আমি মদিনাতে পড়াশুনা করেছি। তাই তারা আমাকে বললো “আমাদের স্কুলে এসে ইসলামিক স্টাডিজ পড়িয়ে যান”। আপনার যদি শিক্ষক হিসেবে পড়ানোর অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে কাজটা করা সহজ না। দুনিয়ার সমস্ত বিষয় সম্পর্কে আপনার জানা থাকতে পারে কিন্তু যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকলে আপনি হবেন একজন ব্যর্থ শিক্ষক। আপনি হয়তো তরুণদের বাকী জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সঠিকভাবে দিতে পারবেননা। কারণ, ইসলাম শিক্ষা শুধুমাত্র পরীক্ষা দেয়ার জন্য না বরং এটা আপনার জীবন চলার পাথেয়। এটা আমাদের সারাজীবন জুড়ে দিক নির্দেশনা দিবে। আমরা নিজেরাই সবসময় বলে থাকি যে, ইসলাম একটি পরিপূর্ন জীবনব্যবস্থা। সুতরাং, আমরা যা-ই শিখছি সেটাই আমাদের সাহায্য করছে, ইসলামের বর্নিত উপায়ে জীবনধারণ করার জন্য।
আমাকে শিক্ষকতা করার কাজটি দেয়া হলো। আমার লেকচার দেয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিলো। তাই আমার জন্য শ্রোতাদের সামনে কথা বলাটা নতুন ছিলোনা। আল্লাহর অশেষ রহমতে, আমার বাবা-মা ছিলেন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত শিক্ষক। এটা ছিলো আমার জন্য রহমত স্বরূপ যে তারা উভয়ই ছিলেন অভিজ্ঞ শিক্ষক।
এমনকি, আমি প্রথমে একজন অমুসলিম হিসেবে মালয়শিয়ার সাবাতে আসি। যেহেতু, আমার বাবা-মা ছিলেন অভিজ্ঞ শিক্ষক, তারা সাবা’তে একটা পরিকল্পনা নিয়ে এসেছিলেন। যার নাম দিয়েছিলেন, ‘কলম্বো পরিকল্পনা’ । তারা সাবার শিক্ষকদের শিখাতেন, ‘কিভাবে পড়াতে হয়’। আমার মা সাবা কলেজে অংক শিখাতেন। আমার বাবা ছিলেন একজন অভিজ্ঞ ভাষাবিদ । তিনি একমাসের মধ্যে মালয় শিখে ফেলেন। তাঁর মতে, মালয় পৃথিবীর সবচাইতে সহজ ভাষা। আমি সবসময় তাঁদের নির্দেশনা পেয়েছি । আমার বাবা আমার ক্লাসে যেয়ে বসতেন আর শিখাতেন কিভাবে পড়াতে হয়। তাই আলহামদুলিল্লাহ, তাঁদের হাতে-কলমে শিক্ষা আমার শিক্ষক হয়ে গড়ে ওঠার জন্য অনেক বড় সাহায্য ছিলো । আমি কোনো তত্ত্ব, ক্লাসরুম ব্যবস্থাপনা, শিক্ষানীতি কিছুই পড়িনি। কিন্তু যে নির্দেশনা তারা আমাকে দিয়েছেন সেটা প্রকৃতপক্ষেই অনেক বড় সাহায্য ছিলো।
আমাকে ইসলামিক স্টাডিজের একটা টপিক পড়াতে বলা হলো। যখন আমি তাঁদের বই দিতে বললাম, তারা আমাকে বললো “কিসের বই?” আমি বললাম, “বই। বাকীরা সবাই বই থেকে পড়াচ্ছে, বিজ্ঞানের আছে বিজ্ঞান বই, অংকের আছে অংক বই, তাহলে ইসলামিক বই কোথায়?” তারা বললো, “আমাদের কাছে কোনো বই নেই । আপনাকেই কিছু একটা প্রস্তুত করতে হবে, যেকোনো কিছু।“ তারা এভাবে ইসলামিক স্টাডিজ কে তুচ্ছোজ্ঞান করতো। কোনো বই নেই। এই অবস্থায় আমাকে চিন্তা করতে হলো, আমি কিভাবে মদীনাতে পড়াশুনা করতাম। কি কি কোর্স সেখানে আমি করেছিলাম। এরপর আমাকে এই তরুণদের জন্য এমন একটা কোর্স বেছে নিতে হবে যেটা তাঁদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক হবে। কারণ, আমি যা নিয়ে পড়াশুনা করেছি সেটার অধিকাংশই তাঁদের জন্য অপ্রাসঙ্গিক। আমার বাবা-মা সবসময় এটাই নিশ্চিত করতে চেয়েছেন যেটা তুমি বাচ্চাদের পড়াচ্ছো সেটা তাঁদের বয়স অনুযায়ী উপযুক্ত কিনা। অথবা, তারা তোমার পড়ানো বুঝতে পারছে কিনা। তারা কি মুখস্ত করলো বা শিখলো তাঁর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তারা কি বুঝলো। অনেক কিছু না বুঝে মুখস্ত করার চেয়ে অল্প কিছু বুঝে পড়া অনেক ভালো। তারা সবসময় এই ব্যাপারটাতেই জোর দিতেন।
আলহামদুলিল্লাহ, কারণ আমি কাজটা করতে করতে পেরেছিলাম। আমাকে নোট তৈরি করতে হতো। একজন শিক্ষক হিসেবে আপনাকে পাঠ্যসূচি তৈরি করতে হবে। সত্যি বলতে আমি কখনো পাঠ্যসূচি তৈরি করিনি। কিন্তু, আমি প্রতিদিন তাঁদের ক্লাসে কি শিখাবো তা তৈরি করে নিতাম। প্রথম দিকে, আমি কি শিখাবো সেটা লিখে নিয়ে যেতাম। তাই, না চাইতেই আমার পাঠ্যসূচি একটা বই হয়ে গেলো। তৈরি করার পর, আমার বাবা সেগুলো দেখে দিতেন, যেহেতু তিনি ইংরেজীতে দক্ষ ছিলেন। তিনি আমাকে গাইড করতেন। আমার ইংরেজী আলহামদুলিল্লাহ ভালোই ছিলো। কারণ আমার বাবা-মা দু’জনই ছিলেন শিক্ষক। বাবা ইংরেজীতে দক্ষ হওয়ায়, আমাদের কখনো ইংরেজীতে ভুল করতে দিতেননা। আমাদেরকে খাবার টেবিলেও শুদ্ধ ইংরেজীতে কথা বলতে হতো। যেহেতু, আমরা জ্যামাইকা থেকে এসেছিলাম, ঘরের বাইরে আমাদের জ্যামাইকান ভাষায় কথা বলার অনুমতি ছিলো। কিন্তু, বাসায় আমাদের শুদ্ধ ইংরেজীতেই কথা বলতে হতো।
আমি লেখার কাজ শুরু করলাম। তখন আমার বাবা আমাকে শেখালেন, কিভাবে যৌক্তিক ভাবে নিজের বক্তব্যকে সাজাতে হয়। উপযুক্ত প্রশ্ন তৈরি করা, শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয়া। শুধুমাত্র চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য প্রশ্ন না বরং প্রতি ক্লাসের জন্য প্রশ্ন। যেনো আপনি যা শিখাচ্ছেন তা নিয়ে সে চিন্তা করে। এজন্য আমি আমার লেখাকে বইয়ের অন্তর্ভূক্ত করে নিলাম। যেটাকে আমি প্রথমে বইয়ের পরিবর্তে নোট হিসেবে ব্যবহার করেছিলাম। প্রত্যেক অধ্যায়ের পর আমি প্রশ্ন যোগ করে নিলাম।
শিক্ষার্থীরা বেশ স্বতঃস্ফুর্ত ভাবেই সাড়া দিচ্ছিলো। আমি এমনসব উপাদান ব্যবহার করার চেষ্টা করতাম যেগুলো তাঁদের জন্য প্রাসঙ্গিক ছিলো। কারণ, আমরা যখন মদীনাতে পড়াশুনা করেছি তখন আকীদার কথা মাথায় রেখে ক্ল্যাসিকাল পড়াশুনা করেছি। যেই উদাহরণ আরবরা ব্যবহার করতো, ১০০০ বছর আগের লোকজনের কাছে সেসব অজানা ছিলো। যেমন, আমরা যখন ‘লক্ষণ’ বা ‘ইঙ্গিত’ সম্পর্কে পড়াশুনা করেছি , তখন মানুষ তাঁদের বর্তমান অবস্থা বা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে শুভলক্ষণ বা অশুভ লক্ষণ খুঁজে বার করার চেষ্টা করতো। মানে হলো, যখনই তারা কিছু শুনে বা দেখে , তারা ভাবে ভালো কিছু হতে যাচ্ছে বা খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে।
আর ক্লাসিক্যাল পড়াশুনায় কিছু উদাহরণ দেয়া হতো ‘তিয়ারাহ কি’ সেটা সম্পর্কিত। ‘তিয়ারাহ’ শব্দটি পাখির সাথে জড়িত। নবী ﷺ বলেছেন, “তিয়ারাহ হলো শিরক।” তাহলে কি পাখিরা শিরক? না, এটা আসলে সেরকম না। কিন্তু, প্রাচীন আরবরা যখন দূরে কোনো যাত্রার জন্য বের হতো, তারা পাখির গতিবিধি লক্ষ করতো। যদি পাখিটি ডান দিকে উড়ে যেতো তাহলে সেটা ছিলো শুভ লক্ষণ। আর যদি পাখিটি বাম দিকে উড়ে যেতো সেটা ছিলো খারাপ লক্ষণ। পাখিটা যদি সোজা চলে যেতো তাহলে যাত্রা স্থগিত করা হতো এবং পরবর্তী পাখি আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হতো। আমি যখন মদীনাতে পড়াশুনা করতাম তখন বই থেকে এসব জেনেছিলাম।
কিন্তু এখন, কেউ এসব মানেনা। এই বাচ্চাদের কাছে ব্যাপারগুলো একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক মনে হবে। তাই আমাকে তাঁদের উপযোগী বিষয় আনতে হয়েছে। তাঁরা বেশিরভাগই পশ্চিমে বেড়ে উঠেছে। তারা কূটনীতিবিদ নাহয় অধ্যাপকের সন্তান। এবং তারা আমেরিকা থেকে এসেছে। তাঁদের অধিকাংশই ইন্দো-পাকিস্তানি অথবা আরব। তাহলে তারা আমেরিকার কি ধরনের ব্যাপারের সাথে পরিচিত ? আমি আমার নিজের শৈশবের কথা চিন্তা করলাম, আমরা কি ধরণের বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম ?
অবশ্যই আমাদের মধ্যে ইউরোপিয়ান সংস্কৃতির ছোয়া ছিলো। যেখানে লবণ পড়ে যাওয়ার অর্থ হলো, অনেকগুলো বছরের জন্য অশুভ লক্ষণ। অথবা, আয়না ভেঙ্গে যাওয়া বা মইয়ের নিচ দিয়ে যাওয়া বা কালো বিড়াল সামনে দিয়ে যাওয়া এসবই ছিলো অশুভ লক্ষন। আমি পুরানো উদাহরণ গুলোর বদলে এগুলো ব্যবহার করলাম। বিসমিল্লায় গলদ, আটকপালে, কপাল ফেরা, একাদশে বৃহস্পতি এসবই একরকম। এমনকি আপনি যদি কাওকে বলেন, ‘শুভ কামনা’ তাহলে এটি একটি শিরক। শুভ কামনা, অশুভ কামনা এসবই শিরক জাতীয় কথা। আমরা খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রতিদিন এই কথাগুলো ব্যবহার করে থাকি।
চীনাদের আবিষ্কার কাগজ আর মুসলিমদের আবিষ্কার বই- ড: বিলাল ফিলিপ্স
প্রকৃতপক্ষে, মুসলিমরাই পৃথিবীতে বইয়ের সূচনা করে। কাগজ তৈরী প্রথম আবিষ্কার করে চীনারা। মুসলিমরা কাগজ নেয় এবং প্রথম বাধাইকৃত বই তৈরি করে। ইউরোপিয়ানরা এটা শিখে এবং পরবর্তীতে এর আরো উন্নয়ন করে। কিন্তু, আমরাই প্রথম কাগজ একত্রিত করে বই বাধাই করি। এটা আমাদের ঐতিহ্য।
এমনকি, লোকজন আব্বাসিদ যুগে স্বর্ণের মূল্যে বই বিক্রি করতো। তারা এক স্কেলে বই রাখতো আর অন্য স্কেলে বইয়ের ওজন অনুযায়ী স্বর্ণ রাখতো। এভাবে তারা বই বিক্রি করতো। বইকে তারা এই পরিমাণ সম্মান করতো। তারা জ্ঞানের এবং বই প্রকাশ করার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলো ।
আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমার নতুন বইয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসার জন্য। বইটির নাম, Ibn Taimiyah’s Essay on the Heart । আপনারা হয়তো ভাবছেন, কেনো ইবন তাইমিয়াহ এর কথা? কারণ, ইবন তাইমিয়াহ ১৩ শতাব্দীর একজন জ্ঞানী ব্যাক্তি। তিনি কুর’আন, সুন্নাহতে বর্ণিত নিয়মকানুন মেনে চলার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। শুধুমাত্র অন্ধের মতো অনুকরণ না করে বরং সেগুলোকে বুঝে মানার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। এবং অন্যদের দেখাদেখি করা মুসলিমদের বিদ’আত কাজকে প্রতিরোধ করেছেন।
লোকজন সহজ পথ খুঁজতে পছন্দ করে। এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করা মানুষের স্বভাব। এভাবেই আজকের খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তন হয়েছে। কিন্তু যেহেতু রাসূল ﷺ বলেছেন, “যে কেউ এই ধর্মে নতুন কিছু যোগ করবে, তাকে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যাখ্যান করবেন।“ এসব বক্তব্য পরিষ্কারভাবে ধর্মে নতুনকিছু আনার বিরোধিতা করে। আলহামদুলিল্লাহ,আমাদের ইসলাম এখন পর্যন্ত অক্ষত রয়েছে। আমরা যে ভাবে আজকে নামাজ পড়ি, ঠিক একইভাবে রাসূল ﷺ নামাজ পড়তেন। আমরা আজকে যেভাবে রোযা রাখি, এটাই রোযা রাখার সঠিক উপায়।
যখনই একটা প্রয়োজন তৈরি হয়েছে, আমি লিখেছি- ড: বিলাল ফিলিপ্স
আমরা দেখতে পাই যে, এখানে একটা বিন্যাস বা আদর্শ আছে। এবং আমার সব বই এই একই আদর্শ মেনে চলে। যখনই একটা প্রয়োজন তৈরি হয়েছে, আমি লিখেছি। মানুষজন আমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করে, আমি স্বপ্নের ব্যাখ্যা আবিষ্কার করিনি। লোকজন আমার কাছে একই স্বপ্ন বারবার দেখার অর্থ জানতে চায়। আর এটাও জানতে চায়, আমি কেনো মদীনা থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী নিয়েও তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনা! আমি তো কোনো স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারী ছিলামনা।
যখন অনেক মানুষ আমার কাছে জানতে চাইলো, আমি তখন এই ব্যাপারে গবেষণা করলাম আর এই বিষয়ক তথ্য জোগাড় করলাম। যাতে করে আমি মানুষকে নির্দেশনা দিতে পারি। কারণ, ইবনে সিরিনের স্বপ্ন বিষয়ক বইটি ছিলো আজগুবি আর শিরক দিয়ে ভর্তি। আমি ভাবলাম, লোকজন এটার ওপর ভরসা করলে ভয়ঙ্কর হবে। তাই আমার মনে হলো, এটার বিকল্প হিসেবে কিছু লেখা আমার দায়িত্ব। এজন্য আমি Dream Interpretation according to Qur’an and Sunnah নামক বইটি লিখলাম। আর আমি এটাও দেখতে চাইলাম, একটা বই লিখতে আমার সর্বোচ্চ কতো সময় লাগে। আলহামদুলিল্লাহ, বইটি লিখতে এবং প্রকাশিত হতে এক মাস সময়ের প্রয়োজন হয়েছিলো।
বই সংগ্রহ করে রেখে দেয়ার অভ্যাস শয়তানের ধোঁকা হতে পারে- ড: বিলাল ফিলিপ্স
আমি বিশ্বাস করি, রমজান মাসে অর্থ ও তাফসীর সহ কোরআন পড়া, কিছুই না বুঝে পুরো কোরআন পড়ে শেষ করার ছেয়ে উত্তম। আমাদেরকে বইটা বুঝে পড়ে যেতে হবে। আর তারপর আমাদের দোকান থেকে বই কিনতে আসতে হবে। নতুন বই কেনা আমাদের একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এরপর বইটা কেনা হয়ে গেলো, আমরা সেটা পেয়ে গেলাম, এখন সেটাকে বুক-সেলফে রেখে দিলাম, এর ওপর ধূলা জমতে থাকলো। পাঁচ বছর পর, তারা ‘শয়তানের ধোঁকা’ বিষয়ক একটা ক্লাস পেলো। এবং তখন আমাদের মনে পড়লো আমাদের কাছে এই বইটা আছে। আমি পাঁচ বছর আগে বইটা পেয়েছিলাম। কিন্তু কখনোই পড়িনি। আমাদের এসব থেকে সাবধান থাকা উচিৎ, কারণ এগুলোও শয়তানের ধোঁকার অংশ। আমাদের কখনই বই কিনে রাখার জন্য কোনো সওয়াব মিলবেনা। বরং বইটি পড়ার, এর বিষয় সম্পর্কে বোঝার জন্য এবং সেই অনুযায়ী কাজ করার জন্য সওয়ার পাওয়া যাবে। এমনকি, এটা আপনার জন্য একটা পাপের কারণ হতে পারে। আপনি যদি আপনার কেনা বইয়ে নিষেধ করা পাপগুলোই করতে থাকেন তাহলে আল্লাহর সামনে দেয়ার মতো আর কোনো অজুহাত থাকবেনা। অন্তত আপনার কাছে যদি বইটা না থাকে তাহলে আপনি বলতে পারবেন, আমার কাছে বইটা ছিলোনা। আপনার বাসায় এমন একটি বই আছে যেখানে সমস্ত হাদিস এবং ব্যাখ্যাসহ বলা আছে যে, গান শোনা নিষেধ। আপনি তারপরেও গান শুনেন, এমনকি আপনার মৃত্যুর পরও তারা আপনার জন্য আপনার পছন্দের গানগুলোই বাজাতে থাকে। কিন্তু যখন আপনি আল্লাহর সামনে দাড়াবেন, কি বলবেন ? আমার কাছে বইটা ছিলো কিন্তু আমি পড়িনি।
আমি আশা করি, এটা আপনাদেরকেও লেখক হওয়ার প্রতি আগ্রহী করবে। বই পড়ে জ্ঞান আহোরন করুন। বই আমাদের কথাকে গুছিয়ে লিখতে সাহায্য করে। অনেকে বলে, আপনি ইন্টারনেটে লেকচার দেখতে পারেন বা আপনি ঘন্টার পর ঘন্টা ইন্টারনেটে বিভিন্ন বক্তার ভিডিও দেখতে পারেন। কিন্তু, ভিডিওতে দেয়া তথ্যগুলো ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় থাকে। আপনার নিজেকে এমন কোনো কিছুর সাথে জড়াতে হবে যেখানে নিয়ম অনুযায়ী শেখানো হয়। এভাবে আপনি আপনার জ্ঞান কে ধাপে ধাপে সাজাতে পারবেন।
উৎস: Islamic Online University Blog (মূল আর্টিকেল লিংক)
অনুবাদ করেছেন: শারিকা হাসান, মুসলিম মিডিয়া প্রতিনিধি
অনুবাদ কপিরাইট © মুসলিম মিডিয়া
মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।
নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।