।।১ম চিত্র।।
১মঃ আরে দোস্ত, আজকে ভার্সিটিতে ‘ক’ ব্যান্ড আসতেছে। জমজমাট এক কানসার্ট হবে। আসবি না?
২য়ঃ আসব না মানে। আবশ্যই আসব।
।।২য় চিত্র।।
১মঃ দোস্ত আজকে ভার্সিটিতে ‘ক’ ব্যান্ড আসতেছে। জমজমাট এক কানসার্ট হবে। আসবি না?
২য়ঃ না।
১মঃ কেন?
২য়ঃ কেন তুই জানিস না, এটা ইসলামে হারাম।
১মঃ আরে এতকাল জেনে আসলাম কোন সমস্যা নেই। আর তুই নতুন কথা শুরু করছিস …
এই হল বর্তমান ইয়ো ইয়ো তরুনদের অবস্থা। আসলে এই মুসলমান যুবকেরা গান শোনায় বিশেষভাবে আসক্ত। কেন বিশেষভাবে বললাম সেটা একটু পরে বলতেছি। তার আগে চলুন আমাদের ভিতরের অবস্থাটা একটু দেখে আসি।
অনেক ভাইকেই দেখা যায় সালাত পড়েন, রোযা রাখেন কিন্তু গান শোনায় আসক্ত। সালাত পড়ে, রোযা রাখে বলেই যে তার দ্বারা খারাপ কাজ হতে পারে না, আমি সেটা বলছি না, কারন কেউ ইসলামের কোন হুকুম-আহকাম পালন করলেই যে তার ঈমান সর্বোচ্চ পর্যায়ের হবে, এটার কোন দালিলিক প্রমান আমার জানা নেই। আমি বলছি এজন্য যে, তারা গান শোনাকে কোন পাপের কাজ মনেই করেন না। এটা কিন্তু একটা ভয়াবহ ব্যাপার কারন সে ইসলামের হারাম বিষয়কে হালাল মনে করছে এবং তার এই হারাম কাজ দ্বারা অনেকে উৎসাহিত হচ্ছে। ফলে এই ব্যাপারটি ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়ছে। এজন্যই বর্তমান যুবকদের গান শোনা ‘বিশেষ’ আসক্তি।
আসলে এই বিশেষ আসক্তির শুরুটা হয় কিন্তু “গান শুনলে ভালো লাগে বা শান্তি লাগে”এই টাইপের কথাবার্তা দিয়ে। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার হল, গান আসলে আপনাকে শান্তি দিচ্ছে না। কিছু গান আপনাকে কিছু সময়ের জন্য ব্যস্ত রাখে আর কিছু গান আপনার ইমোশন নিয়ে খেলা করে। যেমন ধরুন অনেকেই বলেন কষ্টের সময় গান শুনলে মন ভালো হয়। আসলে যা হয় তা হল এই সময়ে গান আপনার মনকে একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘটে যাওয়া পূর্বের ঘটনাতে বা জেগে দেখা স্বপ্নের দুনিয়ায় নিয়ে যায়। আপনার মনকে একটি নির্দিষ্ট ঘটনায় আটকে রাখে। ফলে অনেক সময় মনে হয় আপনার মনে হতে পারে আপনার মন শান্তিতে আছে কিন্তু আসলে যে সময় আপনার আরো প্রত্যয়ী হবার কথা ছিল, সামনের দিনিগুলোতে আধিক পরিশ্রমের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবার কথা ছিল, আল্লাহর উপর ভরষা রেখে সামনে এগিয়ে যাবার কথা ছিল, সেই পথ রুদ্ধ করে দেয়।
আর এর চেয়েও বড় ব্যাপার হল কোরআন সুন্নাহ। আপনি যদি একজন মুসলমান হন তাহলে আপনাকে আবশ্যই আল্লাহ্ ও তার রাসুলের ﷺ এর আদেশ মানতে হবে। কারন আল্লাহ্ তা’আলা কোরআনে বলছেন-
“আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হয়।” [কোরআন, ৩৩:৩৬]
“আর তোমরা সে গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, যা আমি অবতীর্ণ করেছি সত্যবক্তা হিসেবে তোমাদের কাছে। বস্তুতঃ তোমরা তার প্রাথমিক অস্বীকারকারী হয়ো না আর আমার আয়াতের অল্প মূল্য দিও না। এবং আমার (আযাব) থেকে বাঁচ।” [কোরআন, ২:৪১]
“রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।” [কোরআন, ৫৯:৭]
তাহলে একজন মুসলমান কোরআন বা হাদিসে কোন কিছুর নির্দেশনা প্রাপ্ত হলে সে কখনোই তা প্রত্যাখ্যান করতে পারে না।
আবার কোরআনে সূরা লোকমানের ৬ নং আয়াতে আল্লাহ্ বলেন-
“একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।”
ইবন কাছির রহিমাহুল্লাহ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন
“এখানে বর্নিত হচ্ছে যে, পাপী ও দুষ্ট লোকেরা আল্লাহর কিতাব শুনে কোন উপকার লাভ করত না, বরং গান বাজনা, ঢোল–করতাল নিয়ে মত্ত থাকতো। এ আয়াত সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবন মাসূদ (রাঃ) বলেন, “আল্লাহর কসম! এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে গান-বাজনা ও রাগ-রাগিনী নিয়ে সর্বক্ষন লিপ্ত থাকা।” তাকে এ আয়াতের ভাবার্থ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি তিনবার কসম করে বলেন, “এর উদ্দেশ্য হলো গান-বাজনা ও রাগ-রাগিনী।” আব্বাস (রাঃ), জাবির (রাঃ), ইকরামা (রঃ), সাঈদ ইবন জুবাইর (রঃ), মুজাহিদ (রঃ), মাকহূল (রঃ), আমর ইবন শুয়ায়েব (রঃ) প্রমূখ গুরুজনেরও এটাই উক্তি।”
“এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আব্বাস রাঃ বলেন, “এটা দ্বারা গান গাওয়া বুঝায়।” মুজাহিদ রঃ বলেন এটা দ্বারা তবলা বাজানো বোঝায়।” [তাফসির আল তাবারী, ২১:৪০ (ইংরেজী ভার্সন)]
“আল হাসান আল বসরি (রঃ) বলেন –এই আয়াত গান ও বাদ্যযন্ত্র সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।” [তাফসির ইবন কছির]
“আল সাদী (রঃ) বলেন-হারাম কথাবার্তা, আজেবাজে কথা, মিথ্যাকথা এবং সব অর্থহীন কথা যা কুফর ও আল্লাহর অবাধ্যতাকে উৎসাহিত করে; এমন মানুষের কথা যারা সত্যকে মিথ্যা বানানোর জন্য কথা বলে এবং সত্যকে প্রতিহত করার জন্য মিথ্যার সমর্থনে কথা বলে; এবং গীবত করা, কুৎসা রটনা করা, অপমান করা, অভিশাপ দেয়া, গান গাও্য়া, শয়তানী বাদ্যযন্ত্র; এবং বাদ্যযন্ত্র যার কোন আধ্যাত্মিক বা পার্থিব লাভ নেই সবই এর অন্তর্ভুক্ত।” [তাফসির আল সাদী, ৬:১৫০ (ইংরেজী)]
এত সুস্পষ্ট কোরআনের বানী থাকা সত্বেও আজকাল দেখা যায় বাবা মা তার মেয়েকে নাচ গান শিখায় যেন তাদের নর্তকী বানাবে। অনেকে আবার গানকেই অর্থ উপার্জনের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এ প্রসংগে রাসূল ﷺবলেন-
“গায়িকা দাসী বিক্রি করবে না। এবং কিনবেও না। তাদের গান শিক্ষা দিবে না। এদের ব্যবসায়ে কোন কল্যাণ নাই। এদের মূল্য হারাম। এদের মত লোকদের ব্যাপারেই এই আয়াত নাযিল হয়েছেঃ
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ
মানুষের মধ্যে কেউ কেউ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অসার বাক্য ক্রয় করে এবং আল্লাহর পথকে ঠাট্রা-বিদ্রুপ করে। ওরা তারাই, যাদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি। (আল কোরআন, ৩১:৬)” (কুতায়বা (রঃ) … আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত)
[সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), ১২৮৫]
শুধু তাই নয় বর্তমানে যেকোন অনুষ্ঠানে না-গানের আয়োজন করা হয়। আর শহরের বিভিন্ন স্থানে তৈরী হয়েছে বার যেখানে মদ পান করার সাথে সাথে সাথে নাচের আসর বসে। এ প্রসঙ্গে রাসূল ﷺ ভবিষ্যতবানী করেন-
“আমার উম্মতের কতক লোক মদের ভিন্নতর নামকরণ করে তা পান করবে। (পাপাসক্ত অবস্থায়) তাদের সামনে বাদ্যবাজনা চলবে এবং গায়িকা নারীরা গীত পরিবেশন করবে। আল্লাহ তা‘আলা এদেরকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দিবেন এবং তাদের কতককে বানর ও শূকরে রূপান্তরিত করবেন।”( আবূ মালেক আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত)
[ইবনে মাজাহ(ইফাঃ): ৪০২০, আবূ দাউদ ৩৬৮৮, আহমাদ ২২৩৯৩]
আর ওই যে প্রথমে বলেছিলাম যে মানুষ আজ গান বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করে। এই প্রসঙ্গেও রাসূলুল্লাহ ﷺ ভবিষ্যতবানী করেছিলেন-
“আমার উম্মাতের মধ্যে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশমী কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল জ্ঞান করবে।”
[সহীহ বুখারী (তাওহীদ): ৫৫৯০, (ইফাঃ): ৫০৭৬]
এছাড়া আমরা যদি সাহাবীদের জীবনীর দিকে তাকাই তাহলে আমরা দেখতে পাব তারা গান-বাজনা থেকে কতটা দূরে থাকতে চাইতেন। যেমন-
“মুজাহিদ (রঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সাথে ছিলাম। হঠাৎ তিনি তবলার আওয়াজ শুনতে পান। তিনি তার উভয় কানে তার দু’ আঙ্গুল ঢুকিয়ে সরে পড়েন। তিনি তিনবার এরূপ করলেন। অতঃপর তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ﷺ এরূপ করেছেন। তবলার কথা মুনকার তবে রাখালের যামারাহ বাশীর শব্দে সহীহ” [সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৯০১]
তবে হাদিসের ভিত্তিতে ইসলামে একটি বাদ্যযন্ত্রকে হালাল হিসেবে পাওয়া যায়। সেটা হল দফ। এ পর্যায়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন আসতেছে। যেমন- দফ কী? দফ কী যেকোন সময়ই ব্যবহার করা যাবে? ইত্যাদি ইত্যাদি … ধৈর্য ধরে পড়ুন, ইনশাআল্লাহ্ উত্তর পেয়ে যাবেন।
আসলে দফ হল একমুখ খোলা অপর প্রান্তে চামড়া লাগানো তবলার মত যন্ত্র এবং দেখতে পাশের ছবির মত।
তবে দফ আসলে সবসময় ব্যবহারের করা যায় না। হাদিস থেকে আনন্দের দিন, বিবাহ, কারো দূর থেকে ফিরে আসার সময় এই তিনটি সময়ে দফ ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া যায়।[১]
১.আনন্দের দিনঃ
“আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন আমার ঘরে) আবূ বকর (রাঃ) এলেন তখন আমার কাছে আনসারী দু’টি মেয়ে বু‘আস যুদ্ধের দিন আনসারীগণ পরস্পর যা বলেছিলেন সে সম্পর্কে গান গাইছিল। তিনি বলেন, তারা কোন পেশাদার গায়িকা ছিল না। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ঘরে শয়তানী বাদ্যযন্ত্র। আর এটি ছিল ‘ঈদের দিন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবূ বাকর! প্রত্যেক জাতির জন্যই আনন্দ উৎসব রয়েছে আর এ হলো আমাদের আনন্দের দিন।” [সহীহ বুখারী (তাওহীদ): ৯৫২]
“আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন তখন আমার নিকট দু’টি মেয়ে বু‘আস যুদ্ধ সংক্রান্ত গান গাইছিল। তিনি বিছানায় শুয়ে পড়লেন এবং চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখলেন। এ সময় আবূ বাকর (রাঃ) এসে আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, শয়তানী বাদ্যযন্ত্র(দফ) বাজান হচ্ছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট! তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, তাদের ছেড়ে দাও। অতঃপর তিনি যখন অন্য দিকে ফিরলেন তখন আমি তাদের ইঙ্গিত করলাম আর তারা বেরিয়ে গেল।” [সহীহ বুখারী (তাওহীদ): ৯৪৯]
২. বিবাহঃ
“আহমদ ইবনু মানী (রঃ) ….. মুহাম্মাদ ইবনু জুমাহী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন হারাম (ব্যভিচার) ও হালাল (বিবাহ) এর মধ্যে পার্থক্য হলো ঘোষণা ও দফ ব্যবহার।” [ইবনু মাজাহ, ১৮৯৬, তিরমিজী, ১০৮৮]
“রুবায়ই বিন্তু মু‘আওয়িয (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমার বাসর রাতের পরদিন সকালে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন এবং তুমি (খালিদ ইবনু যাকওয়ান) যেমন আমার কাছে বসে আছ ঠিক সেভাবে আমার পাশে আমার বিছানায় এসে বসলেন। তখন কয়েকজন ছোট বালিকা দফ বাজিয়ে বাদরে নিহত শহীদ পিতাদের প্রশংসা গীতি আবৃত্তি করছিল। শেষে একটি বালিকা বলে উঠল, আমাদের মাঝে এমন একজন নাবী আছেন, যিনি জানেন, আগামীকল্য কী হবে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমন কথা বলবে না, বরং আগে যা বলেছিলে তাই বল।” [সহীহ বুখারী (তাওহীদ): ৪০০১]
৩. কারো দূর থেকে ফিরে আসার সময়ঃ
“বুরাইদাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কোন এক যুদ্ধাভিযানে যান। তিনি ফিরে এলে এক কৃষ্ণবর্ণা মেয়ে এসে বলে, হে আল্লাহর রাসূল! আমি মানৎ করেছিলাম যে, আপনাকে আল্লাহ তা’আলা হিফাযাতে (সুস্থাবস্থায়) ফিরিয়ে আনলে আপনার সম্মুখে আমি দফ বাজাব এবং গান করব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি সত্যিই যদি মানৎ করে থাক তবে দফ বাজাও, তা না হলে বাজিও না। সে দফ (এক মুখ খোলা ঢোল) বাজাতে লাগল। এই অবস্থায় সেখানে আবূ বাকর (রাঃ) এলেন এবং সে দফ বাজাতে থাকে, তারপর ‘আলী (রাঃ) এলেন এবং সে ওটা বাজাতে থাকে। তারপর উসমান (রাঃ) এলেন, সে সময়ও সে তা বাজাতে থাকে। তারপর উমর (রাঃ) এসে প্রবেশ করলে সে দফটি তার নিতম্বের নীচে রেখে তার উপর অবস্থান করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উমার! তোমাকে দেখলে শাইতানও ভয় পায়। আমি উপবিষ্ট ছিলাম আর ঐ মেয়েটি দফ বাজাচ্ছিল। পরে আবূ বাকর এসে প্রবেশ করলে সে সময়ও সে তা বাজাতে থাকে। তারপর ‘আলী প্রবেশ করলে সে সময়ও সে তা বাজাতে থাকে। এরপর উসমান এসে প্রবেশ করলে তখনও সে তা বাজাতে থাকে। অবশেষে তুমি এসে যখন প্রবেশ করলে, হে উমার! সে সময় সে দফটি ফেলে দিল।” [সূনান আত তিরমিজী, ৩৬৯০]
এইসব হাদিস দ্বারা বোঝা যায় যে উপরিউক্ত তিনটি ক্ষেত্রে দফ বাজানো যাবে। অনেক স্কলার জন্মদিন ও খৎনা করার সময় দফ বাজানোর পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আবার অনেকে সব অনন্দের মুহুর্তে যেমন কোন অসুস্থ রোগীর আরোগ্য লাভের সময় দফ বাজানোর অনুমতি দিয়েছেন।
আবার অনেক স্কলার যেমন ইবন তাইমিয়্যাহ (রঃ), ইবন হাজার (রঃ), বিন বাজ (রঃ) এর মতে মেয়েদের ছাড়া ছেলেদের দফ বাজানো হারাম।
সুতরাং যেখানে দফ বাজানোই যাবে মাত্র তিনটি মুহুর্তে [২] সেখানে আমরা কি করে সেখানে জাহিলিয়াতের গান বা বাদ্যযন্ত্র দ্বরা পরিবেশিত গান শুনতে পারি বা শোনার চিন্তা করতে পারি?
আল্লাহই ভালো জানেন।
[১] [২] IslamQA
মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।
নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।
ekhane gan ar badyjontro,ei duita concept ke guliye fela hoyeche… Badyjontro chara Islami gan kiI haram? ekhane sudhu ekpeshe mot gulokei sthan deya hoyeche. biporit mot gulo nei keno?
হ্য হালাল। তবে কিছু শর্ত আছে।
http://islamqa.info/en/11563 এই ফাতওয়াটায় বিস্তারিত বলা আছে। আর যদি বলেন দফ বাজিয়ে কি হালাল হবে? তার উত্তরে আমি বলব যে, হালাল হবে না। কারণ হিসেবে http://islamqa.info/en/20406 এই ফাতওয়াটা পড়লেই বুঝবেন ইনশা আল্লাহ্।
আল্লাহই ভালো জানেন।