সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস কতটুকু যৌক্তিক? এই বিশ্ব জগতের স্রষ্টা কি কেউ আছে?
কেউ যদি কোন এক অজানা দ্বীপে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং মানুষের পায়ের চিহ্ন দেখে তবে সে অবশ্যই চিন্তা করবে এই দ্বীপে আমার আগে কেউ এসেছিল। সমুদ্রের ঢেউ এসে ‘বাই চান্স’ মানুষের ‘পায়ের চিহ্ন’ তৈরী করার চিন্তাটা অবশ্যই অদ্ভূদ হবে। গ্রীক দার্শনিক প্লেটো এই যুক্তিই দাঁড় করাচ্ছে।
মানব সৃষ্টির শুরু থেকেই পৃথিবীর মানুষ স্রষ্টায় বিশ্বাসী ছিল, এটাই যৌক্তিক যেহেতু পৃথিবীর বেশীরভাগ মানুষই আজও স্রষ্টায় বিশ্বাসী। বরং নাস্তিকতার শুরু মূলত এই আধুনিক যুগে। বাস্তব অভিজ্ঞতা অন্তত এটাই বলে যে, স্রষ্টার বিশ্বাস মানুষের মধ্যে হঠাত করে আসেনি বরং ‘স্রষ্টা নেই’ এই বিশ্বাসটাই এসেছে এই শতাব্দীতে। আধুনিক কিছু গবেষণাও এই ফলাফল দেখায় যে মানুষের মস্তিষ্কের একটি অংশ মানুষকে স্রষ্টায় বিশ্বাসী করে তোলে। এই বিষয়ে পত্রিকা ডেইলিমেইল এবং দ্যা ইন্ডেপিন্ডেন্ট এর নিউজ গুলো দেখতে পারেন। এছাড়া এই লিখাটিও পড়তে পারেন।
কোরআন নাস্তিকদের এই ব্যাপারে যেই চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে তা হলো সূরা তূরের ৩৫ নং আয়াত।
“তারা কি কোন স্রষ্টা ছাড়া এমনি এমনিই সৃষ্টি হয়ে গেছে, না তারা (বলে যে, তারা) নিজেরাই (নিজেদের) স্রষ্টা। না তারা নিজেরা এই আকাশমন্ডলী ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছে” (সূরা তূর ৫২:৩৫-৩৬)
এই আয়াতে ‘লজিক’ এবং যৌক্তিক ‘কারণ’ সহকারে কোন কিছু ‘সৃষ্ট’ হওয়ার সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে। মূলত এর বাইরে কোন যৌক্তিক কারণ নেই।
- সম্ভাবনা-১ঃ মানুষ ‘শূন্য’ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। এটা যুক্তিতে টিকেনা। কারণ, NOTHING CAN NOT CREATE ANYTHING! মূলত নাস্তিকেরা এই দাবীই করে থাকে।
- সম্ভাবনা-২ঃ মানুষ নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে। এটাও যুক্তি হীণ। কারণ, কেউ নিজেকে সৃষ্টি করতে হলে, আগে নিজেকে অস্তিত্বে আনতে হবে। তাই এটা যুক্তি বিহীন। শুধুমাত্র অন্যকেউ অলরেডী অস্তিত্বে আসলে সে দ্বিতীয়জনকে সৃষ্টির যৌক্তিকতা আসবে।
- সম্ভাবনা-৩ঃ অনেক পর্ব কিংবা ধাপ পার হয়ে মানুষের আজকের এই অবস্থান। মানে অনেক ‘CAUSE’ & ‘EFFECT’ এর ফল মানুষ। মানে, C1 এসেছে C2 থেকে, C2 এসেছে C3 থেকে, এরুপ C3 এসেছে C4 থেকে। এভাবে C4 এসেছে CN থেকে। কিন্তু, এই ভাবে চেইন (chain) চলতে থাকলে, বস্তুত CN হবে অপরিসীম এবং অনির্দিষ্ট। অথবা বলা যায়, CN নিজেই কখনো অস্তিত্বে আসেনি, তাই C1 এর অস্তিত্বও অস্বীকার করা হয়, মানে মানুষের নিজের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা হয়। এরিস্টটল তাই এরুপ INFINITE CAUSE & EFFECT থেকে মানব সৃষ্টি অসম্ভব বলেই সাভ্যস্ত করেছেন।
তাই যুক্তি বলে, শুধুমাত্র মানুষ কিংবা এই বিশ্বের অস্তিত্বে তখনই আসা সম্ভব যখন মানুষকে কিংবা এই বিশ্বকে এমন কেউ সৃষ্টি করেছে যে নিজে ‘সৃষ্ট’ নয়। এটাই যুক্তিযুক্ত। তাই স্রষ্টায় বিশ্বাস কোন অন্ধ বিশ্বাস নয় যেই রকম আমাদের দেশের মানুষ মনে করে থাকে।
মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।
নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।