নভেম্বর ১৯১৮, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে বিজয়ী মিত্র বাহিনীগুলো আলোচনার জন্য সমবেত হল। উদ্দেশ্য ছিল তথাকথিত ‘শান্তির’ সংজ্ঞা দেয়া আর যুদ্ধে পাওয়া সম্পদের ভাগাভাগি। প্যারিসের এই সম্মেলন ‘প্যারিস শান্তি আলোচনা ১৯১৯’ নামে পরিচিত যা পুরো বছর জুড়ে স্থায়ী হয়েছিল। সারা বিশ্ব থেকে হাজার হাজার প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন সেখানে। তারা ব্যাবসা বাণিজ্যের সুযোগ, স্বাধীনতা, প্রভাব বিস্তার ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা, আবেদন-নিবেদন আর দর-কষাকষি করেছিলেন।
পাঁচটি মুখ্য চুক্তি করা হয়েছিল, যার সবকটি চুক্তিই ছিল পরাজিত শক্তিগুলির সাথে। তখন বিশ্বে-শান্তি রক্ষার উদ্দেশ্যে ‘লীগ অফ ন্যাশন্স’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, ১৯৪৮ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যা ‘ইউনাইটেড ন্যাশন’ বা জাতিসংঘ হিসেবে রুপান্তরিত হয়। এই চুক্তিগুলোর মধ্যে মূল যে চুক্তিটি পশ্চিমা বিশ্বের উপর প্রভাব ফেলেছিল সেটি হচ্ছে ‘ভার্সাই চুক্তি।’ এর আলোচ্য বিষয় ছিল, জার্মানির উপর কি পরিমাণে ক্ষতিপূরণ আরোপ করা হবে তার বিস্তারিত। বিশেষ করে ১৩২ বিলিয়ন স্বর্ণমুদ্রার সমপরিমাণ আকাশচুম্বী এক ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হয়েছিল (তখন এর পরিমাণ ছিল ৩৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার)।
কিছু বছর পরে হিটলারের উত্থান নিয়ে অনেকেই যুক্তি দেখিয়েছেন যে জার্মানির উপর আরোপিত অত্যন্ত কঠোর শর্তাবলী তার ক্ষমতা গ্রহণে ইন্ধন যুগিয়েছিল। হীনমন্য জার্মানদের মাঝে সে আবির্ভূত হয়েছিল একজন ত্রাণকর্তা রূপে, যে-ই পারবে জার্মানদের হারানো গৌরব আর প্রতাপ ফিরিয়ে আনতে। যা অবশেষে বিশ্বকে ঠেলে দিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অগ্নিমুখে, ইউরোপকে ধ্বংস করেছিল এবং আমেরিকাকে উন্নীত করেছিল পরাশক্তিতে।
ম্যাকমাহন চুক্তি এবং আরব বিদ্রোহ
অটোমান সম্রাজ্য এবং মুসলিম ভূমিগুলোর দিকে নজর দিলে দেখা যায়, ‘আরবের লরেন্স’ নামে পরিচিত টি.ই. লরেন্সের ভূমিকা হতে পারত উপকারী কিছুর সূচনা। সে ছিল তরুণ ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স অফিসার, ঘাঁটি গেড়েছিল মিশরে। অটোমানদের পরাজিত করা যুদ্ধের সময় জেনারেল অ্যালেনবাই এর সান্নিধ্যে কাজ করেছিল এবং আরব ভূমিগুলোর নিয়ন্ত্রন গ্রহণ করেছিল।
লরেন্স আরবি ভাষায় খুব দক্ষ ছিল। ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে সে প্রতিমাসে দুই লাখ পাউন্ড গ্রহণ করত। প্রকৃতপক্ষে তার কাজ ছিল বিভিন্ন আরব জাতীয়তাবাদী দলের সাথে জোট গঠন করে তার গোয়েন্দা তৎপরতা এগিয়ে নেয়া এবং শেষ পর্যন্ত মুসলিম ভূমিতে গৃহযুদ্ধ উস্কে দেয়া।
সে আরবের কিছু জাতিয়তাবাদী দলের সাথে মজবুত সম্পর্ক স্থাপন করেছিল যারা অটোমান সাম্রাজ্যে্কে বিভক্ত করতে চেয়েছিল। নির্দিষ্ট করে বললে মক্কার আমীর শরীফ হোসাইন এর সাথে আঁতাত করেছিল; যিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বংশধর, বংশানুক্রমে যারা ৭০০ বছরেরও বেশি সময় মক্কা শাসন করার মর্যাদা লাভ করেছিল।
১৯১৫ সালে শরীফ ব্রিটিশদের জানিয়ে দিলেন যে, তিনি খিলাফাহর বিরুদ্ধে আরব বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিতে চান। যদিও তিনি প্রাথমিক পর্যায়ে অটোমানদের প্রতি বিশ্বস্ততা প্রদর্শন করছিলেন, কিন্তু তার পুত্র আবদুল্লাহ উদ্বিগ্ন ছিলেন তাদের ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী উদ্দেশ্য নিয়ে। তাই তাঁর পিতাকে ব্রিটিশদের সাথে গোপন আলোচনার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। শরীফের বংশধারা দেখে ব্রিটিশরা বুঝতে পেরেছিল তিনি এমন কেউ যার মাধ্যমেই আরবরা এসবের বৈধতা দেবে এবং তিনি হতে পারবেন তাদের পরিকল্পনার আদর্শ অংশীদার।
শরীফ এবং মিশরে ব্রিটিশ হাই কমিশনার স্যার হেনরি ম্যাকমোহন (যিনি ছিলেন মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটিশ সর্বোচ্চ পদবীর কূটনিতীবিদ) এর মধ্যকার অগণিত পত্র আদানপ্রদানের মধ্যে দিয়ে একটি ঐক্যমত গৃহীত হয় অটোমানদের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যাবার জন্য এবং শরীফের স্বঘোষিত খেলাফতকে অনুমোদন করার জন্য। সেটি ছিল একটি স্বাধীন আরব রাষ্ট্র যা হেজাজ, সিরিয়া এবং মেসোপটেমিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত, বর্তমান মানচিত্রে সৌদি আরবের বেশির ভাগ, সিরিয়া, কুয়েত, ইরাক এবং আরও কিছু অংশ নিয়ে গঠিত ছিল। এই মহাপরিকল্পনা ম্যাকমোহন চুক্তি নামে পরিচিত।
এভাবেই ১৯১৬ সালের জুনে টি.ই. লরেন্সের তত্ত্বাবধানে আরব বিদ্রোহের সূচনা হয়। আরবরা অটোমান বাহিনীকে আক্রমণ করে এবং খুব দ্রুত আরব পেনিনসুলা এবং দামাস্কাসকে সংযুক্তকারী রেলপথ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ফলশ্রুতিতে অটোমানদের অতিরিক্ত বাহিনী আসা বন্ধ হয়ে যায়। অবিলম্বে আরব ভূমি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ১৯১৬ সালের অক্টোবর মাসে শরীফ নিজেকে হেজাযের রাজা ঘোষনা করে।
এরপর আরবরা ম্যাকমোহনের জন্য প্রতীক্ষায় ছিল কখন সে তার ওয়াদা রক্ষা করবে কিন্তু সেই প্রতীক্ষা ১৯১৯ সালের প্যারিস শান্তি আলোচনা পর্যন্ত জারি ছিল; ব্রিটিশরা যে পরস্পরবিরোধী চুক্তি করেছিল অন্য আরেকপক্ষের সাথেও তা জানার আগ পর্যন্ত।
সাইকস-পিকট চুক্তি
নভেম্বর ১৯১৫ এবং মার্চ ১৯১৬ এর মধ্যবর্তী সময়ে ব্রিটিশদের সাথে রাশিয়া এবং ফ্রান্সের একটি গোপন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ভাংগনোন্মুখ অটোমান সাম্রাজ্যকে নিজেদের ভেতর ভাগাভাগি করা। রাশিয়া খুব বেশি চেয়েছিল তুরস্ক এবং আর্মেনিয়া, ফ্রান্সের আগ্রহ ছিল লেবানন এবং সিরিয়ার প্রতি আর বৃটেনের চোখ ছিল ফিলিস্তিন এবং আরবের দিকে যার মাঝে জর্ডান আর ইরাকও অন্তর্ভূক্ত ছিল।
মার্ক সাইকস (বৃটেন) এবং ফ্রানকইস জর্জেস-পিকট (ফ্রান্স) এর নেতৃ্ত্বে বিভিন্ন অনুমান এবং পছন্দের উপর ভিত্তি করে একটা মানচিত্রের চারপাশে জড়ো হয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো বিভিন্ন রেখা টানা হয়। সেখানে অবস্থানরত জাতি-গোষ্ঠী এবং সাম্প্রদায়িক পার্থক্য নিয়ে কোনপ্রকার চিন্তাভাবনা না করেই। সাইকস পিকট কারোরই মুসলিম ভূমি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণাও ছিল না আর কখনও তারা সেখানে ভ্রমণও করেনি। বরং এটা ছিল শুধুমাত্র একটা মানচিটের উপর দাগাদাগি, যা বর্তমান সময়েও ব্যাপকভাবে দুনিয়ার মুসলিম দেশগুলোর সীমানা নির্দেশ করে।
রাশিয়ার সম্মতিতে ১৯১৬ সালের মে মাসে বৃটেন ও ফ্রান্স এর মধ্যে এই গোপন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যাই হোক পরবর্তীতে রাশিয়া অভ্যন্তরীন বিপ্লবের সম্মুখীন হয়েছিল ফলে ১৯১৭ সালে বলশেভিকরা ক্ষমতায় আসে। তাদের চেষ্টা ছিল পূর্বসুরি জার সম্রাটদের ছিদ্রান্বেষণ, সুতরাং সাইক্স-পিকট চুক্তির অন্ধকার দিক সবার সামনে চলে আসে। ফলে রাশিয়া অটোমান সাম্রাজ্যের ভাগ দাবী করার অধিকার হারায়।
চুক্তির বিষয়টি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়লে আপাত বিব্রত ব্রিটিশদের দ্বিমুখীতা দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যায়। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় স্যার হেনরি ম্যাকমাহন পদত্যাগ করেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়া স্যার রেগিনাল্ড উইংগেট প্রতিশ্রুতিগুলি সময়মতো বহাল থাকার ব্যাপারে (কপটভাবে) শরীফকে সন্তুষ্ট করতে সফল হয়েছিল।
বেলফোর ঘোষণা
পূর্বে উল্লিখিত সেই অভ্যন্তরীণ দ্বিমুখীতা নিয়েই ব্রিটিশরা মুসলিম ভূমিগুলো নিয়ে আরও একটি আলোচনা করেছিল। ১৮৯৭ সালে থিয়ডর হারযেল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত The powerful World Zionist Organization (WZO) এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিনে ইহূদিদের জন্য একটি স্বদেশ গড়ে তোলা। ইউরোপজুড়ে ইহূদীরা ক্রমবর্ধমান ইহূদীবিদ্বেষের সম্মুখীন হচ্ছিল এবং এজন্য নিজেদের একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাটা তাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয় হয়ে দাড়িয়ে ছিল।
প্রথমে ব্রিটিশরা জায়োনিষ্টদেরকে পূর্ব আফ্রিকার ৫০০০ বর্গমাইল এলাকাকে তাদের স্বদেশ হিসেবে প্রদান করতে চাইল। এটি ‘ব্রিটিশ উগান্ডা প্রোগ্রাম’ নামে পরিচিত, যদিও বর্তমানে এই ভূমি কেনিয়ার অন্তর্ভূক্ত। এই প্রস্তাব ১৯০৩ সালে WZO এ আলোচিত হয়েছিল এবং অবশেষে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল – লক্ষ্য তখনও ফিলিস্তিনই ছিল। ব্রিটিশ সরকার জায়োনিষ্টদের প্রতি সহায়ক থাকার সম্ভাব্য কিছু কারণ হচ্ছে-
১। ইংল্যান্ডে ইহূদী জনগোষ্ঠী বেশি ছিল এবং তারা ছিল তুলনামূলকভাবে ধনী ও ক্ষমতাবান। তাই রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলই ছিল জায়োনিষ্টদেরকে সহায়তা করার কারণ।
২। WZO এর একজন প্রভাবশালী নেতা কেইম ওয়েইযম্যান ছিল ইউরোপের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের একজন আবার (১৯০৫ সালের দিকে) তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আরথার বালফোরের খুব কাছের লোক। পরবর্তিতে ওয়েইযম্যান বালফোরকে রাজী করিয়েছিল ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করার জন্য।
ওয়েইযম্যানের ব্যবসা ছিল বোমা এবং বিস্ফোরক তৈরির মূল উপাদান এসিটোন (acetone) এর উৎপাদন। যখন বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় তখন এসিটনের দাম এবং সহজলভ্যতা স্বাভাবিকভাবেই কৌশলগত গুরুত্ব পেয়েছিল এবং তাকে উৎপাদন ১০০০% বাড়িয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল।
এ কারণেই কেইন ওয়েইযম্যানকে খুশি রাখা ব্রিটিশদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। যখন তাকে এসি্টোন এর এই চড়া দামের কথা বলা হয়েছিল তার উত্তর ছিল সে অর্থের প্রতি আগ্রহী নয়, তার আগ্রহ শুধু ফিলিস্তিন।
৩। সে সময়ে ব্রিটিশ সহায়তার আরেকটি সম্ভাব্য কারণ ছিল ইহূদীধর্মমতের সাথে খ্রিষ্টানদের একাত্মতা এবং যিশুর প্রত্যাবর্তনের প্রতিশ্রুতি পূরণ। বর্তমানেও অনেক খ্রিষ্টানের কাছে বিষয়টি শিরোধার্য বিশেষত ইভানজেলিকাল খ্রিস্টানদের কাছে যারা ইহুদীদের থেকেও আরও বড় সমর্থক ছিল জায়োনিজম এর। প্রধানমন্ত্রী লয়েড জর্জ (১৯১৬-১৯২২) নিজেই ছিল একজন ইভানজেলিকাল খ্রিষ্টান। ইহুদীদের ফিলিস্তিনে বাস করা নিয়ে তাদের আকাঙ্খা ছিল যে তা ইহূদীবাদ অনুযায়ী চলবেনা বরং তা হবে তাদের মসীহ যিশু (আ’আলাইহিস সালাম) এর প্রত্যাবর্তনের নিয়ামক।
লক্ষ্যনীয় যে, তখন আমেরিকা জায়োনিস্ট এজেন্ডার একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলনা। বস্তুত আমেরিকাতে বসবাসকারী অনেক মূলধারার ইহূদী ফিলিস্তিনকে তাদের স্বদেশ বানানোর আইডিয়াকে উপহাস করত। তারা কয়েক দশক পরে জায়োনিজমের পক্ষ নেয় শুধুমাত্র হিটলারের উত্থানের কারণে।
অটোমান সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যাওয়ার কিছুকাল পরে ব্রিটিশ কেবিনেটে জায়োনিস্টদেরকে এই প্রতিশ্রুত ভূমি প্রদানের ব্যাপারে আলোচনা শুরু হল। আগস্ট ১৯১৭ এর আগ পর্যন্ত এই বাদানুবাদ চলেছিল। কেবিনেট এই প্রস্তাবেরর পক্ষে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু কেবিনেটের একমাত্র ইহূদি সদস্য এডউইন স্যামুয়েল মন্টেগু প্রবল আপত্তি করেছিলেন। তার মতামত ছিল এই পদক্ষেপটি হবে মুসলিম বিশ্বের জন্য বিশাল এক বিপদের ঘনঘটা এবং অভূতপূর্ব সব শত্রুর উদ্ভব ঘটাবে।
এডউইন স্যামুয়েল মন্টেগু একজন প্র্যাকটিসিং ইহুদী হিসেবে জায়ানিজমের প্রভাব সম্পর্কে অবগত ছিলেন। যাকে তিনি ‘ক্ষতিকর রাজনৈতিক ধর্মবিশ্বাস’ নামে আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি প্রশংসা করে বলেছিলেন যে,
আবহমানকাল থেকে মুসলিম এবং ইহুদীরা কখনই পরস্পরের শত্রু ছিল না, আর মুসলিম ভূমিগুলোই খ্রিষ্টানদের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ইহুদিদের আশ্রয়স্থল ছিল– কিন্তু এই পদক্ষেপ এখন শত্রুতা সৃষ্টি করবে।
সে সময় ইহূদীরা ছিল ফিলিস্তিনের মোট জনসংখ্যার কেবলমাত্র ৫-১০ শতাংশ।
যাই হোক মন্টেগুর মতামত ছিল সংখ্যার দিক দিকে লঘু সুতরাং প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী স্যার এডওয়ার্ড বালফোর সাগ্রহে লর্ড রথসচাইল্ড এর কাছে ২ নভেম্বর ১৯১৭ সালে লিখেছিলেন এই সংবাদ ঘোষণা করে দিতে এবং WZO তে পাস করাতে। ঘোষণাপত্রের সংক্ষিপ্ত রূপ
মহামান্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী ফিলিস্তিনে ইহুদীদের ‘স্বদেশ’ প্রতিষ্ঠার পক্ষে থাকবে এবং এই অর্জনকে সহজ করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা জারি রাখবে। পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে যে এমন কিছু করা যাবে না যা নাগরিকদের নিকট পক্ষপাতদুষ্ট মনে হয় এবং ফিলিস্তিনে অ-ইহূদী সম্প্রদায়দের নাগরিক এবং ধর্মীয় অধিকার অথবা অন্য দেশগুলোতে ইহূদীরা যেমন অধিকার এবং রাজনৈতিক মর্যাদা উপভোগ করে তা ক্ষুন্ন করে।
তিনটি পরস্পর বিরোধী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৯১৯ সালের প্যারিস শান্তি আলোচনায় অনেক কিছুই দখল করার ছিল যেখানে ব্রিটিশরা চেয়েছিল সকলকেই খুশি রাখতে। মুসলিমরা ব্রিটিশদের এই বিব্রতকর দ্বিমুখী আচরণে উদ্বেগ্ন ছিল। তখনও তারা এরকম ছিল বর্তমানেও কোন না কোনভাবে তাদের পাশে থাকছে এবং সরলমনে তাদের ফাঁকা বুলিগুলো বিশ্বাস করে যাচ্ছে।
শেষাংশে আমরা ১৯১৯ সালের আলোচনার ফলাফলগুলো নিয়ে আলোচনা করব এবং সেই আলোচনা সংশ্লিষ্ট কিছু অনুসরণীয় বিষয় বিবেচনা করব।
উৎস: Islam21c.com (মূল আর্টিকেল লিন্ক)
অনুবাদক: আক্তার জাহান ফেরদৌস মিথুন
অনুবাদ কপিরাইট © মুসলিম মিডিয়া
মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।
নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।