আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ছিলো একটি শহুরে পরিবেশে, যেখানে গাছপালা নেই বললেই চলে। শহরটিতে যা কতগুলি গাছপালা ছিলো, তাও বড় বড় ভবন আর আকাশচুম্বী অট্টালিকার নিচে ঢাকা পড়ে গিয়েছিলো।

আমি এই লেখাটি আমার স্ত্রী এবং সন্তানদের জন্য উৎসর্গ করছি। কারণ আমরা এমন এক জীবন পরিবর্তনকারী ঘটনার উদ্যোক্তা ছিলাম, যেখানে আমাদেরকে ঘিরে ছিলো এমনই সুন্দর সুন্দর গাছপালা। যত উঁচুতেই তাকাই, কেবল গাছ আর গাছ। সেই ঘটনাটি আমাকে গাছপালার গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলো। ইসলামে কত সুন্দরভাবে এই গুরুত্ব আলোচিত হয়েছে, সেটিও। তখন আমি আরো উপলব্ধি করেছিলাম যে, কেন জান্নাতের প্রকৃতিকে অপরূপ করা হয়েছে অকল্পনীয় সুন্দর সুন্দর সব গাছপালা দিয়ে।

IIRT Arabic Intensive

গাছপালা শুধু প্রকৃতিতেই নয়, বরং কুরআনেও বিরাট জায়গা জুড়ে রয়েছে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন (ভাবার্থ):

তুমি কি দেখোনি যে, আল্লাহকে সাজদাহ করে যা কিছু আছে নভোমণ্ডলে, যা কিছু আছে ভূমণ্ডলে, সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং অনেক মানুষ? আবার অনেকের উপর অবধারিত হয়েছে শাস্তি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন, তাকে কেউ সম্মান দিতে পারে না। আল্লাহ যা ইচ্ছা, তা-ই করেন। [সূরাহ আল-হাজ্জ (২২):১৮]

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টির সঙ্গে গাছের কথাও উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আমাদের সাথে সরাসরি কিছু আদান প্রদান করে না বলে আমরা প্রায়শই সেই গাছপালা, লতাগুল্মকে উপেক্ষা করি।

কথায় বলে, “যদি আগামীকালে বিশ্বাস করো, তাহলে আজ একটি গাছ লাগাও।” গাছপালা প্রকৃতি এবং বন্য জীবনের সাথে সম্পৃক্ত। এই গাছের দ্বারা সংঘটিত অক্সিজেন চক্রের মাধ্যমেই আল্লাহ্‌ এই সুন্দর পৃথিবীকে করেছেন জীবনের জন্য উপযুক্ত। এটি যেন তাই পৃথিবীর ফুসফুস। দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, ধূমপানের জন্য যেমন আমাদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনিভাবে পরিবেশ দূষণও গাছপালার ক্ষতিসাধন করছে। চলমান এই অবস্থার দরুণ আমাদের বনাঞ্চলও কমে যাচ্ছে।

গাছপালা এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ ইসলামপ্রদত্ত একটি চমৎকার ধারণা। যদিও মাঝেমাঝে আমরা তা উপেক্ষা করি। এই লেখাটির মাধ্যমে আমি আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার সেই সৃষ্টি সম্পর্কে আমাদের ধারণার পরিবর্তন করতে চেয়েছি। পৃথিবীও আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার একটি সৃষ্টি। আমাদের দায়িত্ব হলো ঠিক সেভাবেই এর রক্ষণাবেক্ষণ করা, যেভাবে কুরআন এবং নবী ﷺ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন,

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং একে অন্যের উপর মর্যাদা সমুন্নত করেছেন, যাতে তোমাদেরকে এ বিষয়ে পরীক্ষা করেন, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন। আপনার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তিদাতা এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, দয়ালু।  [সূরাহ আল-আন’আম (৬): ১৬৫]

কুরআনে প্রথম মানব সৃষ্টির ঘটনার সাথেই রয়েছে নিষিদ্ধ গাছের সেই বিখ্যাত ঘটনা। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আদাম এবং তাঁর স্ত্রীকে (‘আলাইহুমাসসালাম) একটি নির্দিষ্ট গাছ ছাড়া অন্য সবকিছুর কাছে যাওয়া এবং উপভোগ করার অনুমতি দিয়েছিলেন। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁদেরকে জান্নাতে বসবাস করার অনুমতি দেওয়ার আগেই এই নিষেধ করেছিলেন:

এবং আমি আদামকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাকো এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাকো। কিন্তু এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে। [সূরাহ আল-বাকারাহ (২): ৩৫]

একসময় শয়তান তাঁদের প্রতারিত করে। শয়তানের প্রথম প্রতারণা ছিলো একটি গাছকে নিয়ে। সুবহানাল্লাহ, তাই স্পষ্টতই ইসলামের ইতিহাসে গাছের একটি ভূমিকা রয়েছে।

এমনকি কুরআনে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আল্লা মন্দ ও ভালো কাজের উপমা হিসাবে গাছকে ব্যবহার করেছেন। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন (ভাবার্থ):

তুমি কি লক্ষ করো না, আল্লাহ তা’আলা কেমন উপমা বর্ণনা করেছেন? পবিত্র বাক্য হলো পবিত্র বৃক্ষের মতো। তার শিকড় মজবুত এবং শাখা আকাশে উত্থিত। তার প্রতিপালকের আদেশে তা সবসময় ফল প্রদান করে। মানুষদের জন্য আল্লাহ্‌ দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেন, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। মন্দ বাক্য মন্দ বৃক্ষের সাথে তুলনীয়। ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগেই যাকে মূল থেকে উপড়ে ফেলা হয়েছে। তার কোনো স্থায়িত্ব নেই। [সূরাহ ইবরাহীম (১৪): ২২-২৪]

খেজুর গাছ থেকে জলপাই গাছ পর্যন্ত কুরআনে যত বিচিত্র প্রজাতির উদ্ভিদের কথা এসেছে, তার থেকেও এটি আরো বেশি বৈচিত্র্যময়।

মুমিন ও মুনাফিকদের বর্ণনা করতে নবী ﷺ গাছকে উপমা হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

আবু হুরায়ারা (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন

মুমিনের দৃষ্টান্ত শস্যক্ষেতের মতো। বাতাস সবসময় তাকে আন্দোলিত করে। অনুরূপভাবে মুমিনের উপরও সবসময় বিপদাপদ আসতে থাকে। আর মুনাফিকের দৃষ্টান্ত দেবদারু গাছের মতো। মূল উৎপাটন হয়ে যায়; কিন্তু সেটা আন্দোলিত হয় না। [মুসলিম, ৫০২৪]

কুরআনে আল্লাহ আমাদের বলেছেন গাছ থেকে প্রাপ্ত নি’য়ামাতগুলো ব্যবহার করতে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন (ভাবার্থ):

এবং ওই বৃক্ষ সৃষ্টি করেছি, যা সিনাই পর্বতে জন্মায় এবং আহারকারীদের জন্যে তৈল ও ব্যঞ্জন উৎপন্ন করে। [সূরাহ আল-মুমিনুন (২৩): ২০]

নবী মুহাম্মাদ ﷺ আয়াতটিকে আরো একটু ব্যাখ্যা করেন, যা সম্পর্কে আবু আসীদ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বর্ণনা করেন:

খাও এবং তোমাদের ত্বক ও চুলে ব্যবহার করো। কারণ এই তেল এসেছে এক নি’য়ামাতপূর্ণ গাছ থেকে। [আত-তিরমিযি, ১৭৭৫]

তারপরও আমরা এই অসংখ্য উপকারে ভরা নি’য়ামতকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করি।

দুনিয়া এবং আখিরাতের সব ভালো কিছুর সাথেই গাছ সম্পৃক্ত। এমনকি জান্নাতের পোশাকগুলোও আসবে গাছ থেকে। নবী ﷺ বলেছেন:

তুবা জান্নাতের একটি গাছ, যা ১০০ বছরের পথের সমান দীর্ঘ। জান্নাতবাসীদের পোশাক তৈরি হবে এই গাছের বৃতি (ফুলের বাইরের আবরণ) থেকে। [ইবনে হিব্বান এবং সাহীহ আল জামী, ৩৯১৮]

হাদীসটিকে খুব সহজেই আমাদের জীবনের সাথে মেলানো যায়। কারণ আমরা যেসব পোশাক পরিধান করি, সেগুলোও গাছ থেকে আসে। হোক তা শার্ট বা জিন্স।

প্রকৃতি এবং গাছপালার সাথে আমাদের নবীর ﷺ ছিলো এক সুন্দর সম্পর্ক। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনে সেই গাছের কথাও উল্লেখ করেছেন যার নিচে নবী ﷺ তাঁর সাহাবাগণের (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম) কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন আনুগত্যের এবং তাঁকে পরিত্যাগ না করার। এটি ঘটেছিল হুদায়বিয়ার সন্ধির সময়, যখন তিনি মুশরিকদের প্রতারণার কথা শুনতে পেলেন। এই গাছটি সম্পর্কেও কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে (ভাবার্থ):

আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা বৃক্ষের নিচে আপনার কাছে শপথ করলো…। [সূরাহ আল-ফাতহ (৪৮): ১৮]

আরেকটি বর্ণনায় রয়েছে একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে তিনি ﷺ খুতবা দিতেন:

জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন, নবী ﷺ জুমু’আর দিন একটি গাছের নিচে (অথবা একটি খেজুর গাছের নিচে) দাঁড়াতেন। আনসারদের মধ্যকার একজন মহিলা অথবা পুরুষ জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আল্লাহর রাসূল, আপনার জন্য একটি মিম্বর তৈরি করা কি আমাদের উচিত নয়?” তিনি বলেন, “তোমাদের ইচ্ছা।” তাই তাঁরা একটি মিম্বর তৈরি করলেন। যখন পরবর্তী জুমু’আবার আসলো, তখন তাঁকে ﷺ মিম্বরে দেখা গেলো। গাছটি তখন ছোট শিশুর মতো কাঁদছিলো। রাসূল ﷺ নেমে আসলেন এবং কান্নারত গাছটিকে জড়িয়ে ধরে রাখলেন যতক্ষণ না সে শান্ত হলো। জাবির (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন, “এটি কাঁদছিলো সেই যিকির (আল্লাহর স্মরণ) এর জন্য, যা সে আগে শুনতে পেতো।” [আল-বুখারী, ৩৩১৯]

গাছ হতে পারে আমাদের জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম। আমাদের নবী ﷺ বলেছেন:

প্রতিটি মুসলিম যে কিনা গাছ রোপণ করে অথবা জমিতে বীজ বপন করে, আর সেখান থেকে কোনো মানুষ, পাখি অথবা পশু খায়, তা সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে দান হিসাবে পরিগণিত হয়। [বুখারী ও মুসলিম]

যেখানে রাসূল ﷺ আমাদের গাছ রোপণ করতে বলেছেন, সেখানে আমরা উল্টো তা উপড়ে ফেলছি। আমরা কেমন উম্মত? আমরা এমন একটি সময়ে বাস করছি, যখন সবকিছু হয়ে পড়েছে যন্ত্রনির্ভর ও পরিবর্তনশীল। কীভাবে আমরা পরিবেশের সাথে সম্পর্ক রাখবো, সে সম্পর্কে নবী মুহাম্মাদ ﷺ আমাদের পরিষ্কার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে:

ফল সমৃদ্ধ গাছ উপড়ে ফেলো না, পুড়িয়ে ফেলো না অথবা কেটে ফেলো না। [আল-মুয়াত্তা]

এগুলো সব স্পষ্ট দিকনির্দেশনা এবং যদি আমরা এগুলো অনুসরণ করি, তবে আজকের এই দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিবেশেও তা আমাদের সহায় হবে।

জান্নাতে প্রবেশের পর গাছ হবে পুরষ্কারের একটি মাধ্যম। জাবির (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন

যে ‘সুবহানাল্লাহীল আযীম ওয়া বিহামদিহি’ (সমস্ত সম্মান ও প্রশংসা সর্বশক্তিমান আল্লাহর) বলবে, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ রোপণ করা হবে।

আমরা কি চাই যে, আমাদের জান্নাতের জমিগুলো ফাঁকা পড়ে থাকুক?

বিজ্ঞান থেকে আমরা জেনেছি উদ্ভিদ সরাসরি আমাদের কত উপকার করে। তাই গাছ লাগানোর জন্য কিছু সময় বরাদ্দ রাখা নিশ্চিত করুন। এমনকি তা বছরের একটি দিন হলেও। অথবা পরিবারকে এই কাজে সহযোগিতা করুন। গাছপালা অনেক বাস্তুতন্ত্রের অংশ এবং বাস্তুতন্ত্রকে বসবাসের উপযুক্ত করণেও গাছপালার রয়েছে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান। অনেক প্রবাদে শক্তি বোঝাতে গাছের মূলের উল্লেখ আছে। কারণ গাছ শুধুমাত্র আমাদের খাদ্য এবং ছায়াই দেয় না, এটি ভূমিকে দৃঢ়তাও দান করে। একজন পিতা হিসেবে আমি আমার পরিবারকে, বিশেষত আমার সন্তানদের এই সুন্দর সৃষ্টির গুরুত্ব বোঝাতে চাই, যাতে তারাও এরকম মূল্যবোধ নিয়ে বড় হতে পারে।

নিচের কাজগুলো আপনি আপনার পরিবার এবং সমাজের অন্যান্যদের নিয়ে করতে পারেন:

■ এমন একটি ইভেন্ট তৈরি করুন বা এমন একটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করুন, যেখানে শহরের প্রয়োজনীয় স্থানে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি থাকবে।

■ আপনার শহরের পার্কগুলোতে ফুল বা অন্যান্য গাছ লাগান।

■ বন উজাড়ের বিপক্ষে জনসচেতনতা সৃষ্টি করুন।

■ গাছের সৌন্দর্য এবং মিরাকেল উপভোগ করতে পরিবারকে সাথে নিয়ে ঝটিকা ভ্রমণে বের হোন।

■ পরিবেশ নিয়ে অলোচনা করতে আপনার মাসজিদে পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করুন।


উৎস: মুসলিম ম্যাটার্স (মূল আর্টিকেল লিংক)

অনুবাদক: আফরিন আফরোজা নূপুর, মুসলিম মিডিয়া প্রতিনিধি

অনুবাদ কপিরাইট © মুসলিম মিডিয়া

মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।

নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।

Loading Facebook Comments ...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Loading Disqus Comments ...
IIRT Arabic Intensive