমি পৃথিবীতে ভারি বোঝা রেখে দিয়েছি যাতে তাদেরকে নিয়ে পৃথিবী নড়াচড়া না করে এবং তাতে প্রশস্ত পথ রেখেছি, যাতে তারা পথ প্রাপ্ত হয়। [বঙ্গানুবাদ]
এইবার জবাব দেন, মরুভূমিতে বসে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে এইসব কথা কুরআনে লিখে দিয়েছেন? এসব কি প্রমাণ করে না, যে একজন আল্লাহ আছেন এবং এই কুরআন তাঁর থেকে আসা কিতাব?
আরও প্রমাণ চান?
আরো দিচ্ছি, সাথেই থাকুন।
এগার
সাইন্টিস্ট Von Frisch মৌমাছি নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেন। তিনি দেখান যে, মৌমাছির চলার পথ এক বিশাল গবেষণার বিষয়। মনে করেন একটি মৌমাছি চলতে চলতে কোন একটি ফুলবাগান বা ফুল খুঁজে পেল। এখন সে মৌচাকে ফিরে এসে অন্য মৌমাছিদের বুঝাবে কিভাবে ওই ফুলবাগানে বা ফুলে যেতে হবে? এর জন্য মৌমাছিটি এক বিশেষ ধরণের নৃত্য করবে, যার মাধ্যমে অন্য মৌমাছিগুলো চলার পথ বুঝতে পারবে বা খুঁজে পাবে। দুই ধরণের নৃত্য আছে, একটা হল Round Dance, আর একটা হল waggle Dance. তার মানে আমরা বুঝতে পারলাম, মৌমাছির চলার পথ কিন্তু র্যানডম নয়, বরং তা বিশেষায়িত। এই গবেষণার জন্য বিজ্ঞানী Von Frisch নোবেল প্রাইজ পান ১৯৭৩ সালে।
আরও একটি পয়েন্ট, সেটা হল মধু সংগ্রাহক কর্মী মৌমাছিগুলো কিন্তু পুরুষ মৌমাছি না, বরং মহিলা মৌমাছি। এখানে দেখুন।
এবার দেখি কুরআন এ ব্যাপারে কি বলছে-
সূরা নামল (১৬), আয়াত ৬৮-৬৯
▪ And thy (your) Lord taught the Bee to build its cells in hills, on trees, and in (men’s) habitations; Then to eat of all the produce (of the earth), and find with skill the spacious paths of its Lord: there issues from within their bodies a drink of varying colours, wherein is healing for men: verily in this is a Sign for those who give thought. [Yusuf Ali]
▪ আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেন পর্বতগাহ, বৃক্ষ এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরি কর, এরপর সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথসমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। [বঙ্গানুবাদ]
এখানে আরবিতে ‘মধু মক্ষিকা’ বা ‘The Bee’ এর Female জেন্ডার উল্লেখিত হয়েছে। মানে কুরআনের অথর জানেন যে, মহিলা মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে, পুরুষ মৌমাছি নয়। [ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, শেক্সপিয়ার তার প্লে ‘Henry the fourth’ এ ভুলক্রমে ‘পুরুষ মৌমাছি কিং এর নিকট রিপোর্ট করছে’ বলে উল্লেখ করেছেন; একই ভুল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের করার কথা ছিল, যদি তিনি নিজেই কুরআন লিখতেন। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বড় হওয়া একজন মানুষ কিভাবে ১৪০০ বছর আগে মহিলা কর্মী মৌমাছির কথা ভাবতে পারে?]
এবং ‘find with skill the spacious paths of its Lord’ বা ‘আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও (দক্ষতার সাথে)’ দ্বারা মৌমাছির চলার পথ এর কথা উল্লেখিত হয়েছে যা বিশেষায়িত। এতগুলো প্রাণী থাকতে কুরআন মৌমাছির চলার পথ এর কথা উল্লেখ করলো কেন? কারণ মৌমাছির চলার পথটি তারা waggle dance বা round dance এর মাধ্যমে খুঁজে পায়, আল্লাহর ইচ্ছায়।
বার
কুরআন বলছে-
সূরা আম্বিয়া (২১), আয়াত ৩২
▪ And We made the sky a protected ceiling, but they, from its signs, are turning away. [Sahih International]
▪ And We have made the heavens as a canopy well guarded: yet do they turn away from the Signs which these things (point to)! [Yusuf Ali]
▪ আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে। [বঙ্গানুবাদ]
তার মানে আমাদের আকাশ আমাদের জন্য একটি ‘প্রটেক্টেড সিলিং’/ ক্যানোপি ওয়েল গার্ডেড বা সুরক্ষিত ছাদ। কিভাবে? কিসের এগেইনস্টে?
বিংশ শতাব্দিতে এসে মানুষ জানতে পেরেছে, আমাদের আকাশ (বায়ুমন্ডল) সূর্য থেকে আসা আলট্রা ভায়োলেট রে, এক্স-রে কে শুষে নেয়, তাকে মাটিতে এসে পৌঁছতে দেয় না এবং পৃথিবীর চারিদিকে থাকা চৌম্বকক্ষেত্র, সূর্য এবং অন্য তারকা থেকে আসে রেডিয়েশন পৃথিবীতে পৌঁছুতে দেয় না। না হলে, পৃথিবীতে প্রাণের কোন অস্তিত্ব থাকতো না। বোঝা গেল?
এবার চিন্তা করেন, ১৪০০ বছর আগে একজন মানুষ কেন আকাশকে প্রটেক্টেড সিলিং মনে করতে যাবে? আর তা আজকের চিন্তার সাথে মিলে যাবে?
তের
সূরা নাহল (১৬), আয়াত ৬৬ এ আল্লাহ বলেন-
▪ And indeed, for you in grazing livestock is a lesson. We give you drink from what is in their bellies – between excretion and blood – pure milk, palatable to drinkers. [Sahih International]
▪ তোমাদের জন্যে চতুষ্পদ জন্তুদের মধ্যে চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। আমি তোমাদেরকে পান করাই তাদের উদরস্থিত বস্তুসমুহের মধ্যে থেকে গোবর ও রক্ত নিঃসৃত দুগ্ধ যা পানকারীদের জন্যে উপাদেয়। [বঙ্গানুবাদ]
এখানে চতুষ্পদ জন্তুর দুগ্ধকে ‘গোবর ও রক্ত নি:সৃত’ বলা হয়েছে। আসলে ব্যাপারটা কি? ব্যাপারটা হল, গরু/ছাগল যা খায়, এগুলো এর উদর বা ইনটেস্টাইন এর মধ্য গিয়ে গোবর হয়। এই গোবর থেকে ইনটেস্টাইন এর মেমব্রেইন এর মাধ্যমে খাদ্য উপাদানগুলো শোষিত হয়ে রক্তে যায়। এই রক্ত মেমরি গ্লান্ডে পৌঁছুলে, মেমরি গ্ল্যান্ড রক্ত হতে দুধ তৈরি করে। সুতরাং দুগ্ধ যে রক্ত ও গোবর নি:সৃত – তাতে সন্দেহ নাই।
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যারা কুরআনের লেখক মনে করেন, তাদের সংশয়বাদী মন এসবের কি ব্যাখ্যা দিবে আমার জানা নাই।
চৌদ্দ
সূরা কিয়ামাহ(৭৫) আয়াত ৩-৪
▪ Does man think that We cannot assemble his bones? Nay, We are able to put together in perfect order the very tips of his fingers. [Yusuf Ali]
▪ মানুষ কি মনে করে যে আমি তার অস্থিসমূহ একত্রিত করব না? পরন্তু আমি তার অংগুলির অগ্রভাগ পর্যন্ত সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করতে সক্ষম। [বঙ্গানুবাদ]
এখন প্রশ্ন হল: মানবদেহে এত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থাকতে আল্লাহ এই আয়াতে হঠাৎ অংগুলির অগ্রভাগকে কেন উল্লেখ করলেন?
জবাব: ১৮৮০ সালে স্যার ফ্রান্সিস গ্যাল্টন ফিঙ্গারটিপসে থাকা প্যাটার্নগুলো পাবলিশ করেন। রিসার্চে দেখা যায় যে, মিলিয়ন মানুষের মধ্যেও যে কোন দুটো মানুষের ফিঙ্গার প্রিন্ট কখনও এক হয় না। প্রতিটা মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ইউনিক বা আলাদা আলাদা। যে কারণে মানুষকে সনাক্ত করতে এই পদ্ধতি বহুল ব্যবহৃত হয়।
এই আয়াতে আল্লাহ বলছেন, যে মানুষ যখন পুনরায় উত্থিত হবে, তার ফিঙ্গারটিপসটাও হুবহু এক রকম করে আল্লাহ বানানোর এখতিয়ার রাখেন, এটা আল্লাহর কাছে খুবই সহজ। চিন্তা করেন, যদি সব মানুষ একই ফিঙ্গারটিপ রাখতো, তাহলে এই আয়াতটা কিন্তু মিনিংলেস হয়ে যেতো।
এরপরও কি কারও বলা উচিত, যে মুহাম্মদ বানিয়ে বানিয়ে কুরআন লিখেছেন?
পনের
প্রফেসর তাক্রা তাক্রা শন (ইন্সটিটিউট অব শেঙ্গাই, হেড অব এনাটমি), তিনি পেইন রিসেপ্টার নিয়ে বছরের পর বছর কাজ করেন। আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, শুধু মস্তিস্ক এককভাবে আমাদের চামড়ায় যে ফিলিং হয় তার জন্য দায়ী। কিন্তু তাঁর রিসার্চে বেরুলো, চামড়ার নিচে পেইন রিসেপ্টার থাকে। এই পেইন রিসেপ্টার ছাড়া ব্রেন পেইন কে ফিল করতে পারে না। চামড়া পুড়ে যদি পেইন রিসেপ্টার ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে মানুষ আর পেইন ফিল করে না।
তার মানে কোন মানুষকে যদি চিরস্থায়ীভাবে আগুনে পুড়িয়ে কষ্ট দিতে হয়, তবে তাকে বার বার নতুন চামড়া দিতে হবে, রাইট? কারণ একবার চামড়া পুড়ে গিয়ে পেইন রিসেপ্টর নষ্ট হয়ে গেলে, মানুষ আর পুড়ার কষ্ট অনুভব করবে না।
এখন দেখুন কুরআন কি বলছে-
সূরা নিসা (৪), আয়াত ৫৬
▪ Indeed, those who disbelieve in Our verses – We will drive them into a Fire. Every time their skins are roasted through We will replace them with other skins so they may taste the punishment. Indeed, Allah is ever Exalted in Might and Wise. [Sahih International]
▪ এতে সন্দেহ নেই যে, আমার নিদর্শনসমুহের প্রতি যেসব লোক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবে, আমি তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার আমি তা পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে, যাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, হেকমতের অধিকারী। [বঙ্গানুবাদ]
কারো কাছ থেকে কুরআনের এই আয়াত জানার পর প্রফেসর তাক্রা তাক্রা শন বিস্ময়াভিভূত হয়ে যান। পরবর্তীতে তিনি ইসলাম নিয়ে রিসার্চ করেন এবং ইসলাম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন।
সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত ৮ম মেডিকেল কনফারেন্সে প্রফেসর তাক্রা তাক্রা শন নিজ মুখে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ বলে ইসলাম গ্রহণ করেন।
চিন্তা করুন, কারও জন্য কুরআনের মাত্র একটি আয়াতই যথেষ্ঠ ঈমান আনয়নের জন্য। আর যাদের অন্তরে বক্রতা আছে, তারা কুরআনের ছয় হাজার আয়াতেও তৃপ্ত হয়না।
ষোল
সূরা আত-ত্বরিক্ব (৮৬), আয়াত ৫-৭ এ বলা হয়েছে-
▪ So let man observe from what he was created. He was created from a fluid, ejected. Emerging from between the backbone and the ribs. [Sahih International]
▪ অতএব, মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে। সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে। এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষপাঁজরের মধ্য থেকে। [বঙ্গানুবাদ]
এটা নিয়ে নাস্তিকদের ব্যাপক আপত্তি, কারণ এখানে সিমেনের(semen) কথা বলা হয়েছে, তাদের মতে Semen নির্গত হয় Testis থেকে, কাজেই কুরআন নাকি ভুল! সুপারফিসিয়াল রিসার্চের ফল আর কি!
ব্যাপারটা বুঝার জন্য ব্যাকবোন (মেরুদন্ড) এবং রিবস (বক্ষপাজর) এর ছবিটা দেখি:
আর Semen আসলে কি পুরোটাই টেসটিস এ উৎপন্ন হয়? না। সিমেন প্রডিউসড হয় টেসটিস এ থাকা ‘শুক্রাণু সহ লিকুইড’, ‘প্রস্টেট গ্লান্ড থেকে আসা লিকুইড’, ‘সেমিনাল ভেসিকল থেকে আসা লিকুইড’, ‘ভাস ডিফারেন্স থেকে আসা লিকুইড’ — এই সবগুলো লিকুইডের মিক্সচার হতে। ছবিতে দেখুন :
ছবি দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, যে Semen সরাসরি টেসটিস থেকে Penis এ আসে না। বরং টেসটিস থেকে ‘শুক্রাণু সহ তরল’ একটি বৃত্তাকার পথে ঘুরে আসে, এবং Seminal Vesicle (যেটা Backbone and Ribs এর মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত) থেকে তরল নি:সৃত হয়ে তা Semen এ পরিণত হয়। এরপর তা Penis দিয়ে বের হয়। Seminal Vesicle এর অবস্থান Backbone এবং Ribs এর মধ্যবর্তী অঞ্চলে হওয়ায়, এবং Semen এই পথ ঘুরে আসায়, যদি বলা হয় যে ”সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে। এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষপাঁজরের মধ্য থেকে।”- তাহলে তা সম্পূর্ণ সঠিক। বরঞ্চ এটা কুরআনের একটি মিরাকল। কারণ এই কথা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বানিয়ে লিখতে পারেন না। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে কারো পক্ষে এটা জানা সম্ভব না যে Semen আসলে মেরুদন্ড ও বক্ষপাঁজরের মধ্যবর্তী অঞ্চল থেকে স্খলিত হয়।
বিস্তারিত দেখুন এখানে আর এখানে।
সতের
কুরআনের সবচেয়ে বড় মিরাকল:
এতক্ষণ যা বর্ণনা করলাম, এগুলো আসলে কুরআনের সবচেয়ে বড় মিরাকল নয়। কুরআনের সবচেয়ে বড় মিরাকল হল এতে কোন ‘সাইন্টিফিকালি প্রুভেন ভুল’ না থাকা। কারণ আপনি যদি ১৪০০ বছর আগে কোন বই লিখেন, আর তাতে অনেক বৈজ্ঞানিক তথ্যের সন্নিবেশ করেন, তাহলে আপনার বইয়ে উল্লিখিত কিছু কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য বর্তমানে থাকা ‘সাইন্টিফিকালি প্রুভেন ফ্যাক্ট’ এর সাথে মিলে যাবে। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক বৈজ্ঞানিক তথ্য কিন্তু আবার ভুল হয়ে যাবে, বর্তমান প্রুভেন ফ্যাক্ট এর সাথে মিলবে না। রাইট? তাই কুরআন যদি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের লেখা কিতাব হতো, তাহলে এতে থাকা বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলোর অর্ধেক হয়তো বর্তমান বৈজ্ঞানিক ফ্যাক্ট এর সাথে মিলে যেতো, অর্ধেক হয়তো মিলতো না – এমনটাই হবার কথা ছিল। কিন্তু যা দেখা যাচ্ছে, তা হচ্ছে যে কুরআন বৈজ্ঞানিক ব্যাপারে কোন ভুলই করেনি, বরং সূক্ষাতিসূক্ষভাবে সঠিক কথা বলেছে। কুরআনে এমন কোন তথ্য নাই যা বিজ্ঞানীরা ভুল প্রমাণ করতে পেরেছেন। এটাই ক্বুরআন সত্য হবার পক্ষে সবচেয়ে বড় দলিল।
নাস্তিকরা ভাল মত না স্টাডি করেই তর্ক করে। কুরআন নিয়ে তাদের করা প্রশ্নগুলো নিয়ে একটু স্টাডি করলেই বুঝবেন। নাস্তিকদের করা প্রতিটা প্রশ্নই খুব ভালভাবে এন্সারড হয়েছে, যেগুলো নেটে এভেইলেবল। এখন পর্যন্ত নাস্তিকরা কোন সাবস্ট্যানশ্যাল ভুল কুরআন থেকে বের করতে পারেনি।
নাস্তিক/খ্রিস্টানদের করা ইসলাম/ক্বুরআন নিয়ে প্রশ্নের কনভিনসিং এন্সার দেখতে ড. জাকির নায়েক ও ড. উইলিয়াম ক্যাম্পবেল এর বিতর্ক দেখতে পারেন। ড. জাকির নায়েক সব প্রশ্নেরই কনভিন্সিং এন্সার দিয়ে দিয়েছেন। দেখুন এই ভিডিও।
এই ভিডিওতে বাইবেলের মধ্যে থাকা সমস্যাগুলোও পাবেন। ড. জাকির সুন্দরভাবে পয়েন্ট আউট করেছেন, এবং ড. জাকির বাইবেলের যে ভুলগুলো ধরেছেন, তার কোন যুক্তিসংগত উত্তর ড. ক্যাম্পবেল দিতে পারেন নি; তিনি স্বীকার করেছেন যে এসবের উত্তর তার জানা নেই। বাইবেল যেই ভাষায় রচিত হয়েছিল, সেই ভাষাটিরই এখন অস্তিত্ব নাই, আর গীর্জার ফাদাররা বছর বছর বাইবেল সংশোধন করতে করতে এমন অবস্থা হয়েছে, যে বাইবেলে এখন ভুল পাওয়া যাচ্ছে। মানুষের হাত পড়লে একটা ঐশী কিতাবের কি হাল হয় তার প্রমাণ হল বর্তমান বাইবেল। কিন্তু কুরআন সম্পূর্ণ অবিকৃত থাকায় এর মধ্যে কোন ভুল পাওয়া যায় না। যাই হোক আশা করি ভিডিওটি দেখবেন।
কুরআনের সাইন্টিফিক মিরাকলগুলো এখানেই শেষ। এটি তৈরি করতে সবচে কাজে লেগেছে জাকির নায়েকের এই লেকচার, আর হারুন ইয়াহিয়ার এই ওয়েবসাইট।
শেষকথা: এখন, কুরআনের এই সাইন্টিফিক মিরাকলের ব্যাপারে নাস্তিকদের এপ্রোচ কি?
নাস্তিকরা যেটা করে, তারা খুঁজে খুঁজে বের করে যে কুরআনে উল্লিখিত কোন্ কোন্ সাইন্টিফিক ফিনোমেনা নিয়ে কোন গ্রীক/ইজিপ্শিয়ান সাইন্টিস্ট কথা বলেছেন এবং ঘটনাক্রমে তিনি সঠিক বলেছেন। এরপর তারা বলতে চায়, যে মুহাম্মদ অমুক গ্রীক/ইজিপ্শিয়ান দের থেকে নকল করেছেন। দুই-তিনটি মিরাকল অবশ্য এই আওতায় পড়ে যায়, সেক্ষেত্রে সেই মিরাকলগুলো বড়জোর ‘মিরাকল’ না হয়ে ‘জানা সত্য’ তে রূপান্তরিত হবে। তারপরও প্রশ্ন থেকে যায়:
১. তৎকালীন গ্রীক/ ইজিপ্শিয়ান সাইন্টিস্টরা অনেক সাইন্টিফিক ফিনোমেনার সঠিক এক্সপ্ল্যানেশন জানতো, অনেকগুলো ভুল জানতো। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে সর্বদা সঠিক এক্সপ্ল্যানেশন চুজ করলেন? তিনি ভুলে ভরা সাইন্টিফিক কনসেপশন থেকে সঠিকটা কিভাবে খুঁজে পেলেন? বর্তমান যুগে সঠিক সাইন্টিফিক ফ্যাক্ট খুঁজে পাবার পর আপনি বলতে পারেন যে অমুক সাইন্টিস্ট ৬০০ শতাব্দিতে এই কথা বলেছিল। ঠিক আছে। কিন্তু আরও অনেক সাইন্টিস্ট ছিল যারা ৬০০ শতাব্দিতেই এর বিপরীত কথা বলেছে, তাদেরকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাদ দিলেন কিভাবে?
২. মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি বাইবেলকেই কপি করেন তবে বাইবেলের ভুলগুলো বাদ দিয়ে শুধু সঠিক অংশ কিভাবে কপি করলেন? মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে বুঝলেন কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক? [মরিস বুকাইলীর কুরআন, বাইবেল ও বিজ্ঞান পড়লে এবং ড. জাকির নায়েক ও উইলিয়াম ক্যাম্পবেল এর বিতর্ক শুনলে আপনার কাছে বাইবেলের বৈজ্ঞানিক ভুলগুলো সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে। তখন আপনি বুঝবেন যে ৭ম শতাব্দিতে বসে কেউ বাইবেলকে ফিল্টার করতে পারে না।]
৩. এটা খুব Highly Unlikely যে মুহাম্মদ এসব সাইন্টিফিক নলেজ গ্রীক-ইজিপ্শিয়ানদের থেকে জানবেন। কারণ তিনি নিজে লিখতে-পড়তে জানতেন না। এবং তৎকালীন যুগে গুগল ছিল না, ইন্টারনেট ছিল না, ইউনিভার্সিটি ছিল না; ইভেন কাগজই ছিল না। উনার কাছে এসব ইনফরমেশন আসা ছিল খুবই কঠিন। আপনি যদি ডাক্তার হন আর গ্রামে গিয়ে লিখতে-পড়তে জানে না এমন কাউকে এমব্রায়োলজি শিখাতে চান, সহজে পারবেন? কোন ওস্তাদ এসেছিল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এসব শেখানোর জন্য? আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন ওস্তাদের কাছে সাইন্স শিখতে গেলে তা সীরাতের কিতাবে অবশ্যই উল্লিখিত থাকতো।
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি তৎকালীন গ্রীক-ইজিপ্শিয়ান দের নকল করতেন বা বাইবেলকে নকল করতেন তাহলে কুরআনে বাইবেলের মতনই মনুমেন্টাল এরর পাওয়া যেত। কুরআন হতো ভুলে ভরা। এতে সঠিক তথ্যও থাকতো, সাথে সাথে ভুল তথ্যও থাকতো। কিন্তু স্টাবলিশড সাইন্স দিয়ে কুরআনে কোন ভুল তথ্যও খুঁজে পাওয়া যায় নি।
তৃতীয় পর্ব পড়ার আমন্ত্রণ রইলো। ইনশা আল্লাহ তৃতীয় পর্ব অন্য ধর্মগ্রন্থে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে আলোচনা হবে।
মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।
নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।
You r an high educated person. So, u can read and compare the history that, these type of arguments, to prove verses form a holy book wrt science, were first given by christians several hundreds years ago, then by hindus and on a recent trend, by muslim scholars. i think it is a trap.
If the holy Quran would have the ayats to look for or even compare with the scientific claims, thousands of scholars could have done that in past 1400 years (at least they might have tried). though i dont know almost anything, my assumption is, you cannot find a single document similar to this, written by muslim scientists or prominent scholars from 7th to 17th centuries that claims that these, these and these inventions were described in Quran 500 or 1000 years ago. what is the probability of the golden age scholars being ignorant or us being over intelligent?
you know, scientific claims are dynamic and ever changing, which we dont need to believe. advancements of science will surely disavow many things in future, which today we accept as proven facts. what will the future muslims think, if one of today’s scientific theory, used by Dr. Jakir to add a feather to credibility of Allah and Quran, is modified or even proven wrong?
it will be a trap for muslims after 50 years. just look at historical timeline of european renascence and evolution of hindu theologians in british period and compare the overall situation of muslim rulers, muslim normal believers, oppressed muslims in muslim coutries, work of muslim preachers and those of christian of medieval times. the more i read european history, the more i find similarity with todays muslim world. is this complete coincidence?
religious education system in almost all muslim countries(including saudi and bangladesh) is established under british supervision. what good british would do to muslims? in europe, i fetched many young, nice behavior christian preachers whose line of action is just like tablig. who copied who? did rasula (sa.) copied or he said to be very distinct from other religions while coexisting with them? today muslims have become violent like medieval europeans and follow all their norms. christians are ushering us to act and think just like they did in their dark periods.
u r n engineer and high educated from usa. u cannot say Allah has not given u brains to think. and to those Allah has given better brains, they must bear the responsibility to utilize this rahmat (brain) in Allah’s way. so, my request is please compare european history with today’s muslim world. most muslims, in their acts and ways of thinking, are blinded by christians. and those who are given better rahmat by Allah, must not be fallen in trap set by christians, so that the rest can have guidence.
may we all be guided right …
আগের যুগের আলেম উলামারা সাইন্স এবং ক্বুরআন নিয়ে আলোচনা করেন নি, তাই এখন করা যাবে না — এমন কোন কথা নেই।
তাই আমি আপনার সাথে একমত নই। খ্রিস্টানদের ইতিহাস এবং আমাদের ইতিহাস সাবস্ট্যানশিয়ালী ভিন্ন। খ্রিষ্টানদের কিতাবের সত্যতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। যীশুর অন্তর্ধানের ৬০-৭০ বছর পরে মেমরী থেকে
তা লিখা হয়েছে। এবং তা যাজকরা তা বছর বছর পরিবর্তন করে এসেছে।
ক্বুরআনের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা নাই। রসূল(স) এর জীবন কালেই তা লিখিত হয় এবং উসমান(রা) এর আমলেই তা সংকলিত হয়। আর বিজ্ঞান মিনিটে চেঞ্জ হয়। বর্তমান বিজ্ঞান যথেষ্ঠ ক্রেডিবল
এবং তা আনলাইকলি টু চেঞ্জ। সুতরাং এখন বিজ্ঞান এবং ক্বুরআন কমপেয়ার করার মধ্যে সমস্যা নাই।
আর আপনি যে বলেছেন ইসলামিক এডুকেশন সিস্টেম ব্রিটিশদের সুপারভিশনে হয়েছে এটা সর্বৈব মিথ্যা। ব্রিটিশদের সুপারভিশনে শুধু আলীয়া মাদ্রাসা সিস্টেম টা এসেছে। কিন্তু দেওবন্দী কারিকুলাম আওরঙ্গজেব এর
আমলে প্রণীত হয়েছে। ১৮৫৭ সালের সংগ্রামের পরাজয়ের পর দেওবন্দীরা এটা গড়ে তুলেছে। এটা সম্পূর্ণ ব্রিটিশ সুপারভিশন থেকে মুক্ত। আর সৌদি সালাফীরা হল মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহাব এর অনুসারী। এদের কারিকুলামে কখনোই ব্রিটিশ হাত পড়েনি। এটা আপনি ভুল বলছেন।
ইউরোপীয়ান হিস্ট্রি আর মুসলিম হিস্ট্রি সম্পূর্ণ বিপরীত , আপনি কেন তাতে সিমিলারিটি খুঁজে পাচ্ছেন তা আমি বুঝতে পারছিনা। যেমন ইউরোপীয়ানরা ক্রসেড ওয়ার এর সময় হামলা চালিয়ে মুসলিম বিশ্বে ম্যাসাকার চালিয়েছিল। নিরীহ লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেছিল। কিন্তু এটা ছিল আনপ্রভোকড, মানে মুসলিমরা ওদের নিরীহ লোক কখনও হত্যা করে নাই।
বর্তমান যুগে আপনি যে মুসলিম এক্সট্রিমিস্ট দেখছেন যারা ইউরোপে আমেরিকায় হামলা চালাচ্ছে্ , তারা এটা চালাচ্ছে প্রভকড হয়ে। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করে লক্ষাধিক মুসলিম হত্যা করা হয় এবং ইসরাইল এই হত্যাকান্ড চালু রাখে। এর বদলায় কিছু মুসলিম ৯/১১ র হামলা করে বসে। তার জবাবে আমেরিকা লেড ন্যাটো আফগানিস্তানে আর ইরাকে হামলা করে এবং আরও ৭ টি মুসলিম দেশে ড্রোন হামলা করে। ড্রোন হামলায় ৫ হাজার এর বেশী এবং ৫ লক্ষ লোক ইরাকে মারা যায়। সুতরাং মুসলিমদের প্রোভকড হবার যথেষ্ঠ কারণ আছে , এবং কারণ থাকাতে তারা প্রোভকড হয়ে ইউরোপে আর আমেরিকায় হামলা করছে।
তাহলে মধ্যযুগে ইউরোপের ইতিহাস আর বর্তমান মুসলিম বিশ্বের ইতিহাস এক হল কিভাবে?
মধ্যযুগে তো ইউরোপে যা হয়েছে তা হল কনটিনিউয়াস সিভিল ওয়ার । এরকম সিভিল ওয়ার তো মুসলিম বিশ্বে হয়নি।
এবং চার্চ তখন মানুষের উপর যে অত্যাচার নির্যাতন করতো, স্পেশালী সাইন্টিস্ট দের উপর চার্চ যে নির্যাতন করেছে, তেমনটা তো মুসলিম বিশ্ব মসজিদ করেনি? বা মুসলিমদের খলীফাও করেনি।
খ্রিস্টধর্ম যেভাবে ইউরোপে অপাংক্তেয় হয়েছে, সেভাবে তো ইসলাম বা মুসলিম খলীফা মুসলিম বিশ্বে অপাংক্তেয় হয়নি। বরং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হয়ে মুসলিম খিলাফত ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
আশা করি আমার স্ট্যান্স বুঝতে পেরেছেন।
ধন্যবাদ।